1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভোটযুদ্ধের ‘ক্লোন’ প্রার্থীরা...

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২০ এপ্রিল ২০১৪

কোনো প্রাণীর দেহকোষ থেকে হুবুহু সেই জীবটিকে আবারো তৈরি করার পদ্ধতির বৈজ্ঞানিক নাম হলো ‘ক্লোনিং’৷ ভারতীয় ভোটযুদ্ধে প্রার্থীদের এভাবে ‘ক্লোন’ করা না হলেও, প্রতিপক্ষকে কাবু করতে ‘গোঁজ’ প্রার্থী নামানোর চল কিন্তু নতুন নয়৷

https://p.dw.com/p/1Bkz8
ছবি: UNI

কথায় আছে প্রেমে ও রণে কোনো পন্থাই অন্যায় নয়৷ ভোট যুদ্ধে ভারতের মতো দেশে কৌশলে প্রতিপক্ষকে আটকাতে গোঁজ প্রার্থী নামানোর রেওয়াজ নতুন কিছু নয়৷ সাধারণত, যুযুধান দুই পক্ষের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা থাকলে একে অপরের ভোট কাটতে এই গোঁজ প্রার্থী নামানো হয়৷ মানে শক্তিশালী প্রার্থীর নামের সঙ্গে মেলে এমন বেশ কয়েকজন প্রার্থী নামানো হয়৷ একই নামের এই সব গোঁজ প্রার্থীর লক্ষ্য ভোটে জেতা নয়, বিপক্ষ প্রার্থীর ভোট কেটে তাঁকে হারানো৷ প্রতিবারের মতো ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম হয়নি৷ তবে আধুনিক ভারতে এদের আর ‘গোঁজ' প্রার্থী নয়, বলা হচ্ছে ‘ক্লোন ক্যান্ডিডেট'৷

ভারতের পশ্চিমী রাজ্য মহারাষ্ট্রের মাভালে এবার এমনটাই ঘটেছে৷ একই নামের পাঁচ জন প্রার্থীর মধ্যে দু'জন আসল প্রতিদ্বন্দ্বী, বাকি তিনজন গোঁজ প্রার্থী৷ আসল প্রার্থীর একজনের নাম শ্রীরঙ বার্ণে৷ ইনি ভারতীয় জনতা দলের জোটসঙ্গি শিবসেনা দলের৷ তাঁর প্রতিপক্ষ হলেন কংগ্রেসের নির্বাচনি জোটসঙ্গি কৃষক-মজদুর পার্টির প্রার্থী লক্ষণ জগতাপ৷ ব্যালট পেপারে কিন্তু আছে পাঁচজন প্রার্থীর নাম৷ আর তাঁদের নামের পাশে আছে নিজ নিজ দলের নির্বাচনি প্রতীক চিহ্ন৷

নিরক্ষর ভোটাররা সাধারণত প্রতীক চিহ্ন দেখেই তাঁর মনোনীত প্রার্থীকে চিনে ভোট দিয়ে থাকেন, নাম পড়তে না পেরে৷ যেমন শিবসেনা দলের প্রার্থী বার্ণের প্রতীক চিহ্ন তীর-ধনুক৷ সেখানে এক গোঁজ প্রার্থীর প্রতীক চিহ্ন শুধু তীর৷ বিভ্রান্ত এক অশিক্ষিত গ্রাম্য ভোটার তীর ধনুকের বোতাম না টিপে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে শুধু তীর চিহ্নের বোতাম টেপেন৷ পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে পোলিং অফিসারকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘ভুলটা শোধরাতে গেলে কী করতে হবে?'' আবার অপর একজন ভোটার তাঁর পছন্দের প্রার্থী আসল জগতাপের নির্বাচনি প্রতীক চিহ্নটা চিনিয়ে দিতে অনুরোধ করেন পোলিং অফিসারকে৷ কিন্তু এটা আইন বিরুদ্ধ সেটা কে বোঝাবে?

আসলে ভোটে জেতার জন্য এঁরা নামেন না বা নামানো হয় না৷ নামেন বিরুদ্ধ দলের প্রার্থীর ভোট কাটতে৷ ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে৷ বিশেষ করে যেসব কেন্দ্রে প্রধান দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা থাকে৷ মহারাষ্ট্রের মাভাল সংসদীয় কেন্দ্রে মোট ভোটদাতার সংখ্যা ১৯ লাখের মতো৷ কিছু ভোট গোঁজ প্রার্থীদের ঝুলিতে গেলেও ভোটের ফলাফলে তার প্রভাব পড়ে, জানালেন মাভাল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোহন কাডু৷ তবে আসল প্রার্থীরা কিন্তু এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ৷

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের বৃহত্তম নির্বাচনি প্রক্রিয়া গোটা দুনিয়ায় প্রশংসিত৷ প্রশ্ন হলো: ভোট পন্ডিতরা ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বচনকে কী চোখে দেখছেন? তাঁরা মনে করেন, ভারতের ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে বিজেপির মোদী, কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী এবং আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ত্রিমুখী লড়াইয়ের মাধ্যমে, ১৬ই মে৷ কে জয়ী হবে? ধর্মনিরপেক্ষতা নাকি হিন্দু জাতীয়তাবাদ? মুক্ত বাজার অর্থনীতি নাকি সমাজতন্ত্রবাদ? বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর সুশাসন এবং উন্নয়নের স্লোগান কতটা বাস্তবায়িত হবে – সেটা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়৷ তবে পরিবর্তন যে একটা হবে সেবিষয়ে সন্দেহ নেই৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য