বেশি দুধ পান প্রাণঘাতী হতে পারে
ব্রিটিশ মেডিকাল জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, বেশি দুধ পান করলে নারীদের হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা অস্টিওপেরোসিস-এর সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং পুরুষেরা হৃদরোগে মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়তে পারেন৷
চিকিৎকদের ভাষ্য
ভগ্ন ও দুর্বল স্বাস্থ্যের জন্য বরাবরই বেশি করে দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা৷ কিন্তু ব্রিটিশ মেডিকাল জার্নাল তাদের গবেষণায় দেখেছে ভিন্ন রূপ৷ এ বছরের অক্টোবরে একটি প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত দুধ স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়৷
ঝুঁকি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে অতিরিক্ত দুধ পান করলে অল্প বয়সে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷ এছাড়া নারীদের হাড় ভাঙা, হাড় দুর্বল হয়ে পড়া বা অস্টিওপেরোসিস-এর প্রবণতা বাড়ে৷
গবেষণা
সুইডিশ গবেষকদের একটি দল ৬১ হাজার নারীদের ওপর এই পরীক্ষা চালিয়েছিলেন, যাঁদের বয়স ৩৯ থেকে ৭৪ বছর৷ ২০ বছর ধরে চলেছিল এই গবেষণা৷ তার সঙ্গে ৪৫ হাজার পুরুষকে ১১ বছর ধরে পরীক্ষা করা হয়েছিল, যাঁদের বয়স ৪৫ থেকে ৭৯ বছর৷ এঁরা সবাই অতিরিক্ত দুধ খেতেন৷
পরীক্ষার ধরন
দুধ পানের পাশাপাশি তাঁদের ব্যাক্তিদের জীবনযাপনের ধরন নিয়েও পরীক্ষা করা হয়েছে৷ সেই ভিত্তিতে দেখা গেছে, অতিরিক্ত দুধ একটি ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করেছে৷ গবেষণা চলাকালীন (২০ বছর ধরে চলা) ২৫,৫০০ জন মারা গেছেন এবং ২২,০০০ জন হাড় ভেঙেছেন৷
কী পরিমাণ দুধ পানে ঝুঁকি
গবেষণায় দেখা যায়া, প্রতি ১,০০০ জনের মধ্যে ১৮০ জন দিনে তিন গ্লাসেরও বেশি দুধ পান করতেন৷ এঁরা ১০ বছরের মধ্যেই মারা যান৷ এছাড়া যে নারীরা দিনে দুই গ্লাস বা তার চেয়ে বেশি দুধ পান করেন, তাঁদের হাড়ের ক্ষয়রোগের আশঙ্কা যাঁরা দিনে এক গ্লাস দুধ পান করেন তাঁদের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি৷ পুরুষের ক্ষেত্রেও বেশি দুধ পানে প্রায় একই রকম আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেন গবেষকেরা৷
দুধের গুণাগুণ
দুধ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন বি-১২ সহ নানান পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ৷ ব্রিটেনের সরকারি স্বাস্থ্য পরামর্শে বলা হয়ে থাকে, প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে প্রায় ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয় এবং দুধ এই ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস৷
পরিমিত দুধ পান
নিয়মিত এবং পরিমিত দুধ পানে হাড়ের ক্ষয়রোগ বা অস্টিওপেরোসিস দূর হয় এবং স্তন ক্যানসার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে৷