আইএমএফ’এর পূর্বাভাষ
৯ অক্টোবর ২০১২খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ, জ্বালানির ওপর ভর্তুকি প্রত্যাহার করার মত সাম্প্রতিক গুচ্ছ আর্থিক সংস্কার সত্ত্বেও চলতে বছরে ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার ৬.১ শতাংশ থেকে কমে হবে ৪.৯ শতাংশ৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রকাশিত বিশ্ব অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ শীর্ষক রিপোর্টে এই পূর্বাভাষ দেয়া হয়৷ তবে আগামী বছরে হতে পারে ৬ শতাংশ৷
এর জন্য দায়ী করা হয় লাল ফিতার বাঁধন, বাণিজ্যিক উদ্যোগের অভাব, কারেন্ট অ্যাকাউন্টের ঘাটতি এবং টাকার অবমূল্যায়ন৷ মুদ্রাস্ফীতি নিম্নমুখী করতে বর্তমান মুদ্রানীতি অপরিবর্তিত রাখা দরকার৷ বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতির হার ভারতে ৮ শতাংশ৷ আইএমএফ বলেছে, বিশ্বের আর্থিক প্রবৃদ্ধির গতিও মন্থর৷ ইউরোপ এবং আমেরিকার নীতি নির্ধারকদের সতর্ক করে দিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাঁরা যদি তাঁদের আর্থিক খামতি দূর করতে না পারে, তাহলে এই মন্থরতা আরো ব্যাপক হবে৷
দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে না পারলে এই অনিশ্চয়তা থেকেই যাবে৷ এই প্রসঙ্গে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. মধুসূদন দত্ত মনে করেন, অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজনীতির প্রবেশ এর অন্যতম কারণ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বললেন, রাজনৈতিক দল এবং অঙ্গরাজ্য কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের পথে নেমেছে৷ তার ফলে তৈরি হয়েছে লাল ফিতার বাঁধন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব৷ সেটা সব থেকে প্রকট জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে৷ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বহু অভিযোগ উঠেছে৷ তাতেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা তলানিতে ঠেকেছে৷
ড. দত্তের মতে, ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার কম হবার আরেকটা কারণ, ইউরোপে যে আর্থিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে, তাতে ভারতের পরিষেবা রপ্তানি সঙ্কুচিত হয়ে পড়েছে৷
এরই আবহে আজ নতুন দিল্লিতে বসে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠক৷ বৈঠক শেষে মার্কিন অর্থমন্ত্রী টিমোথি গাইটনার সাংবাদিকদের বলেন, দু'দেশের তথা বিশ্বের অর্থনীতিতে যে সংকট চলছে, তাতে বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা কম করে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে৷ তাতে সহযোগিতা করতে চায় মার্কিন বিনিয়োগকারীরা৷ অর্থমন্ত্রী পি. চিদাম্বরম প্রাতিষ্ঠানিক, বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক স্তরে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার কথা বলেন৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন