1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে রহস্য

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৯ মে ২০১৫

নিখোঁজ হওয়ার দু'মাস পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং-এ আটক বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে নিয়ে এখনো রয়েছে নানা রহস্য৷ দিন যত যাচ্ছে ততই নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/1FRpE
Bangladesch Salahuddin Ahmed Ex-Minister
ছবি: Getty Images/AFP/Str

সালাহ উদ্দিন দাবি করেছেন, তাঁকে ঢাকায় ‘অপহরণের' পর দুমাস একটি ঘরে বন্দি রাখা হয়েছিল৷ তিনি নিজে শিলং যাননি, তাঁকে হাত-চোখ বেঁধে নিয়ে ফেলে দেয়া হয়েছে সেখানে৷

গত ১১ মে শিলং পুলিশ গলফ কোর্সের কাছ থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করে৷ সেখানকার পুলিশের দাবি, তিনি উদ্রভান্তের মতো হাঁটছিলেন৷ তখন স্থানীয় লোকজন খবর দিলে তারা গিয়ে সন্দেহভাজন হিসেবে তাঁকে আটক করেন৷ পরে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়৷

কিন্তু সালাহ উদ্দিন আহমেদ সোমবার সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ হাসপাতাল থেকে বাইরে নেয়ার সময় তিনি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন৷ সেসময় তিনি দাবি করেন, তিনি নিজেই পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন৷ একই সঙ্গে তিনি আরো কিছু তথ্য দিয়েছেন৷ সালাহ উদ্দিন বলেছেন, ‘‘আমাকে ঢাকায় অপহরণ করা হয়েছে৷ অপহরণের পর দুই মাস একটি ছোট কক্ষে আটক রাখা হয়৷ পরে অপহরণকারীরা তাঁর চোখ বেঁধে কয়েকদিন ধরে গাড়িতে করে ঘোরায় এবং সে সময় তারা বারবার গাড়ি বদলায়৷'' তিনি আরো দাবি করেন, ‘‘আমি স্বেচ্ছায় ভারতে ঢুকিনি, আমার চোখ-হাত বেঁধে শিলংয়ে ফেলে দিয়ে যাওয়া হয়৷''

এদিকে সংবাদ মাধ্যমে ভারতে যাওয়া কয়েকজন বিএনপি নেতার বরাত দিয়ে সালাহ উদ্দিনের স্মৃতিভ্রম হয়েছে বলে খবর পরিবেশন করা হলেও সোমবার শিলং-এ তাঁর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তিনি পুরোপুরি সুস্থ আছেন৷

আইনজীবী নিয়োগ

সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ এখন শিলং-এ রয়েছেন৷ তিনি মঙ্গলবার হাসপাতালে সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেছেন৷ আইনি লড়াই চালানোর জন্য আইনজীবী নিয়োগ করেছেন তিনি৷ ভারতে পাসপোর্ট এবং ভিসা ছাড়া অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য সালাহ উদ্দিকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে৷

আগের কথা

গত ১০ মার্চ সালাহ উদ্দিন নিখোঁজ হন৷ তখন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশের একটি দল রাত দশটার পর ঢাকার উত্তরার একটি বাসা থেকে তাঁর স্বামীকে উঠিয়ে নিয়ে যায়৷ উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে তাদের দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে সালাহ উদ্দিন অবস্থান করছিলেন৷ সেই বাসার দারোয়ানকে ডিবির পরিচয় দিয়ে ভেতরে ঢুকে দোতলার দরজা ভেঙে তাঁর স্বামীকে নিয়ে যাওয়া হয়৷''

সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী তখন দাবি করেছিলেন, ‘‘সালাহ উদ্দিন আহমেদকে হাত ও চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ নেয়ার সময় সালাহ উদ্দিন তাঁকে ফোন করেছিলেন, কিন্তু কথা বলার আগেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়৷ তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময় মোট ছয়টি গাড়িতে ২০/২৫ জন লোক এসেছিলেন৷''

কথার মিল

সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রীর তখনকার অভিযোগের সঙ্গে সালাহ উদ্দিনের এখনকার কথার মিল পাওয়া যায়৷ কিন্তু তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর থানা পুলিশ এনিয়ে কোনো তদন্ত করেনি৷ আর তিনি ভারতে আটক হওয়ার পর র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘সালাহ উদ্দিনকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে৷''

Polizisten vor dem Sitz der Nationalistischen Partei BNP in Dhaka
ছবি: DW

বিএনপি'র বক্তব্য

এসব প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আযম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ভারতের উচিত সালাহ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য তদন্ত করে দেখা৷ কারা তাঁকে হাত-চোখ বেঁধে শিলং-এ ফেলে এসেছে৷ সালাহ উদ্দিনের আইনজীবীও আদালতে বিষয়টি তুলে ধরবেন৷'

তিনি জানান, ‘‘সালাহ উদ্দিন আহমেদকে অপহরণের পর শিলং-এ জোর করে পাঠানো হয়েছে, তিনি স্বেচ্ছায় যাননি- এই বিষয়টি ভারতীয় পুলিশের আমলে নেয়া উচিত৷ তাদের তদন্ত করে বের করা উচিত কারা সালাহ উদ্দিনকে নিয়ে গেছে এবং তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত৷'' তিনি আশা করেন ফরেনার্স অ্যাক্টে যদি মামলাও হয় তাহলেও সালাহ উদ্দিন আহমেদ অব্যাহতি পাবেন৷

আযম খানের দাবি, ‘‘সালাহ উদ্দিন আহমেদ তাঁকে অপহরণ, দু'মাস আটকে রাখাসহ যেসব অভিযোগ করেছেন তা তদন্তের জন্য বাংলাদেশে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক৷ তাহলেই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে৷''

এদিকে ভারতে আটক সালাহ উদ্দিন আহমেদ তাঁর চিকিৎসার জন্য তৃতীয় কোনো দেশে যাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন৷ এব্যাপারে ভারতের আদালতে অনুমতি চাওয়া হবে বলে জানা গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য