1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‘হাসিনার প্রতীকী কবর’’

২৬ ডিসেম্বর ২০১৩

কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরকে ঘিরে বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছে জামায়াত-শিবির৷ ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের হয়ে সেসব এলাকা ঘুরে এসে বর্বরতার অবিশ্বাস্য বর্ণনা দিয়েছেন রোকেয়া প্রাচী৷

https://p.dw.com/p/1Agoi
Anschlag in Bangladesch EINSCHRÄNKUNG
ফাইল ফটোছবি: Mustafizur Rahman Uzzal

অভিনেত্রী, সংস্কৃতি কর্মী রোকেয়া প্রাচী ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে গিয়েছিলেন সাতক্ষীরায়৷ সাংবাদিক আবেদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সানজিদা আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েনের সঙ্গে ‘রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ'-এর হয়ে তিনিও গিয়েছিলেন সাতক্ষীরায়৷ কলারোয়া, দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও আশাশুনি এলাকা ঘুরে তিনি দেখেছেন পোড়া ঘর, পোড়া দোকানপাট, খুঁড়ে ফেলা রাস্তা, কেটে ফেলা শত শত গাছ আর শুনেছেন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদের নামে মানুষ মারার রোমহর্ষক সব বর্ণনা৷

‘‘হাসিনার প্রতীকী কবর’’

ডয়চে ভেলেকে দেয়া রোকেয়া প্রাচীর এই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে নয় বছরের এক শিশুকে পানিতে চুবিয়ে মেরে ফেলার কথা৷ রিয়াদ নামের শিশুটির অপরাধ তার পরিবারের লোকজন আওয়ামী লীগ করে৷ বাড়ির উঠোনে শুয়ে থাকা অবস্থায় ৭০ বছর বয়সি এক মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে মেরেছে জামায়াত-শিবির৷ একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্তদের দল হিসেবে পরিচিত জামায়াতে ইসলামী কলারোয়ার আওয়ামী লীগ নেতা আজহারুল ইসলাম আজুকে তাঁর বাবার কবর থেকে টেনেহিঁচড়ে এনে কুপিয়ে মেরেছে৷ পিতার কবরে লুকিয়েও প্রাণ রক্ষা হয়নি তাঁর৷ শুধু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী বা মুক্তিযোদ্ধা নয়, বরাবরের মতো হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপরও নির্বিচারে হামলা চালানো হয়েছে৷ পত্রপত্রিকায় কি সাতক্ষীরার চিত্রটা পুরোপুরি উঠে এসেছে? রোকেয়া প্রাচী স্বীকার করেছেন, মাত্র দু-দিনে অনেক এলাকাই তাঁদের দেখা হয়নি, শোনা হয়নি অজস্র মানুষের আতঙ্কের জগতে বাস করার গল্প৷

অনেকে নাকি সাতক্ষীরায় আর বসবাস করছেন না৷ আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী এখনো দূরের কোনো নিকটজনের বাড়িতেই যাপন করছেন আশ্রিতের জীবন৷ অনেকে আবার দেশ ত্যাগ করেছেন, কেউ কেউ দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এসব তথ্য জানিয়ে প্রাচী বলেছেন, দেশত্যাগী এবং দেশ ত্যাগে ইচ্ছুকদের বেশিরভাগই হিন্দু৷

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মানুষ হত্যা এবং জীবিতদের মনে আতঙ্কের জন্ম দেয়া জামায়াত-শিবিরের আক্রমণের কৌশল এখন পাল্টেছে বলে জানিয়েছেন রোকেয়া প্রাচী৷ চোরাগুপ্তা হামলায় এখনো যে অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নিহত হচ্ছেন সে খবর গণমাধ্যমেও অবশ্য নিয়মিতই আসছে৷ বিজিবি এবং পুলিশের তৎপরতায় সাতক্ষীরায় সহিংসতা আগের চেয়ে কমেছে৷ সে খবরও পত্র-পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন-রেডিও থেকে জানা যাচ্ছে৷ রোকেয়া প্রাচী মনে করেন, জামায়াত-শিবির এসব করছে শুধুই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে৷ তিনি মনে করিয়ে দিলেন, জামায়াতের এ তাণ্ডব শুরু হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে৷ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় ঘোষণার পর থেকেই মূলত এই বিভৎতার শুরু৷ বিএনপির সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে নির্বাচনের কথা বললেও জামায়াত আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্যই দেশজুড়ে সুযোগ পেলেই চালাচ্ছে ব্যাপক সহিংসতা৷ সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতীকী কবরও নাকি খুঁড়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা!

রোকেয়া প্রাচী মনে করেন, সম্ভব সব উপায়েই রাষ্ট্র, প্রধানমন্ত্রী, প্রশাসন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে জামায়াত শিবির৷ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা নিজেদের এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কারণেই সাতক্ষীরায় বর্বরোচিত হামলা চালানো জামায়াতের পক্ষে সম্ভব হয়েছে বলে তিনি মনে করেন৷ তবে রোকেয়া প্রাচীর দৃঢ়বিশ্বাস সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বাংলাদেশের মানুষ একতাবদ্ধ হবে এবং জামায়াতের এই বিভৎস এবং নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে অশুভ শক্তিকে বিতাড়িত করবে৷

সাক্ষাৎকার: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: জাহিদুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য