1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সন্ত্রাসবাদ রোখার নতুন স্ট্র্যাটেজি চাই

গ্রেহেম লুকাস/এসি১৮ নভেম্বর ২০১৪

সদ্য প্রকাশিত গ্লোবাল টেররিজম ইন্ডেক্স থেকে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে৷ এর অর্থ, সন্ত্রাসবাদ রোধের বর্তমান নীতি কার্যকরি নয়, বলে গ্রেহেম লুকাসের ধারণা৷

https://p.dw.com/p/1DpFO
Syrische Flüchtlinge an der türksichen Grenze
(ফাইল ফটো)ছবি: Bulent Kilic/AFP/Getty Images

২০০১ সালে নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উপর জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার আক্রমণ৷ অতঃপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন: ‘ওয়ার অন টেরর'৷ কিন্তু তার ১৩ বছর পরেও দেখা যাচ্ছে, সে যুদ্ধের অন্ত ঘটেনি৷ বরং ২০১৩ সালে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী আক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশ হাজারে – যা কিনা ২০১২ সালের চেয়ে ৪৪ শতাংশ বেশি৷ আরো বড় কথা, ২০১৩ সালে সন্ত্রাসী আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় আঠেরো হাজার মানুষ, যা কিনা ২০১২ সালের তুলনায় ৬১ শতাংশ বেশি৷ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফলে সন্ত্রাস যেন আরো বেড়ে গেছে৷

Propagandabild IS-Kämpfer ARCHIV
২০১৫ সালেও আইসিস, আল-কায়েদা, বোকো হারাম ও তালেবানের মতো গোষ্ঠী তাণ্ডব চালিয়ে যাবেছবি: picture-alliance/abaca/Yaghobzadeh Rafael

সন্ত্রাসবাদের ইতিহাসের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে যে, সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন দমনের সেরা উপায় হল, বিদ্রোহীদের একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট করা, যেমন উত্তর আয়ারল্যান্ডে করা হয়েছে৷ বিগত ৫০ বছরে যে সব সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ও গোষ্ঠী বিলুপ্ত হয়েছে, তাদের ৮০ শতাংশ উধাও হয়েছে কোনো শান্তি চুক্তি গৃহীত হবার পর৷ রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার দরুণ যে সব সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তাদের আন্দোলনের অন্ত ঘটিয়েছে, তাদের অনুপাত দশ শতাংশের বেশি নয়৷ এছাড়া সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনগুলির মাত্র সাত শতাংশ সহিংস পদ্ধতিতে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে – এ সবই বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ ইনডেক্স-এর পরিসংখ্যান৷ সন্ত্রাসে যে পরিমাণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, তার তুলনায় এই সাফল্যের খতিয়ান যৎসামান্য৷

এ থেকে আরো বোঝা যাচ্ছে যে, সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে মোকাবিলা করার শ্রেষ্ঠ পন্থা হলো আলাপ-আলোচনা এবং অংশিদারিত্ব৷ কিন্তু বহু দেশেই প্রাথমিক সরকারি প্রতিক্রিয়া হলো সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামরিক বা আধা-সামরিক অভিযান৷ কিন্তু এই ‘অসম যুদ্ধের' যুগে বিদ্রোহীরা একটি সুসংগঠিত সেনাবাহিনীরও মোহড়া নিতে পারে সুপ্রচারিত সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ চালিয়ে, সম্মুখসমরে না গিয়ে৷ যেমন আফগানিস্তানে পশ্চিমি সেনাবাহিনী তালেবানকে নির্মূল করতে পারেনি৷

Deutsche Welle DW Grahame Lucas
গ্রেহেম লুকাস, ডিডাব্লিউ-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধানছবি: DW/P. Henriksen

অর্থাৎ সামরিক পন্থায় সন্ত্রাসবাদ রোধের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়৷ গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স থেকে আরো দেখা যাচ্ছে, যে সব দেশ সর্বাধিক সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছে, সে' সব দেশে মূলত ইসলামি সন্ত্রাসবাদের ঘাঁটি৷ গোঁড়া ইসলামপন্থি মতাদর্শের সঙ্গে বাস্তব সমাধান নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে কোনো লাভ নেই৷ অপরদিকে শুধু সামরিক অভিযানে এই সন্ত্রাসবাদকে সীমিত করা সম্ভব, কিন্তু পরাজিত করা সম্ভব নয়৷

কাজেই এই আশঙ্কা অমূলক নয় যে, ২০১৫ সালে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে এবং আইসিস, আল-কায়েদা, বোকো হারাম ও তালেবানের মতো গোষ্ঠী তাদের তাণ্ডব চালিয়ে যাবে৷ শুধুমাত্র একটি পন্থাই বিবেচ্য: সংশ্লিষ্ট দেশগুলিকে তাদের জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে; শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে; আইনের শাসন ও সুশীল সমাজ, গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে৷ এভাবেই সম্ভাব্য সন্ত্রাসবাদীদের স্বদেশে বিচ্ছিন্ন করা, তাদের সমর্থনের ভিত্তি কেড়ে নেওয়া সম্ভব হবে৷ এ এমন এক প্রক্রিয়া, যার সূচনা একমাত্র সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতে হতে পারে: পশ্চিম সে প্রক্রিয়ায় বড়জোর সাহায্য করতে পারে মাত্র৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান