বাংলাদেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ডয়চে ভেলের লেখা এক ব্লগ পোস্ট আলোড়ন সৃষ্টি করেছে৷ ফেসবুকে অনেকেই মন্তব্য করেছেন লেখাটি সম্পর্কে৷ এতে উঠে এসেছে নির্বাচন নিয়ে তাঁদের ভাবনা৷
লিপি মণির মতে, কোনো জেনারেলের অধীনে ‘হ্যাঁ না ভোট' থেকে ১০০০ গুণ ভালো এই ভোট৷ তবে আওয়ামী লীগ কিভাবে ভোট নিশ্চিত করেছে তার একটা নমুনা দিয়েছেন পাঠক মাউদুদ আহমেদ৷ লিখেছেন, ‘‘শেখ হাসিনা গ্যালারিতে বসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখার মধ্য দিয়ে ক্রিকেট পাগল শতকরা ৪৭ ভাগ তরুণদের ভোট জয় নিশ্চিত করেছে আওয়ামী প্রার্থীদের৷''
পুরু দেবের মন্তব্য, ‘‘আমার মনে হয় তিনি নৈতিকতা বিষয়ে কিছু জানেন না৷ তিনি জানেন শুধু ক্ষমতার অপব্যবহার করতে৷ রাজনীতি সম্পর্কে মূর্খতাই তাঁর অপক্ষমতার উৎস৷''
মনিরুল হাসানও বেশিরভাগ ফেসবুক পাঠকের সাথে একমত৷ তাঁর মতামত তিনি তুলে ধরেছেন এভাবে, ‘‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা পরিষ্কার যে, হাসিনা সরকার সবদিক থেকেই নিরাপদ অবস্থানে আছে৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তাদের জবাবদিহিতার কোনো জায়গা না থাকায়, বাংলাদেশ থেকে গণতান্ত্রিক ধারা হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ৷ সাধারণ ভোটারদের স্বাধীনতা তাই হরণ হচ্ছে সাজানো নির্বাচনের মাধ্যমে৷ আওয়ামী লীগ বুঝতে পারছে, বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন শক্তিকে আয়ত্বে রাখা গেলেও ব্যালট বাক্সের সামনে একজন স্বাধীন ভোটারে বিশ্বাস করা তাদের উচিত হবে না৷ আর তাই ভোটারের অধিকার হরণে মরিয়া তারা৷ ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর ২০১৫ সালের সিটি নির্বাচনেও সেটা পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে৷''''
হাসিনা সরকারের এত ক্ষমতার উৎস কোথায়? ডয়চে ভেলের এ প্রশ্নের উত্তরে মো.সিরাজুল ইসলাম বলছেন, ‘‘হাসিনা সরকারে ক্ষমতা উৎস হলো, পাশের দেশ ভারত তাদের পক্ষের হয়ে বিশ্বের লবিং করে৷ পুলিশ তাদের কেনা গোলামের মতো কাজ করে৷ ব়্যাব ,বিজিবি পুলিশ দলীয় ক্যাডার নিয়োগ করে দিয়ছে এই হলো অবৈধ সরকারে ক্ষমতা উৎস৷
বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র নেই সে ব্যাপারে পাঠক ফরিদ উদ্দিন পুরোপুরিই নিশ্চিত৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‘আসল কথা হলো বাংলাদেশে এখন আর গণতন্ত্র নাই৷ এই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে আবারও লক্ষ লক্ষ মানুষকে জীবন দিতে হবে, এছাড়া আমি অন্য কোনো পথ আমি দেখছি না!!!''
টুইঙ্কেল বাশারের মতে, এই সরকার দেশকে ২০বছর পেছনে নিয়ে গেছে৷ তবে সরকারকে সমর্থন করে সুমন মন্তব্য করেছেন, ‘‘ঠিক হইছে গো৷''
মো. সাদ্দাম হোসেনও অনেকের সাথে একমত যে গত মঙ্গলবার জনগণের অধিকার হরণ করা হয়েছে৷
‘‘দেশে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই৷ মানুষের মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে৷ ভোটের অধিকার তো আগেই কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷এখন মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারটুকু কেড়ে নেওয়া হচ্ছে৷'' এই মন্তব্য আনোয়ার হোসেন লিটনের৷
‘‘বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির কারণে নাকি ভালো রাজনীতিকরা রাজনীতি করেন না৷'' – এই মন্তব্য মো.শামীম হোসেনের৷ তিনি জানিয়েছেন, সিটি কর্পোরেশন নিবার্চন সুষ্ঠু হয়নি, এটা আমরা সকলেই জানি৷ যত ভালো রাজনীতিবিদ আছে তারা এখন রাজনীতি করে না আমাদের দেশে৷ যেমন সোহেল তাজউদ্দিন৷'' তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশে বতর্মানে যাঁরা রাজনীতি করেন, তাঁরা শুধুমাত্র নিজের দাপটের জন্য ও নিজের স্বার্থের জন্য আর কিছুটা কাজ করে বিদেশিদের দেখানোর জন্য, নিজের দেশকে ভালোবেসে তারা রাজনীতি করে না৷''
হাসান ফরহাদের মতে দেশের রাজনীতি এতোদিন শুধু নোংড়া ছিল৷ এবার হয়েছে চরম কলুষিত৷ পাঠক পরবী তো মিথ্যা কথা বলার জন্য শেখ হাসিনাকে নোবেল বিজয়ী উপাধীই দিয়ে দিলেন৷ অন্যদিকে শাহ আলম শাহ সরকারের পক্ষ নিয়ে বলছেন, ‘‘দেশের সরকার যা খুশি তাই করতে পারে,তাতে আপনাদের কি?''
আবিদুর রহমান ফিরোজ কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘‘আমার জানা মতে শেখ হাসিনা যা বলেন, তা শতকরা ১০০ ভাগই সত্যি৷ আর সবাই যা বলেন, তার সবটাই মিথ্যা৷ পাঠক ফিরোজ মন্তব্যের সাথে আবার প্রশ্ন জুড়ে দিয়েছেন, ‘‘বুঝলেন কিছু ভাইয়েরা?''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ