ভারতের সংসদে অচলাবস্থা
২৭ নভেম্বর ২০১২মঙ্গলবার চতুর্থ দিনেও সংসদ উত্তাল বিদেশি লগ্নি ইস্যুতে৷ বিরোধীপক্ষ সংসদের ১৮৪ ধারা অনুযায়ী ভোটাভুটিসহ আলোচনার দাবিতে অনড়৷ সরকার রাজি স্রেফ আলোচনায়৷ এই নিয়েই অচলাবস্থা৷ সর্বদলীয় বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেন, ভোটাভুটি হলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভুল বার্তা যাবে৷ রাজকোষে ঘাটতি যথেষ্ট৷ বৈঠকে তৃণমূলের নাটকীয় অবস্থান সরকারকে স্বস্তি দিয়েছে৷ তৃণমূল ভোটাভুটির ওপর জোর না দিয়ে সংসদের স্পিকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেবার কথা বলেছে৷
পাশাপাশি কংগ্রেস-জোট সরকারের শরিক দলগুলির বৈঠকে সরকারকে পুরোপুরি সমর্থনের আশ্বাস দেয়া হয়৷ সংসদীয়মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শরিক দলগুলি আলোচনা বা বিতর্কে সরকারের পাশে আছে৷ সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করা এসপি এবং বিএসপি দলও সরকারের পক্ষে৷ এর প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী সংখ্যা নিয়ে চিন্তিত নন৷ স্পিকারের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন৷
সংসদের লাগাতার অচলাবস্থায় সুশীল সমাজ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ৷ ধিক্কার জানিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলিকে৷ বলেছে সংসদীয় গণতন্ত্রে এ জিনিষ চলতে পারেনা৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. অমল মুখোপাধ্যায় বললেন, সরকারকে অচল করে দেয়া গুরুতর অন্যায়৷ মূল সংঘাতটা দেখা দিয়েছে, একদিকে রাজনৈতিক স্বার্থ, অন্যদিকে সংসদের মহিমা বা গরিমা৷ রাজনৈতিক দলগুলি তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সংসদের গরিমাকে উপেক্ষা করছে৷
মূল ইস্যু এফডিআই নিয়ে শুধু আলোচনা, না ভোটাভুটিসহ আলোচনা? ড. মুখোপাধ্যায়ের মতে, এফডিআই নিয়ে সিদ্ধান্ত সরকারের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত৷ এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত নয়৷ প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ভোটাভুটি আইন বিরুদ্ধ৷ সরকারকে অপদস্থ করতেই বিরোধীপক্ষ ভোটাভুটি চাইছে৷
আর্থিক ক্ষতি সম্পর্কে তিনি মনে করেন, বিরোধীরা জনগণকে ঠকাচ্ছে, পকেট কাটছে৷ প্রতি মিনিটে সংসদের সময় মূল্য ৬,০০০ টাকা৷ এইভাবে দিনের পর দিন সংসদ অচল করার অর্থ কোটি কোটি টাকার অপচয়৷
বর্তমান অচলাবস্থার সমাধানে রাজনৈতিক মূল্যবোধের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ নিশ্চয় থাকবে, কিন্ত রাজনৈতিক স্বার্থ থেকে সঙ্কীর্ণতা দূর করতে হবে৷ সেটার জন্য দরকার মূল্যবোধ৷ সেটা না থাকলে তার মূল্য চুকাতে হবে নির্বাচনে৷