1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলাকে ওপরে রাখতে গুগলে ৪ লাখ শব্দ

সমীর কুমার দে , ঢাকা২৬ মার্চ ২০১৫

‘‘একদিনে গুগলে যোগ হলো ৪ লাখ বাংলা শব্দ৷ আর কোন ভাষার এত শব্দ একদিনে যোগ হওয়ার নজির নেই৷এটা অনন্য রেকর্ড-'' ডয়চে ভেলেকে কথাগুলো বলছিলেন গুগল ডেভেলপার গ্রুপ বাংলার (জিডিজি) কমিউনিটি ম্যানেজার জাবেদ সুলতান পিয়াস৷

https://p.dw.com/p/1ExxB
Ekushey Buchmesse Bangladesch
ছবি: DW/Mustafiz Mamun

আগের রেকর্ডটা ৩ লাখ শব্দের ছিল জানিয়ে পিয়াস বলেন, ‘শুক্রবার গুগলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে৷ তবে আমরা ধারণা করছি, যে টার্গেট নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল তা সফল হয়েছে৷ বাংলাকে সব ক্ষেত্রে সবার ওপরে রাখতে আমরা রেকর্ড গড়ার যে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলাম তা সম্ভব হতে যাচ্ছে৷ গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে গুগলে বাংলা শব্দ যোগ করার কাজ শুরু হয়েছে৷ এই কর্মসূচি আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে৷'

জাবেদ সুলতান পিয়াস আরো বলেন, ‘‘১ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরুর সময় ২ লাখ শব্দ যোগ করার টার্গেট ঠিক করা হয়৷ কিছুদিনের মধ্যেই সেই টার্গেট পূর্ণ হয়ে যায়৷ ইতিমধ্যে আমরা ১৪ লাখ শব্দ যোগ করেছি৷ এর মধ্য থেকে নানা কারণে কিছু বাদ যাচ্ছে৷ তারপরও এটা ১০ লাখের বেশী হবে৷ এমন পরিস্থিতিতে আমরা এক দিনে ৪ লাখ শব্দ যোগ করার উদ্যোগ নেই৷ স্থির করি, ২৬ মার্চে তা করা হবে৷ বিশেষ দিনে একটা অনন্য রেকর্ড হয়ে থাকবে৷ এর আগের রেকর্ডটি ছিল একদিনে তিন লাখ শব্দ যুক্ত করার৷ সেটা হংকংয়ের ক্যান্টনিস ভাষার ক্ষেত্রে৷এখন আমরা তাদের সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করলাম৷ এখন স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষা৷''

সারা দেশে মোট ৮১টি জায়গায় বাংলা শব্দভাণ্ডার যুক্ত করতে কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবীরা৷ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম, বিসিসির যুগ্ম সচিব হারুনর রশিদ, গুগল ডেভেলপার গ্রুপ বাংলা (জিডিজি বাংলা) বাংলার প্রধান উপদেষ্টা মুনির হাসান ও কমিউনিটি ম্যানেজার জাবেদ সুলতান পিয়াস৷ গুগল ডেভেলপার গ্রুপ বাংলা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উদ্যোগে এই রেকর্ড গড়ার কাজ শুরু হয়৷ এই প্রক্রিয়া সফল হলে গুগল অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় ৯০টি ভাষায় বাংলাকে ছড়িয়ে দেয়া যাবে৷

জাবেদ সুলতান পিয়াস আরো জানান, ‘‘সারা দেশে ৮১টি জায়গায় বাংলা শব্দভাণ্ডার যুক্ত করতে সরাসরি কাজ করেছেন অন্তত ১০ হাজার মানুষ৷ সারা দেশ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি৷ এই ইভেন্টগুলো আয়োজনে কাজ করেছে আমাদের প্রায় এক হাজার স্বেচ্ছাসেবী৷ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শ'র বেশি ছাত্রছাত্রী অনুবাদের কাজ করেছেন৷ এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও শহীদ মিনারে গুগল ট্রান্সলেশনের কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা৷ বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে ১৫০টি অনুষ্ঠান হয়েছে৷''

স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ এই কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘‘কেউ এক হাজার শব্দ যোগ করলেই তাকে ইলেকট্রনিক সার্টিফিকেট দেয়া হবে৷ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ই-মেইলে এই সার্টিফিকেট পৌঁছে যাবে৷'' আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে মধ্যে যিনি সবচেয়ে বেশি শব্দ যোগ করবেন তাকে সিঙ্গাপুরে গুগল কার্যালয় দেখতে পাঠানো হবে৷''

বাংলা ভাষায় বর্তমানে গুগলে দেড় লাখের মতো শব্দ রয়েছে৷ আঞ্চলিক শব্দ ২০/২৫ হাজারের বেশি নয়৷ তাহলে এত শব্দ কিভাবে আসছে? এমন প্রশ্নের জবাবে জাবেদ সুলতান পিয়াস বলেন, ‘‘একটি শব্দ ১০০ জনও দিতে পারেন৷ শব্দ দিলেই কিন্তু গুগল নিয়ে নেবে না৷ এটি যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ রয়েছে৷ অনেকে ভুল শব্দও দিয়ে দেন৷ যে শব্দটি সবচেয়ে বেশি মানুষ দেবেন সেই শব্দটিই গুগল নেবে৷ এতে ভুল শব্দ যোগ হওয়ার সুযোগ কম৷''

গুগলে বাংলা শব্দ যোগ করে লাভ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান হাকিম আরিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গুগল অনুবাদে আমরা আমাদের ভাষাকে যত বেশি সমৃদ্ধ করতে পারব তত বেশি লাভ৷ বর্তমানে বাংলা অনুবাদগুলো অনেক দুর্বল অবস্থায় আছে৷ নতুন নতুন শব্দ যোগ করলে তা আরও শক্তিশালী ও অর্থবহ হবে৷ ইংরেজি থেকে বাংলা বা বাংলা থেকে ইংরেজি- দুই ভাষাতেই অনুবাদ করে তা প্রয়োজন অনুসারে কাজে লাগানো যাবে৷ পরিকল্পনাটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে সবারই লাভ৷ অনুবাদ ডিজিটাল পদ্ধতিতেই করা যাবে৷ সময়ও বাঁচবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য