1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিন্ধুনদের জল নিয়ে বিরোধ

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৮ আগস্ট ২০১৪

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধুনদের জল নিয়ে বিরোধের চূড়ান্ত মীমাংসাসূত্র সর্বশেষ বৈঠকেও খুঁজে পাওয়া গেল না৷ বরং দু'দেশের সম্পর্কের কাঁটা রয়ে গেল৷ তবে দু'পক্ষই আশা ছাড়েনি৷ কারণ ঐ জল যে উভয়দেশের জন্যই জীবনসুধা৷

https://p.dw.com/p/1D2dC
Indien Teiche in Kalkutta
ছবি: DW/P. Mani Tewari

পাঁচদিনের বৈঠকই শেষ হয় মঙ্গলবার লাহোরে৷ কিন্তু সিন্ধুনদের জলপ্রবাহ চুক্তির অধীনে পরমাণু শক্তিধর দুটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে জল কমিশনার স্তরের সর্বশেষ ঐ বৈঠকে কোনো চূড়ান্ত সমাধানসূত্র উঠে আসেনি৷

ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের দিকে সিন্ধুনদের শাখা ঝিলাম নদীর ওপর নির্মীয়মান কিষাণগঙ্গা বাঁধের ‘ডিজাইন' বা নক্সা সংশোধনের পাকিস্তানি দাবি মানতে রাজি হয়নি ভারত৷ পাকিস্তানের বক্তব্য, কিষাণগঙ্গা এবং ভারতের দিকে চিনাব নদীর ওপর আরো চারটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির কারণে পাকিস্তানের দিকে সিন্ধুনদের জলপ্রবাহ ব্যাহত হবে, যেটা পাকিস্তানের পক্ষে গুরুতর উদ্বেগের কথা৷ ভারতের যুক্তি: দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে যেসব জলাধার তৈরি করা হচ্ছে, তাতে পাকিস্তানের দিকে জলের প্রবাহ ব্যাহত হবে না৷ দু'পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে বৈঠক অসমাপ্ত থেকে যায়৷ তবে পাকিস্তান হুঁশিয়ার করে দেয় যে, আগামী অক্টোবরে পরবর্তী বৈঠকে যদি কোনো ফয়সালা না হয়, তাহলে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবে পাকিস্তান৷

দেশভাগের পর ভারত ও পাকিস্তানের অভিন্ন নদী সিন্ধুনদের জল বণ্টন নিয়ে চুক্তি সই হয় বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে৷ চুক্তি অনুসারে সিন্ধুনদের পুবদিকের শাখা শতদ্রু, বিপাশা ও ইরাবতি নদী পড়ে ভারতের দিকে৷ আর পশ্চিম দিকের ঝিলাম, চিনাব ও সিন্ধু পড়ে পাকিস্তানের দিকে৷ সেই চুক্তি সই করেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু এবং পাকিস্তানের তৎকালান প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান৷ পাকিস্তানের দুশ্চিন্তা সিন্ধুনদের উৎসমুখ ভারতের দিকে৷ তাই কোনো কারণে, বিশেষ করে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভারত যদি জলপ্রবাহ আটকে দেয়, তাহলে পাকিস্তানে দেখা দিতে পারে খরা এবং দুর্ভিক্ষ৷ কিন্তু প্রতিবেশী দুটি দেশ তিনবার যুদ্ধে লিপ্ত হলেও ভারত সিন্ধুনদের জলপ্রবাহ কখনো আটকাবার কথা ভাবেনি৷ তবে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এবার যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যু্ধ বাঁধে, তাহলে সেই যুদ্ধ হবে ভূখণ্ড বা কাশ্মীর নিয়ে নয়৷ যুদ্ধ হবে জল নিয়ে৷ কারণ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং বিশ্ব উষ্ণায়নের অভিঘাতে জল হবে সবথেকে স্পর্শকাতর ইস্যু৷

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের তরফে সদিচ্ছার অবাব না থাকলেও, পররাষ্ট্র সচিব স্তরের বৈঠক ভেস্তে যায় কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে নতুন দিল্লির পাকিস্তানি হাই কমিশনারের বৈঠক করার জেরে৷ কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন এবং গুলি বিনিময়ে তা আরো বিষিয়ে ওঠে৷ এইরকম নানা ঘটনা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক দীর্ঘ চড়াই-উতরাই পার করে চলেছে গত ৬৭ বছর ধরে৷

যেহেতু প্রতিবেশী বদলানো যায় না, তাই দরজাও বন্ধ করা যায় না৷ তাই পররাষ্ট্র সচিব স্তরের বৈঠক বাতিল করার দিন দশেকের মধ্যেই পাকিস্তানি বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে বিনা বিলম্বে ভিসা দিতে ইতস্তত করেনি ভারত৷ আগামী ৩১শে আগস্ট মুম্বইয়ে শুরু হবে বাণিজ্য মেলা৷ তাতে যোগ দেবেন ৩০ জন পাকিস্তানি ব্যবসায়ী৷ প্রদর্শনীতে থাকবে পাকিস্তানের টেক্সটাইল, তৈরি পোষাক পরিচ্ছদ, খেলাধুলার সরঞ্জাম, জুয়েলারি ইত্যাদি৷ অনেকে মনে করছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য হবে দু'দেশের সম্পর্কের উন্নতির ভবিষ্যত নতুন কূটনৈতিক রুট৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য