1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ডাবল হেলিক্স

মারিয়া লেসার/এসি২৬ জুলাই ২০১৪

হাইডেলব্যার্গের এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা ডিএনএ ঘেঁটে মানুষের বহু রোগভোগের জিন-গত রহস্য ভেদ করছেন এবং রোগী ও তার পরিবারবর্গের শান্তি ও স্বস্তিবর্ধন করছেন৷ বুনিয়াদি গবেষণা, অথচ মানুষের কল্যাণে৷

https://p.dw.com/p/1Ciks
Symbolbild DNA Probe Y-Chromosom
ফাইল ফটোছবি: picture-alliance/dpa

রোগভোগের জিন-গত রহস্য ভেদ

ইয়ান কর্বেল একজন মলিকিউলার বায়োলজিস্ট ও গবেষক৷ তাঁর গবেষণার বিষয় হল ডিএনএ-র পরিবর্তনের সঙ্গে ক্যানসারের মতো রোগের সম্পর্ক৷ ২০০৮ সাল থেকে তিনি ‘এম্বল'-এ আছেন৷ ‘এম্বল' বা ইএমবিএল হল হাইডেলব্যার্গের ইউরোপিয়ান ল্যাবোরেটরি ফর মলিকিউলার বায়োলজি৷

কর্বেল'এর গবেষণা শুরু হয়েছিল এক পরিবারকে দিয়ে, যে পরিবারের একাধিক সদস্য ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন৷ একটি শিশু একাধিকবার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে শেষে প্রাণ হারিয়েছে৷ টিউমার ও রক্তের নমুনা থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করে শিশুটির ক্যানসার হওয়ার কারণ ধরা পড়েছে: একটি ক্রোমোজোম বিস্ফোরিত হয়ে যাবতীয় জেনেটিক তথ্য এলোমেলো করে দিয়েছে৷ ইয়ান কর্বেল বলেন, ‘‘যে কোষটিতে এই ঘটনা ঘটেছে – সম্ভবত শিশুটির মস্তিষ্কের একটি মাত্র কোষে – সেই কোষ এই ক্ষত কিংবা ক্ষতি আংশিক সারাতে সক্ষম৷ এর অর্থ, ক্রোমোজোমটি আংশিকভাবে মেরামত করা সম্ভব, কিন্তু পুরোপুরি নয়৷''

এছাড়া বিজ্ঞানীরা জিনের এমন একটি পরিবর্তন খুঁজে পেয়েছেন, যা বংশানুক্রমে চলে আসছে৷ এই পরিবর্তনের ফলেই সম্ভবত কোষের বিস্ফোরণ ঘটে থাকে৷ ইয়ান কর্বেল বলেন, ‘‘আমরা গবেষক৷ গবেষণাই আমাদের কাজ৷ তবুও এটা ভাবতে ভালো লাগে যে, আমরা এমন একটা কিছু খুঁজে পেয়েছি, যার দ্বারা ব্যাখ্যা করা চলে, কেন এই পরিবারের এতোগুলি শিশুর এই রোগ দেখা দিল৷ আবার ভয় হয় এ' দেখে, আমাদের শরীরের কোষে কতো কী ঘটতে পারে৷''

ভাগ্য ভালো, বংশানুক্রমে পাওয়া জিন-পরিবর্তন সহজেই ধরা পড়ে৷ কর্বেল'এর ভাষ্যে, ‘‘তার ফল হল এই যে, যে সব পরিবারে এই জিন মিউটেশন প্রায়শই দেখা দেয়, সে সব পরিবারের সদস্যদের ঘন ঘন পরীক্ষা করে দেখা সম্ভব যে, তাদের ক্যানসার হয়েছে কিনা৷ প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে অস্ত্রোপচার করে টিউমারটি বাদ দেওয়া চলে৷''

গবেষণার ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান ল্যাবোরেটরি ফর মলিকিউলার বায়োলজির সাফল্যের একটা কারণ হয়তো তার ক্যাফেটেরিয়া৷ কর্বেল'ও স্বীকার করলেন, ‘‘এম্বল-এ আমাদের কাছে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের দেখাশোনা, মেলামেশার এই জায়গাটা রয়েছে, যেখানে আমরা পরস্পরের দেখা পাই, কথাবার্তা বলি এবং শুনি অন্যরা কী করছে৷ বলতে কি, সবসময়েই কিছু না কিছু নতুন খবর পাওয়া যায়৷ শুধু ক্যান্টিনের সুস্বাদু কেক-ই নয়, এমন সব বৈজ্ঞানিক তথ্য জানতে পারা যায়, যা নিজের কাজে লাগে৷''

‘এম্বল'-এ আসেন নামী-দামী, প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানীরা, কিন্তু তাদেরও এখানে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আনা হয়৷ কর্বেল'এর ধারণা, ‘‘গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘এম্বল' এতোটা এগোতে পারতো না, যদি না প্রতি ন'বছর অন্তর গবেষকদের পুরো দলটাই বদলে যেতো৷''

এ ভাবে নবকলেবর কিংবা নবজন্ম গ্রহণ করা ‘এম্বল'-এর পক্ষে খুব শক্ত কাজ নয়, কেননা বিজ্ঞানীরা সানন্দেই এখানে কাজ করতে আসেন৷ গবেষণার ফান্ড ও সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতির পাশাপাশি আরও কিছু আছে , যা স্বভাবতই কর্বেল'এর নজর এড়ায়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘এই সংখ্যায় নামকরা গবেষক আর সেই সঙ্গে খুবই তরুণ গবেষকদের একটা দল, যারা এখানে এসেছেন ভালো কিছু একটা করার জন্য৷ সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটা সম্মেলন: ইউরোপীয়, এশীয়, মার্কিনি, সবাই এখানে আছেন৷''

ইয়ান কর্বেল'ও ‘এম্বল'-এ তাঁর সময়টা ভালোভাবে কাজে লাগাতে চান৷ তাঁর সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হলো, ‘‘আমি গবেষণার ক্ষেত্রে এমন একটা কিছু করতে চাই, যা সমাজের কাজে লাগবে৷ আমি ক্যানসার গবেষণায় এমন ফলাফল পেতে চাই, যা অন্তত কিছু রোগীর কল্যাণ করবে৷''

ইয়ান কর্বেল যে ধরনের বুনিয়াদি গবেষণা করেন, তাতে বহু সময় লাগে, গবেষণার ফলের তাৎপর্য বোঝা যায় অনেক পরে৷ তা সত্ত্বেও হাইডেলব্যার্গের ইউরোপিয়ান ল্যাবোরেটরি ফর মলিকিউলার রিসার্চ বা ‘এম্বল' চলেছে গত ৪০ বছর ধরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য