1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদায় রূপসী বাংলা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১ সেপ্টেম্বর ২০১৪

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সোমবার দুপুরে বন্ধ করে দেয়া হলো ঐতিহ্যবাহী পাঁচতারা হোটেল ‘রূপসী বাংলা’৷ সংস্কার কাজের পর ২০১৬ সালে নতুন আঙ্গিকে এই হোটেল আবারো চালু হবে৷ তবে তখন এই হোটেলের নাম হবে ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল’৷

https://p.dw.com/p/1D4nk
রূপসী বাংলার নিজস্ব ওয়েবসাইটে ‘নোটিস' দিয়ে সংস্কার কাজ ছাড়া আর সব ধরণের সেবা বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে

হোটেলের মার্কেটিং ও কমিউনিকেশন্স বিভাগের প্রধান শহিদুস সাদিক জানান, ‘‘সোমবার দুপুরে সব অতিথিকে বিদায় দিয়ে ‘রূপসী বাংলা' বন্ধ করে দেয়া হয়৷ তিনি বলেন, রবিবার রাতে হোটেলে ৪২ জন দেশি-বিদেশি অতিথি ছিলেন৷ সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে তাঁরা বিদায় নিয়ে চলে যান৷''

তিনি জানান, সর্বশেষ বিদায় দেয়া হয় হোটেলে অবস্থানকারী মালয়েশিয়ার একটি অতিথি দলকে৷ রূপসী বাংলায় অনুষ্ঠিত মালয়েশিয়ান শিক্ষা মেলায় অংশ নিতে এই দলটি মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছিল৷ দলের সদস্যরা তিন দিন রূপসী বাংলায় অবস্থান করেন৷

রূপসী বাংলার নিজস্ব ওয়েবসাইটেও সংস্কারের কথা জানিয়ে একটি ‘নোটিস' দিয়ে সংস্কার কাজ ছাড়া হোটেলের আর সব ধরণের সেবা বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷

দেড় বছর সংস্কার কাজ শেষে ২০১৬ সালে নতুন আঙ্গিকে আবারো চালু হবে বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এই হোটেল৷ তখন এর নাম হবে ‘হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল'৷ সাদিক বলেন, ‘‘সংস্কারের পরও হোটেলের মালিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে যাবে৷ থাকবেন হোটেলের বর্তমান কর্মীরাও৷ তবে আন্তর্জাতিক হোটেল চেইন ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপ' সংস্কার কাজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়েছে৷''

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসসহ নানা ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত পাঁচ দশকের পুরনো এ হোটেলটির ব্যবস্থাপনায় ফেরার জন্য ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে ‘ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল গ্রুপ'৷ গ্রুপটি ১৯৬৬ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত এই হোটেলের ব্যবস্থাপনায় ছিল৷ তখন হোটেলটির নাম ছিল ‘হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল'৷ ইন্টারকন্টিনেন্টালের পর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব এসেছিল আন্তর্জাতিক হোটেল সেবাদানকারী আরেক প্রতিষ্ঠান ‘শেরাটন'৷ তখন নাম হয় হোটেল শেরাটন৷ এরপর ২০১১ সালের এপ্রিলে শেরাটন চলে গেলে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড হোটেলটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেয়৷ আর শেরাটন হয়ে যায় ‘রূপসী বাংলা'৷

ঢাকায় ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ হোটেলটির ১৯৮১ সালে সম্প্রসারণ এবং বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু সংস্কার হলেও আন্তর্জাতিক ‘ফাইভ স্টার' মানে তোলার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্বের হোটেল পরিচালনা কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে তাগাদা আসছিল৷

অতিথিদের জন্য এই হোটেলে বর্তমানে ২৭২টি বিভিন্ন ধরনের কক্ষ রয়েছে, যার প্রতিটির গড় আয়তন ২৪ থেকে ২৬ বর্গমিটার৷ কর্তৃপক্ষ বলছে, ফাইভ স্টার হোটেলের আন্তর্জাতিক মান রক্ষার জন্য সংস্কারের মাধ্যমে কক্ষগুলো বড় করা হবে৷ ফলে কক্ষসংখ্যা কমে হবে ২৩০টি৷ এছাড়া আসবাব, সুইমিং পুল, জিমনেশিয়ামের আধুনিকায়নসহ অন্যান্য সেবাও যুক্ত করা হবে৷ এই সংস্কার কাজে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা, যা ব্যাংক লোনের মাধ্যমে জোগাড় করা হবে৷

এদিকে সংস্কার চলাকালীন রূপসী বাংলা হোটেলের পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছে হোটেলটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ৷ রবিবার বিকেলে হোটেল ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে৷ বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব খুরশিদ আলম চৌধুরীর উপস্থিতিতে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷

চুক্তির আওতায় হোটেলটির ৫৩৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ৩০০ জনকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি), ১১৬ জনকে সংস্কার প্রকল্পে এবং ৭০ জনকে শাহজালাল বিমানবন্দরের বলাকা লাউঞ্জে যুক্ত করা হবে৷ বাকি ৫২ জনকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইন্টারকন্টিনেন্টাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য