1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি আর দাসত্বের বাংলাদেশ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৮ নভেম্বর ২০১৪

সন্ত্রাসবাদের বড় ধরণের ঝুঁকি আর আধুনিক দাসত্বের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থা খুব খারাপ৷ ‘ইনস্টিটিউট ফর ইকনমিক্স অ্যান্ড পিস’-এর প্রকাশ করা ২০১৪ সালের বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ সূচকে এ ঝুঁকির কথা জানা যায়৷

https://p.dw.com/p/1DpC8
Propagandabild IS-Kämpfer ARCHIV
ছবি: picture-alliance/abaca/Yaghobzadeh Rafael

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে এটা ইনস্টিটিউট ফর ইকনমিক্স অ্যান্ড পিস বা আইইপি-র দ্বিতীয় প্রতিবেদন৷ ২০১২ সালে প্রথমবার সন্ত্রাসবাদ সূচক প্রকাশ করে আইইপি৷ আইইপি-র এই প্রতিবেদনে বিশ্বের যে ১৩টি দেশকে সন্ত্রাসবাদের বড় ধরনের ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম৷ এই তালিকায় বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, ইরান, মিয়াননমার, মালি, উগান্ডা, ইসরায়েল প্রভৃতি দেশ৷

২০১৪ সালের বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ সূচকে ১৬২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ২৩তম৷ এই তালিকা অনুসারে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী ইরাক৷ এরপর যথাক্রমে রয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, সিরিয়া ও ভারত৷ সূচকে ২০১২ সালে ১৫৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৯তম৷

সন্ত্রাসী তত্‍পরতা বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকা বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০১৩ সালের প্রায় পুরোটা সময় ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতা ও হানাহানি চলে৷ দেশজুড়ে ব্যাপক নাশকতায় এবং জামায়াত-বিএনপি জোটের হরতাল, অবরোধে সহিংসতায় বহু মানুষ হতাহত হয়৷

Symbolbild islamistischer Kämpfer
যে ১৩টি দেশকে সন্ত্রাসবাদের বড় ধরনের ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতমছবি: Fotolia/Oleg Zabielin

ইনস্টিটিউট ফর ইকনমিক্স অ্যান্ড পিস মনে করছে, বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা-নিপীড়নের পাশাপাশি নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, দলগত সমঝোতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব রয়েছে৷ আর এ কারণেই ১৩ দেশের ঝুঁকির তালিকায় বাংলাদেশকে রেখেছে সংস্থাটি৷

দাসত্ব সূচকে নবম স্থানে বাংলাদেশ

বিশ্বের ১৬৭টি দেশের ওপর পরিচালিত এক জরিপে দাসত্ব সূচকে বিশ্বের প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নবম৷ অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘ওয়ার্ক ফ্রি ফাউন্ডেশন' বিশ্ব দাসত্ব সূচক ২০১৪-র রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে৷

সংস্থাটি দ্বিতীয়বারের মতো এ সূচক প্রকাশ করল৷ গত বছর প্রকাশিত সূচকে বাংলাদেশের দাসের সংখ্যা ছিল সাড়ে তিন লাখ৷ এ বছর ঐ সূচক অনুসারে, বাংলাদেশের ছয় লাখ ৮০ হাজার ৯০০ মানুষ ‘আধুনিক দাসের' জীবনযাপন করে৷ বাংলাদেশে ঋণ, জোরপূর্বক শ্রম, বাণিজ্যিকভাবে যৌনকাজে বাধ্য হওয়া, শৈশবে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ারমত দাসত্ব রয়েছে৷ বাংলাদেশের মানুষ সুনির্দিষ্টভাবে ইটভাটা, তৈরি পোশাক শিল্পকারখানা, রাস্তায় ভিক্ষা ও চিংড়ি ঘেরে শ্রমদানে বাধ্য হয়৷

ওয়ার্ক ফ্রি ফাউন্ডেশন-এর জরিপ ও গবেষণা অনুযায়ী, সারা বিশ্বে বর্তমানে তিন কোটি ৬০ লাখ মানুষ আধুনিক দাসত্বের জীবনযাপন করছেন৷ এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ৷ দেশটির এক কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ দাস হিসেবে কাজ করছেন৷ এর পরেই চীন ও পাকিস্তানের অবস্থান৷ ওয়ার্ক ফ্রি ফাউন্ডেশন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দাসত্বের এই শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশের সরকার তেমন সক্রিয় নয়৷

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক এবং মানবাধিকার নেতা নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দুটি বিষয়ের পেছনেরই কারণ হলো সুশাসনের অভাব৷'' তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চার বদলে দেখে নেয়ার মানসিকতা সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদকে উসকে দিচ্ছে৷ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চর্চা না থাকায় প্রধান সব রাজনৈতিক দলই পেশি শক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে৷ এর অবসান না হলে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের ঝুঁকি আরো বাড়বে বাংলাদেশে৷''

নূর খান বলেন, ‘‘তাই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা এবং সমঝোতা খুবই জরুরি৷ অন্যথায় জঙ্গিরা বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় হুমকি হয়ে দাড়াতে পারে৷''

‘‘অন্যদিকে বাংলাদেশে শ্রম আইন এবং নাগরিকের সুরক্ষা আইনে ঘাটতি থাকায় এখানে আধুনিক দাসত্বের অবসান ঘটছে না৷ সরকারের এদিকে তেমন কোনো নজরও নেই৷ কারণ যাঁরা এই দাসত্বের শিকার, তাঁরা ক্ষমতার ভরকেন্দ্রের বাইরে৷ তাই তাঁদের দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না৷'' অবশ্য সুশাসন থাকলে এই পরিস্থতি কখনই হতো না বলে মনে করেন নূর খান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান