1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মামলায় ধীর গতি

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২১ আগস্ট ২০১৪

বাংলাদেশে একুশে আগস্টের গ্রেনেড মামলা খুবই ধীর গতিতে এগোচ্ছে৷ বিচার শুরুর পাঁচ বছরে মামলার মাত্র ২০ ভাগ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত৷ এছাড়া ঐ মামলার ৫২ জন আসামির মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৯ জনই এখনো পলাতক৷

https://p.dw.com/p/1Cyg5
Unruhe in Bangladesch
ছবি: AP

২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন ২৪ জন৷ এছাড়াও আহত হন ৫ শতাধিক, যাঁদের অনেকের বিভিন্ন অঙ্গহানি হয়৷ এই হামলার মূল ‘টার্গেট' ছিলেন তখনকার বিরোধী দলীয় নেত্রী, অর্থাৎ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও কানে গুরুতর আঘাত পান৷ নেতা-কর্মীরা মানব ঢাল বানিয়ে তাঁকে রক্ষা করেন৷

ঘটনার সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামাত জোট সরকার৷ তখন এই মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ ওঠে৷ তখনকার প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আওয়ামী লীগের সমাবেশে এই হামলার জন্য প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে আওয়ামী লীগকেই দায়ী করেন৷
সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমালে এই মামলার তদন্ত নতুন মোড় নেয়৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালের ৯ই জুন মোট ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগ-পত্র দেয় সিআইডি৷ মামলার বিচার শুরু এবং সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর, রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন দ্রুতবিচার আদালতের তত্‍কালীন বিচারক মাসদার হোসেন৷

Unruhe in Bangladesch
আহত হন ৫ শতাধিক, যাঁদের অনেকের বিভিন্ন অঙ্গহানি হয়ছবি: DW

অধিকতর তদন্ত শেষে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, লুত্‍ফুজ্জামান বাবর ও আলী আহসান মো. মুজাহিদসহ আরো ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগ-পত্র দেয় সিআইডি৷ তখন মোট আসামি দাড়ায় ৫২ জনে৷ ২০১১ সালে নতুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়৷ এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মোট ৪৯১ জন৷ এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে মাত্র ৯৯ জন সাক্ষী দিয়েছেন৷

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউর রহমান অবশ্য দাবি করেন, ‘‘বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা বিচার বিলম্বিত করতে সাক্ষীদের অপ্রাসঙ্গিক জেরা করছেন৷ তাছাড়া বিচারকাজ চলার সময়ে তাঁরা অপ্রয়োজনীয় মতামত দিচ্ছেন৷ ফলে সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে ধীর গতিতে৷''এছাড়া আসামিদের মধ্যে অনেকে আরো মামলায় জড়িত থাকায় তাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে নেয়ার প্রয়োজন হওয়াতেও শুনানি পেছাতে হচ্ছে বলে জানান রেজাউর রহমান৷

এই মামলা পরিচালনায় রেজাউর রহমানসহ রাষ্ট্রপক্ষে ১১ জনকে দায়িত্ব দেয়া হলেও রেজাউর রহমান ছাড়া আর কেউ নিয়মিত হাজির হন না৷ তাঁরা মামলার অগ্রগতি নিয়েও কোনো খবর রাখেন না৷ অন্যদিকে এই মালার মামলার ৫২ আসামির মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৯ জনই পলাতক৷ পলাতকদের সবাই বিদেশে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ তাঁদের মধ্যে একজন মাওলানা তাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস রয়েছে৷

পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টারপোল ডেক্স-এর এআইজি মাহবুবুর রহমান ভূইয়া বলেন, ‘‘পলাতক অন্য আসামিদের ব্যাপারে তদন্ত সংস্থা সিআইডি চাইলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পুলিশ সদর দপ্তর৷''তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি-র এসপি কাহহার আখন্দ জানান, ‘‘পলাতকদের মধ্যে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান লন্ডনে রয়েছেন৷ দুই আসামি মুরসালিন আর মুত্তাকীন ভারতের তিহার কারাগারে বন্দি আছেন বলে জেনেছে সিআইডি৷ অন্যরা কোথায় আছেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই তাদের কাছে৷''

জানা গেছে, পলাতক সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ থাইল্যান্ডে, হানিফ পরিবহনের মালিক হানিফ ভারতে, এটিএম আমিন যুক্তরাষ্ট্রে, সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার ক্যানাডায় এবং বাবুল ওরফে রাতুল বাবু ভারতে অবস্থান করছেন৷

অন্য পলাতকরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, মাওলানা আবু বকর, ইকবাল, খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা জুবায়ের ওরফে দেলওয়ার, মাওলানা তাজুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান ও খান সাইদ হাসান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য