1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ওপেল’এর শেষরক্ষার আশায় জার্মানি

২৯ মে ২০০৯

‘ম্যাগনা’র প্রস্তাব সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হলে ‘ওপেল’ এযাত্রায় টিকে যেতে পারে৷ তা না হলে ‘জেনারেল মোটর্স’এর মতো ‘ওপেল’ও দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে৷

https://p.dw.com/p/I0L3
আপাতত ‘ম্যাগনা’র উপরেই শেষ ভরসাছবি: AP

একটি গাড়ি নির্মাতা – তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জার্মানি তথা ইউরোপের একাধিক শ্রমিক, কর্মী ও এই শিল্পক্ষেত্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত অসংখ্য মানুষের ভবিষ্যৎ৷ অ্যাটল্যান্টিকের দুই প্রান্তে অর্থনৈতিক মন্দা ও তার মোকাবিলার বিষয়টির সঙ্গেও জড়িয়ে আছে ‘ওপেল’এর অদৃষ্ট৷

প্রেক্ষাপট

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘জেনারেল মোটর্স’ কোম্পানি দেউলিয়া হতে বসেছে৷ জার্মানির ‘ওপেল ’ গাড়ির মালিকানাও ঐ সংস্থার হাতেই৷ কিন্তু গোটা জাহাজ ডুবে যাওয়ার আগে ‘ওপেল’কে বাঁচাতে জার্মানি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ প্রথমে নতুন ক্রেতা খোঁজার চেষ্টা চালিয়েছে জার্মান সরকার৷ তবে একক মালিকানার সম্ভাবনা অবাস্তব সাব্যস্ত হওয়ার পর একের জায়গায় একাধিক ক্রেতার সমন্বয়ে এক সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা চলেছে৷ এদের মধ্যে রয়েছে ইটালির ‘ফিয়াট’ এবং অস্ট্রিয়া ও কানাডার বহুজাতিক ‘ম্যাগনা’ সংস্থা৷ শুধু তাই নয়, আর্থিক ঝুঁকি এড়াতে সরকার নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থের জন্য গ্যারেন্টার হিসেবে এগিয়ে এসেছে৷ তাছাড়া আপাতত যে অর্থের প্রয়োজন হতে পারে, তাও ঋণ হিসেবে মঞ্জুর করতে প্রস্তুত জার্মান সরকার – যার সর্বোচ্চ অঙ্ক ১৫০ কোটি ইউরো৷ কিন্তু ‘জেনারেল মোটর্স’ কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে গেলে সেই অর্থ যাতে আমেরিকায় চলে না যায়, সেবিষয়ে নিশ্চয়তা চায় সরকার৷

জার্মান সরকারের উদ্যোগ

বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দফতরে প্রথম দফার দীর্ঘ আলোচনায় সাফল্যের আশা শেষ পর্যন্ত দুরাশায় পরিণত হয়েছে৷ ‘ওপেল’এর অস্তিত্ব নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সহায়তার বদলে আলোচনায় উপস্থিত মার্কিন প্রতিনিধি উল্টে ‘ওপেল’কে মুক্ত করার জন্য জার্মান সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৩০ কোটি ডলার দাবি করেছেন৷ আমেরিকার এই দাবির ফলে ‘ফিয়াট’এর কর্তৃপক্ষ ক্ষোভ প্রকাশ করে আলোচনা ছেড়ে চলে গেছে৷ ‘ম্যাগনা’ও ফিয়াটের পথ অনুসরণ করার ইঙ্গিত দিয়েছিল৷ শুক্রবার বিকেলে জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলের নেতৃত্বে যে দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, সেটিও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ ম্যার্কেল অবশ্য এখনো পুরোপুরি হাল ছেড়ে দিচ্ছেন না৷ তিনি বলেন, ওপেলকে বাঁচাতে কোনো প্রচেষ্টাই বাকি রাখা হবে না৷ এর মধ্যে ‘ম্যাগনা’ সংস্থা নতুন এক প্রস্তাব রাখতে চলেছে বলে জানা গেছে৷ তবে শেষ পর্যন্ত কোনো প্রচেষ্টাই সফল না হলে ওপেলকেও দেউলিয়া হয়ে যেতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

ইউরোপে দুশ্চিন্তা

ওপেলের কারখানা শুধু জার্মানি নয় – ইউরোপের বেশ কিছু অন্য দেশেও ছড়িয়ে রয়েছে৷ ফলে সেই সব দেশও কারখানা ও শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আগ্রহী৷ শুক্রবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্তরে ওপেলের ভবিষ্যতের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে৷ তবে জার্মানি যেভাবে ওপেলকে বাঁচাতে নিজস্ব স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে, সেবিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছে সুইডেন, বেলজিয়াম সহ কিছু দেশ৷ জার্মানি এবিষয়ে যথেষ্ট স্বচ্ছতা দেখাচ্ছে না বলে তাদের অভিযোগ৷ জার্মানি অবশ্য বলছে, সেদেশ এক্ষেত্রে ইউরোপের স্বার্থেই কাজ করছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক