1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বস্তিতে ভারতীয় ভোটাররা

শীর্ষ বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা২৫ এপ্রিল ২০১৪

ভারতের চলতি সাধারণ নির্বাচনে এবার আরও বেশি প্রযুক্তি নির্ভর হয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ আগামী দিনেও প্রযুক্তির এই ব্যবহার আরও বাড়বে বই কমবে না৷

https://p.dw.com/p/1Bnw9
Wahl in Indien ARCHIVBILD 2004
ছবি: picture-alliance/dpa

এবার ভারতে লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে ইন্টারনেটের সার্চ ইঞ্জিন খ্যাত গুগল ইনকর্পোরেটেড সংস্থা ভারতের নির্বাচন কমিশনকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিল৷ প্রস্তাবটি হলো, ভারতীয় ভোটারদের তথ্যের অধিকার সুনিশ্চিত করতে, বাণিজ্যিক চুক্তির ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের জন্য ইন্টারনেট নির্ভর এক তথ্যভাণ্ডার তথা অনুসন্ধান ব্যবস্থা বানিয়ে দেবে গুগল৷ প্রত্যেক ভোটার যার সাহায্যে, ভোটার তালিকায় নাম আছে কিনা, তা খুঁজে দেখা থেকে শুরু করে এলাকার কোন ভোটকেন্দ্রে তিনি ভোট দিতে যাবেন, রাস্তা যদি না জানা থাকে, তা হলে কীভাবে সেই কেন্দ্রে পৌঁছাবেন, সব জেনে নিতে পারবেন৷

ভারতের একটি আধা সরকারি ওয়েব সুরক্ষা নজরদারি সংস্থা গুগলের এই প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি তোলে৷ যদিও মেক্সিকো বা ফিলিপাইন্সের মতো দেশের সরকারের সঙ্গে গুগল যৌথভাবে এই ধরনের নির্বাচনি তথ্যভাণ্ডার এবং খোঁজ-ব্যবস্থা এর আগে চালু করেছে, কিন্তু ভারত সংক্রান্ত তথ্য গুগলের হাত থেকে অ্যামেরিকার আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার হাতে পাচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে বলে জানায় ইন্ডিয়া ইনফোসেক কনসর্টিয়াম নামে ওই সংস্থা৷ কিন্তু আরও যে কারণে ভারতীয় নির্বাচন কমিশন গুগলের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে, ভারতে ভোটার সংক্রান্ত তথ্য এক জায়গায় সংগৃহিত রাখা এবং দরকারে তা খুঁজে পাওয়ার যে চলতি ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে এখন আছে, তার বিশেষ কোনো উন্নতি ঘটাতে পারবে না গুগল৷

Indien Wahlen Wahlmaschine Archiv 2009
২০০৯ সালের সেই মান্ধাতা আমলের ভোটিং মেশিনছবি: picture-alliance/dpa

এবং এটা ঘটনা যে ভারতের শহরগুলিতে তো বটেই, শহরতলী, এমনকি গ্রামেও প্রতিদিন আরও বেশি লোক ইন্টারনেটের ব্যবহারে অভ্যস্ত হচ্ছেন এবং নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে ভোট সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে নিচ্ছেন৷ বিশেষ করে এই লোকসভা ভোটের আগে অসংখ্য ভোটার ওয়েবসাইট থেকেই ভোটার তালিকা এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করে নিয়েছেন৷ সেখানেই শেষ নয়, ভোটের দিনের নজরদারির জন্যে দেশজুড়ে যে ক্যামেরা নজরদারি ব্যবস্থা চালু করেছিল নির্বাচন কমিশন, এবারের লোকসভা ভোটে সেই ব্যবস্থা সম্পূর্ণ হয়েছে বলা যায়৷ এবার দেশের সবকটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ক্যামেরা সুরক্ষা বহাল রাখার চেষ্টা করেছে কমিশন৷

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ এবং ওয়্যারলেস ইন্টারনেট পরিষেবার সুযোগ নিয়ে ভোটকেন্দ্রের সেই নজরদারিকে সরাসরি নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক, জেলা ও রাজ্যভিত্তিক এবং কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে৷ ফলে নির্বাচনি আধিকারিকরা নিজেদের দপ্তরে বসেই, কোথায় কী ঘটছে, তার ওপর নজর রাখতে পারছেন৷ এমনকি ভারতের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিকেও এই ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে৷ আর আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্বে যাঁরা থাকেন, সেই জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদেরও এই নজরদারি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে প্রত্যেকে যেমন দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তেমন কোনো ঘটনার দায়ও না এড়াতে পারেন!

এবার যেমন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে অনলাইন ক্যামেরা নজরদারি ছাড়াও উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে ঘুরছে নির্বাচন কমিশনের মোবাইল নজরদার ভ্যান৷ তার ছাদে বসানো ওয়েব-ক্যামেরা সরাসরি নজর রাখছে ভোটকেন্দ্রের বাইরে, ভোটারদের লাইনে এবং চার পাশের এলাকাগুলির উপরেও৷ কোথাও সন্দেহজনক কিছু দেখলেই তা সঙ্গেসঙ্গে এবং সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন, জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের দপ্তরে বসানো মনিটরিং সেলে৷ ফলে একদিকে যেমন অভ্রান্ত তথ্য-প্রমাণ থাকছে, তেমনই ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে দ্রুত৷

এই সঙ্গে আরও একটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য বিষয় নজরে পড়ছে৷ সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ, যাঁরা ভোট দিতে গিয়ে গন্ডগোল চান না বরং নির্বিঘ্নে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেই যাঁরা খুশি, তাঁরা খুব আশ্বস্ত বোধ করছেন, নিরাপদ বোধ করছেন৷ বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গে যে ষষ্ঠ দফার ভোট হচ্ছে, সকাল থেকে বিপুল হারে ভোট পড়া দেখেই ভোটারদের সেই স্বস্তির কিছুটা আন্দাজ মিলছে৷ এদিন দুপুর একটার মধ্যে ৬২ শতাংশ ভোট পড়েছে রাজ্যে৷ সেটা অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে অত্যধিক গরমের কারণেও৷ তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে আবহাওয়া দপ্তর৷ তাপমাত্র ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই৷ যে কারণে আধুনিক সময়ের ভোটাররা অনেকেই ভাবছেন, এবার যদি অনলাইন ভোটিংয়ের ব্যবস্থাও চালু হয়ে যায় অদূর ভবিষ্যতে, প্রযুক্তিকে এতটাই ভরসা করতে শুরু করেছেন তাঁরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য