1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্লগার রাজীব হত্যার বিচার শুরু

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৮ মার্চ ২০১৫

গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় আটজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত৷ ২১শে এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে৷ এভাবেই হত্যাকাণ্ডের দু'বছর পর বিচার শুরু হলো৷

https://p.dw.com/p/1EsYi
Bangladesch Dhaka Proteste
ছবি: picture-alliance/dpa

বুধবার ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন এ মামলার অভিযোগ গঠন করেন৷ অভিযোগ গঠনের সময় মামলার সাতজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷ তবে প্রধান আসামি রেদোয়ানুল আজাদ রানা এখনও পলাতক৷

আদালতে উপস্থিত সাতজন আসামি হলো – আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানী, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস বিভাগের ছাত্র সাদমান ইয়াছির মাহমুদ, ফয়সাল বিন নাঈম দীপ, এহসান রেজা রুম্মান, মাকসুদুল হাসান অনিক, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজ৷ প্রসঙ্গত, এই ছাত্রদের এরই মধ্যে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷

আসামিদের মধ্যে সাদমান ছাড়া বাকিরা ঢাকার হাকিম আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আগেই আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে৷

বুধবার বিচারক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শুনিয়ে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ? উপস্থিত সাতজন আসামির সবাই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে সুবিচার চায়৷ তাদের দাবি, তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে পুলিশ জবানবন্দি আদায় করেছে৷

রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আবু আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানি করেন৷ এরপর আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা, অ্যাডভোকেট এম এ খায়রুল হক লিটন ও অ্যাডভোকেট মো. ফারুকসহ অন্যান্য আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন৷

শুনানির সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে৷ তাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন না করে তাদের অব্যাহতি দেয়ার জন্য আবেদন জানান তাঁরা৷ আদালত অবশ্য তাঁদের আবেদন না মঞ্জুর করে করে অভিযোগ গঠন করে৷

২০১৩ সালে শাহবাগ আন্দোলন শুরুর দশম দিনে ১৫ই ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পল্লবীতে নিজের বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রাজীবকে৷

তদন্ত শেষে গত বছরের ২৮শে জানুয়ারি আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ৷ অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী করা হয় ৫৫ জনকে৷

অভিযোগপত্রে বলা হয়, মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানী ঢাকার মোহাম্মদপুরে দুটি মসজিদে জুমার খুতবায় ধর্মের বিরুদ্ধে লেখে এমন ব্লগারদের হত্যার ফতোয়া দিতেন৷ অন্য আসামিরা সবাই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং তারা ঐ খুতবা শুনতো৷ আর এভাবে তাদের মধ্যে যোগাযোগ তৈরি হয়৷

জসীমউদ্দিনের লেখা বই পড়ে এবং সরাসরি তার বয়ান ও খুতবা শুনে বাকি আসামিরা ‘নাস্তিক ব্লগারদের' খুন করতে উদ্বুদ্ধ ও উত্‍সাহিত হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়৷ এরই ধারাবাহিকতায় ব্লগার রাজীব খুন হন৷ রাহমানিকে ঐ হত্যাকাণ্ডে উত্‍সাহদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷

পেশায় স্থপতি রাজীব ব্লগ লিখতেন ‘থাবা বাবা' নামে, যেখানে ধর্মান্ধতা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতাকারীদের বিপক্ষে লিখতেন তিনি৷

আসামিদের মধ্যে জসীমকে ২০১৩ সালের ২রা সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয় তার আগে মার্চ থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে৷

মুফতি জসীমের উসকানিমূলক খুতবার বিষয়টি ছাত্রদের জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে৷ মুফতি জসীম জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান৷

এদিকে এই মামলার তদনত্মকারী সংস্থা ডিবির প্রধান, যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা মামলায় যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পেয়েছি৷ অপরাধীরা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে আশা করি৷''

তিনি জানান, ‘‘গত মাসে ঢাকায় লেখক এবং ব্লগার অভিজিত্‍ রায় হত্যায়ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা জড়িত বলে সন্দেহ করছি৷ রাজীব হত্যার পলাতক আসামি রানা অভিজিত্‍ হত্যায় প্রধান সন্দেহভাজন৷ তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান