1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রাজিলে ফুটবল এখনো ‘আফিম’!

১১ মে ২০১৪

ফুটবল উন্মাদনার দেশ ব্রাজিল৷ ব্রাজিলিয়ানদের ফুটবল প্রেমের অনেক গল্পই অনেকের জানা৷ জানেন কি, ফুটবল যে সেখানে এক ধরণের ‘আফিম’? জনতাকে ফুটবল নেশায় বুঁদ রেখে নিরাপদে থাকে শাসক?

https://p.dw.com/p/1BxV9
বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে উদ্বোধন হওয়া এই নতুন স্টেডিয়ামকে ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের আনন্দছবি: Getty Images/AFP

ব্রাজিল ফুটবলের স্বর্ণযুগ থেকেই ফুটবল সেখানে আফিমের মতো৷ সাম্বা ফুটবলের দেশ প্রথম বিশ্বকাপ জেতে ১৯৫৮ সালে৷ পরেরবার, অর্থাৎ ১৯৬২ সালেও শিরোপা ধরে রাখে তারা৷ এরপর ১৯৭০-এ আবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ‘জুলে রিমে কাপ' চিরতরে ঘরে তোলে দক্ষিণ অ্যামেরিকার এই দেশ৷ এসব অজানা নয় কারো৷ বিশ্বকাপ ইতিহাসের সফলতম দল ব্রাজিল- এটাও অজানা নেই কারো৷ অনেকের এটা হয়তো জানা নেই যে, ফুটবলের এই জনপ্রিয়তাকে সরকার সবসময় নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছে৷

বিশেষ করে সামরিক শাসন শুরুর পর থেকে ফুটবলকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা শুরু হয়৷ বামঘেঁষা সরকারকে হঠিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন হোসে সার্নে৷ তারপর থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলে চলেছে সামরিক শাসন৷ এ সময়ে ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি পেলে-র পেছনেও নাকি গোয়েন্দা লাগানো হয়েছিল৷ পেলে বামপন্থি হলে গোয়েন্দার মাধ্যমে তা জেনে তাঁর ক্যারিয়ার হয়ত আগেভাগেই শেষ করে দিতো সামরিক জান্তা৷

পেলে বা ১৯৫৮ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলকে তিনবার বিশ্বকাপ জেতানো অন্য খেলোয়াড়রা তবু সুযোগ পেয়েছেন দেশের হয়ে খেলার৷ কিন্তু ব্রাজিলে এমন ফুটবলার কম নয়, যাঁরা শুধু রাজনৈতিক দর্শনের কারণে কোনোদিন জাতীয় দলে সুযোগ পাননি৷

আফনসো সেদসো গার্সিয়া রেইস তাঁদেরই একজন৷ পেলেদের সময় বোটাফোগোর হয়ে দাপটেই খেলেছেন ঘরোয়া লিগ৷ কিন্তু জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয়নি কোনোদিন৷ এর কারণ জানাতে গিয়ে ৬৬ বছর বয়সি সাবেক মিডফিল্ডার বললেন, ‘‘আমার নীতি ছিল, তারই চড়া মূল্য দিয়েছি৷ ''

সামরিক শাসনের সময় বামপন্থি চেতনার খেলোয়াড়দের সুযোগ দেয়া হত না৷ দলে সুযোগ পাওয়া কাউকে কমিউনিস্ট মনে হলে সঙ্গে সঙ্গে পেছনে লাগানো হতো গোয়েন্দা৷ ১৯৭০ বিশ্বকাপের আগে ব্রাজিলকে বাছাই পর্বের বৈতরণী পার করিয়েছিলেন কোচ হোয়াও সালদানহা৷ কিন্তু ক্ষমতাসীনদের সন্দেহ হওয়ায় মূল পর্বে তাঁকে রাখা হয়নি৷ মূল পর্বে কোচ ছিলেন মারিও জাগালো৷ জাগালো অবশ্য দলকে চ্যাম্পিয়ন করেই দেশে ফিরেছিলেন৷

জাগালোর সাফল্যে ঢাকা পড়েছিল হোয়াও সালদানহার হতাশা৷ বিজয়ানন্দে চাপা পড়েছিল সামরিক শাসন আর শোষণ বিরোধী পুঞ্জীভূত ক্ষোভ৷ ব্রাজিলের মানুষ ফুটবলের আনন্দ পেলে সব ভুলে যায়৷ ২০১৪ বিশ্বকাপকে ঘিরেও বিক্ষোভ কম হয়নি ব্রাজিলে৷ দরিদ্র দেশে এত ব্যয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের বিরুদ্ধে অনেকেই৷

ব্রাজিলে আর সামরিক শাসন নেই৷ কিন্তু ১৯৭০ বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল দলের খেলোয়াড় টোস্টাও মনে করেন এখনকার গণতান্ত্রিক সরকারও আফিমের মতো ব্যবহার করতে চান ফুটবলকে৷ এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘সর্বকালের অন্যতম সেরা একটি দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতায় আমি গর্বিত৷ কিন্তু ১৯৭০-এর দলকে যখন জনগণের আফিম হিসেবে বর্ণনা করা হয়, তখন খুব খারাপ লাগে৷ তবে শুধু স্বৈর শাসকের সময়ে নয়, গণতান্ত্রিক শাসকের সময়ও এমন হয়েছে৷ সারা বিশ্বেই হয়েছে৷ এখনো এমনই হচ্ছে৷''

এসিবি/জেডএইচ (এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য