1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যৌন নিপীড়ন বলতে আইনে যা বলা আছে

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৮ মে ২০১৫

ঢাকার একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের পর যৌন নিপীড়ন বিরোধী হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবি উঠেছে৷ আর যৌন নিপীড়নের ব্যাপারে আইনে যা বলা আছে, তাও স্পষ্ট করার কথা উঠছে৷

https://p.dw.com/p/1FRLJ
Symbolbild Protest gegen Vergewaltigungen in Indien
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Saurabh Das

বিশ্লেষকরা মনে করেন এই বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন হলে এধরণের ঘটনা কমে আসবে৷

ঢাকার মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটে গত ৫মে৷ তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে না নিয়ে উলটো ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে৷ আর এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিভাবকরা গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন৷ ফলে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়৷ কমিটি নির্ধারিত দিন শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেয়ায় স্কুলে ব্যাপক হট্টগোল হয়৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে সেদিন স্কুলের উপাধ্যক্ষ জিন্নাতুন নেসাকে সরিয়ে দেয়া হয় তাঁর পদ থেকে৷ রবিবার তদন্ত রিপোর্ট জমা এবং স্কুলের এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে সাসপেন্ড করা হয়৷ তবে তদন্ত প্রতিবেদনে কী আছে তা প্রকাশ করা হয়নি৷

স্কুলের গভর্নিং বডি এবং তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. ম তামিম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা যৌন নিপীড়নের কোনো প্রমাণ পাইনি৷ আমরা তথ্য পেয়েছি এক কর্মচারী ছাত্রীটির গলায় চাকু ধরেছিল৷ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷ আর তার পরিবারও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেনি৷ একটি মহল স্কুলের ক্ষতি করার জন্য যৌন হয়রানির ইস্যু তৈরি করছে৷'' কেন ছাত্রীটির গলায় চাকু ধরা হয়েছিল? প্রশ্ন করলে ম তামিম তার কোনো জবাব দিতে পারেননি৷

নারী নেত্রী এবং মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখানেই সমস্যা৷ যৌন নিপীড়ন বলতে আইনে কী আছে তা জানেন না অনেকেই৷ তারা মনে করেন নারী ধর্ষিত না হলে যৌন নিপীড়ন হয় না৷'' তিনি বলেন, ‘‘২০০৩ সালের আইনে অসত্‍ উদ্দেশ্যে নারীর যে-কোনো অঙ্গ স্পর্শ করাই যৌন নিপীড়ন৷ এমনকি নারীর পোশাক ধরে টান দেয়া, ধাক্কা দেয়া এগুলোও যৌন নিপীড়ন৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে ওই কর্মচারী কেন ছাত্রীর গলায় চাকু ধরেছে? তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না যে যৌন নিপীড়ন হয়নি৷''

অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস, শিল্প কারখানা এমনকি পথেঘাটে, মার্কেটে যৌন নিপীড়নের ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে৷ কিন্তু আইন না জানায় আমরা অনেকই তাকে যৌন নিপীড়ন বলছিনা৷''

বাংলাদেশে ২০১০ সালে উচ্চ আদালত যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে একটি নির্দেশনা দেয়৷ আর তাতে বলা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ যেসব প্রতিষ্ঠানে নারী রয়েছেন সেসব প্রতিষ্ঠানে একজন নারীর নেতৃত্বে যৌন নিপীড়ন বিরোধী কমিটি থাকতে হবে৷ আর কমিটির মোট সদস্যদের মধ্যে নারীদের প্রাধান্য থাকতে হবে৷ একটা বাক্সে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে৷ প্রতি তিনমাস পর ওই বাক্স খুলে যদি কোনো অভিযোগ পান তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে কমিটি৷ আর তদন্তে গোপনীয়তা রাখতে হবে৷ কেউ চাইলে সরাসরিও কমিটির কাছে অভিযোগ করতে পারবেন৷

কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে জানান এলিনা খান৷ তিনি জানান, ‘‘কিছু প্রতিষ্ঠানে এধরণের কমিটি থাকলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই নেই৷''

বাংলাদেশ অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে স্কুল এবং কলেজে অনেক যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলেও তা প্রকাশ পায় না৷ স্কুল কলেজের গভর্নিং বডি ধামাচাপা দেয়৷ আর কেউ অভিযোগ করলে অনেক সময়ই উলটো হেনস্তা হতে হয়৷'' তিনি দাবি করেন, ‘‘প্রিপারেটরি স্কুলের প্রথম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে স্কুল থেকে টিসি দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছিল৷''

জিয়াউল কবির দুলু বলেন, ‘‘ঢাকা কেন, বাংলাদেশের কোনো স্কুল কলেজেই যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি নেই৷ এটা হওয়া প্রয়োজন৷ আর এর সঙ্গে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে থাকা প্রয়োজন জেন্ডার নীতিমালা৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য