1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘রেয়ার আর্থ’-এর সন্ধানে উদ্যোগী জার্মান শিল্পক্ষেত্র

৮ ডিসেম্বর ২০১১

গোটা বিশ্বের শিল্পক্ষেত্রই সবসময়ে কাঁচামালের সন্ধানে থাকে৷ জার্মান শিল্পগুলিও তার ব্যতিক্রম নয়৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিল্পক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের সন্ধান করতে জার্মান শিল্পগুলি তৈরি করেছে একটি যৌথ সংস্থা৷

https://p.dw.com/p/13Oaz
বিরল খনিজ দ্রব্যের সন্ধানে বিশ্বজুড়ে সন্ধান অব্যাহতছবি: Caitlan Carroll

‘অ্যালায়েন্স ফর সিকিওরিং র মেটিরিয়ালস'- বা ‘কাঁচামাল যোগাড়ের জন্য জোট' এই নামেই তৈরি হয়েছে জার্মান শিল্পগুলির একটি বিশেষ জোট৷ যে জোট তৈরি করতে প্রাথমিক ভাবে উদ্যোগ নিয়েছে নামজাদা জার্মান সংস্থা বিএএসএফ এবং ইভনিক৷ তাদের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছে ইস্পাত নির্মাণকারী জার্মান শিল্পসংস্থা ট্যুসেন ক্রুপ৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন বছরে এই জার্মান শিল্পসংস্থাগুলির জোট একযোগে খনিজ ক্ষেত্রে কাঁচামালের সন্ধান করবে এবং তেলের জন্য খননকার্য চালাবে৷

ডয়চে ভেলের কাছে এক ইমেল বার্তা পাঠিয়ে এই জোটের আগামী কাজের বিষয়ে বিশদ জানিয়েছেন এই জোটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একটি সংস্থা গ্রিলো - বেরকে-র সিইও উলরিশ গ্রিলো৷ তাঁর প্রত্যাশা, এই জোট অবশ্যই আগামীতে বেশ ভালো কাজ করবে৷ এবং তাদের কাজের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির মুখ দেখবে জার্মান শিল্পক্ষেত্র৷

Kohlegrube in Russland Flash-Galerie NO FLASH
প্রকৃতির সম্পদ আহরণের কাজ চলছে নিয়মিতছবি: picture-alliance/dpa

‘রেয়ার আর্থ'-এর সন্ধান

শিল্পক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে গেলে এমন সব খনিজ ধাতুর প্রয়োজন পড়ে যার কোন কোনটি সত্যিই অমিল এই বিশ্বে৷ কিন্তু সেগুলিকে সংগ্রহের জন্য সময়মত উদ্যোগ না নিতে পারলে, পরবর্তীতে কাজ আটকে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা থেকেই যায়৷ উদাহরণ দিতে গেলে বলা যায়, খনিজ তামা, আকরিক লোহা কিংবা গ্ল্যাডোলিনিয়াম বা লিউটিয়ামের নাম৷ শিল্পক্ষেত্রের পরিভাষায় যাদের বলা হয় ‘রেয়ার আর্থ৷' অর্থাৎ সহজে যেসব খনিজ মেলে না৷ ধরা যাক, উইন্ড টারবাইন বা বাতাস থেকে বিদ্যুৎ তৈরির জন্য যেসব বিশেষ ধরণের খনিজ ধাতুর প্রয়োজন পড়ে তাদের কথাই৷ কিংবা গাড়ির ব্যাটারি তৈরি করতে যখন প্রয়োজন হয় লিথিয়ামের বা এক বিশেষ ধাঁচের খনিজ তামার৷ শিল্পক্ষেত্রের পরিভাষায় এইসব রেয়ার আর্থের সন্ধানেই এবার বিশ্বজুড়ে ঝাঁপ দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে জার্মান শিল্পসংস্থাগুলি৷

কাঁচামালের প্রতিযোগিতা এবং চীন

প্রাকৃতিক কাঁচামালের সন্ধানে জার্মান শিল্পক্ষেত্র অদূর ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তেই পারে যদি তারা এখন থেকেই নিজেদের যোগাড়ে মনোযোগী না হয়৷ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন উলরিখ গ্রিলো৷ ফেডারেশন অফ জার্মান ইন্ডাস্ট্রিজ বা বিডিআই-এর র মেটিরিয়াল বা কাঁচামাল বিভাগের চেয়ারম্যান পদেও আসীন তিনি৷ উলরিখ গ্রিলো জানাচ্ছেন, বিশ্বের শতকরা ৯৫ শতাংশ রেয়ার আর্থ বা সহজে মেলেনা এমন খনিজ সম্ভারের দেশ হল চীন৷ কিন্তু চীনের নিজের শিল্পক্ষেত্রের দাবিও বড় কম নয়৷ সুতরাং, নিজেদের সেই দাবি মিটিয়ে তবেই তারা বাইরের বাজারে বিরল খনিজ বিক্রি করে থাকে৷ জার্মানি চাইছে সেই কাঁচামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রটিকে নিজেদের জন্য ভবিষ্যতে সুনিশ্চিত করতে৷ কিন্তু, আধুনিক প্রযুক্তির জিনিসপত্র, যেমন প্লাজমা স্ক্রিন বা আইপড তৈরির জন্য যেসব বিরল ধাতুর প্রয়োজন, সেসবই চীন তার আস্তিনের মধ্যে রেখেছে৷ সুতরাং, সেগুলির জন্য চীনের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় নেই কারওই৷ ২০০৮ সাল পর্যন্ত চীন এইসব বিরল খনিজ পদার্থের ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টন বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে সরবরাহ করেছিল৷ কিন্তু চলতি বছরে তারা নতুন করে রপ্তানির ওপরে কর বাড়িয়েছে, রপ্তানির মাত্রাও সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সুতরাং সেক্ষেত্রে জার্মানি সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিকেও খুঁজতেই হচ্ছে নতুন রাস্তা৷

পথ মিলবেই, বলছেন স্টাইনবাখ

ফলকার স্টাইনবাখ হলেন জার্মান খনিজ সম্ভার সংস্থার ডিরেক্টর৷ নতুন এই যে জোট তৈরি হয়েছে, তার সাফল্য বিষয়ে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে এইসব বিরল খনিজের সন্ধান করা, খননকার্য চালানো এবং তারপর সেগুলিকে সেখান থেকে জার্মানির জন্য নিয়ে আসাটা যথেষ্ট সময়সাধ্য এবং খরচসাপেক্ষ৷ তারপরেও তিনি আশাবাদী ৷ কারণ অনেকগুলি জার্মান শিল্পসংস্থা একজোটে একাজে হাত দিয়েছে, তারা একসঙ্গে এগিয়ে এসেছে, খরচটাও তারা ভাগ করে নেবে৷ অতএব, শেষ পর্যন্ত রাস্তা পাওয়া যাবে বলেই তাঁর বিশ্বাস৷ তিনি জানিয়েছেন, জার্মান শিল্পক্ষেত্রের ভবিষ্যতের কথা ভেবে জার্মানির ফেডারেল সরকারও এই জোট বা অ্যালায়েন্সের পাশেই অবস্থান নিয়েছে৷ সেক্ষেত্রে আগামীতে এই জোটের কাজে নতুন দিশা দেওয়া, গবেষণা এবং তার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জোটকে সহায়তা করা, ইত্যাকার কাজে পাশে পাওয়া যাবে সরকারি সমর্থন৷

চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের উদ্যোগ

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল গোটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর সফরের সময়ে এই বিষয়টিকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ সাম্প্রতিক অতীতে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তাঁর মঙ্গোলিয়া, অ্যাঙ্গোলা এবং নাইজিরিয়া সফরের সময়ে সেসব দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সন্ধানের ক্ষেত্রে জার্মানির সহযোগিতার চুক্তি করেছেন৷ ২০১১ সাল শেষ হওয়ার আগে কাজাখস্তানের সঙ্গে একটি প্রাকৃতিক সম্পদের বিষয়ে চুক্তি হয়ে যাওয়ার কথা প্রায় স্থির হয়ে রয়েছে৷ যা কিনা চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের উদ্যোগেই বাস্তবায়িত হতে পেরেছে৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান