বড়দিনে বার্লিনে আসার দশটা কারণ
বার্লিন এক প্রাণোচ্ছল শহর; এখানে না আছে দিন, না আছে রাত৷ বিশ্ব বার্লিনকে জানে এক কোলাহলমুখর, কর্মব্যস্ত মহানগরী হিসেবে৷ কিন্তু বড়দিন এলে বার্লিন যেন কোনো জাদুতে এক মায়াময় শহর হয়ে ওঠে৷
স্প্যানডাও-তে পুরনো বার্লিন
বার্লিনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বড়দিনের বাজারগুলোর মধ্যে পড়বে স্পানডাও-এর প্রাচীন অংশে আয়োজিত প্রথাগত ক্রিসমাস মার্কেটটি৷ প্রায় আড়াইশো দোকানি চারটি মহাদেশের খাদ্য ও সামগ্রী বিক্রয় করে থাকেন স্পানডাও-এর ঐতিহাসিক রাজপথের ধারে৷ এখানে সব কিছু পাওয়া যায়: স্ক্যান্ডিনেভিয়ার আগুনে সেঁকা স্যালমন মাছ থেকে শুরু করে ক্রিসমাস ট্রি সাজানোর ইউক্রেনীয় অলংকরণ৷ অবশ্যই ‘গ্লু ওয়াইন’ বা মশলাদার গরম সুরা বাদ থাকে না৷
শার্লটেনবুর্গ প্রাসাদে রাজকীয় পরিবেশ
ব্যারোক স্থাপত্যের প্রাসাদটির সামনেই বড়দিনের বাজার৷ সেখানে বিক্রি হয় উচ্চমানের কাঠের আসবাব ও খেলনা, যেমন দোলনা অথবা নাগরদোলা৷
পশ্চিম বার্লিনে বড়দিনের আগমন
কাইজার উইলহেল্ম মেমোরিয়াল চার্চের সামনে বড়দিনের বাজার – কিন্তু তার ঠিক উল্টো দিকেই ‘সিটি ওয়েস্ট’ নামধারী এক সুবিশাল শপিং সেন্টার, যেখানে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ ছাড়া ‘বিকিনি বার্লিন’ নামধারী এক অত্যাধুনিক ‘ফ্যাশন হাউস’ আছে৷
ঝকমকে কুরফ্যুর্স্টেনডাম
পশ্চিম বার্লিনের এই মুখ্য অ্যাভিনিউটিকে লোকে ভালোবেসে ডাকে ‘কু-ডাম’৷ কু-ডামের গাছগুলো পরীদের আলোকসজ্জায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে৷ পথচারীদের স্বাগত জানায় বার্লিনের প্রতীক ‘বাডি বেয়ার’ এবং রেইনডিয়ার-এ চড়া স্যান্টা ক্লজের অতিকায় সব ডিসপ্লে৷
চ্যান্সেলরের জন্য তিনটি ক্রিসমাস ট্রি
বড়দিনে বসবার ঘরে ক্রিসমাস ট্রি রাখা এবং সাজানোটা একটি বহু পুরনো জার্মান প্রথা৷ খোদ জার্মান চ্যান্সেলরও সে প্রথার বহির্ভূত নন৷ বড়দিনের এক মাস আগে থেকে একটি ১৫ মিটার উচ্চতার আলোকোজ্জ্বল ক্রিসমাস ট্রি শোভা পায় চ্যান্সেলরের অফিসের সামনে৷ অভিসভবনের ভিতরে থাকে আরো দু’টি ক্রিসমাস ট্রি৷
‘উন্টার ডেন লিন্ডেন’
বার্লিনের দ্বিতীয় প্রখ্যাততম রাজপথটির আলোকসজ্জাও কিছু কম যায় না: ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণ থেকে হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয় অবধি ২০০টি লেবুগাছকে আলোকিত করতে ৬০ কিলোমিটার ‘ফেয়ারি লাইটস’, মানে টুনি বালব লাগে৷ এই আলোকসজ্জা থাকে ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত৷
তারার আলো নয়, আলোর তারা
সন্ধ্যা হবার পর সোনি সেন্টার থেকে পটসডামার প্লাৎস-এর দিকে যেতে হলে চোখে পড়বে আলোর তারা৷ তবে বড়দিনের সময় তা-তে আরো এক লাখ আলো যুক্ত হয়: স্বর্ণময় থেকে ঝলকানো নীল৷
‘জনদার্মেনমার্ক্ট’-এ ক্রিসমাস
এই ‘পুলিশবাজারের’ ক্রিসমাস মার্কেটটি খুবই ঐতিহ্যবাহী৷ দু’টি ক্যাথিড্রাল এবং একটি ব্যারোক স্থাপত্যের কনসার্ট হলের কাছে আয়োজিত এই বড়দিনের বাজারে নানা ধরনের খাবার-দাবার ও কুটিরশিল্প ছাড়া একটি স্টেজ শো’রও ব্যবস্থা থাকে৷
আলেক্সান্ডারপ্লাৎস-এর মেলা
দুর্ধর্ষ মজা আর রোমহর্ষক কাণ্ডকারখানার জন্য ‘আলেক্স’-এর টিভি টাওয়ারের কাছে বড়দিনের বাজারটিতে যেতে হবে৷ এখানে প্রধানত তরুণ জনতা আসে আইস স্কেটিং, নাগরদোলা, ব়্যাফল ইত্যাদির আকর্ষণে৷ অথবা ৬০ মিটার উঁচু ফেরিস হুইলটিতে চড়ে শহরের দৃশ্য দেখা যেতে পারে৷
ক্যোপেনিক-এ ক্রিসমাস ক্যারল
২০০৩ সাল থেকে এই প্রথা শুরু হয়েছে: সে’বছর প্রায় ৯০ জন মানুষ ইউনিয়ন বার্লিন ফুটবল ক্লাবের স্টেডিয়ামে সম্মিলিত হয়ে বড়দিনের গানে গলা মেলান৷ ২০১৩ সালে ক্যোপেনিক-এর স্টেডিয়ামে সমবেত হয়েছিলেন ২৭ হাজারের বেশি ক্যারল গায়ক৷ এ বছরের ২৩শে ডিসেম্বরও হাজার হাজার মানুষ ক্যারল গাইতে এই স্টেডিয়ামে আসবেন, বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷