উত্তাল মিশর
২৭ জানুয়ারি ২০১৩আদালতের রায়ের খবর বেরনোর পর দণ্ডপ্রাপ্তদের আত্মীয়স্বজন শনিবার পোর্ট সইদ'এর যে কারাগারে আসামিদের থাকার কথা, সেই কারাগারটি আক্রমণ করে, এছাড়া দু'টি পুলিশ ফাঁড়ির উপর হামলা চালায়৷ জনতার তরফ থেকে পুলিশের দিকে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিও চালানো হয়েছে, বলে প্রকাশ৷ পোর্ট সইদ'এ শনিবারের দাঙ্গায় নিহত ৩১ জনের মধ্যে অন্তত দু'জন পুলিশকর্মী৷ ২৪টি দেহ এযাবৎ সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷
নিহতদের লাশ নিয়ে শবযাত্রার পরিকল্পনা আগেই করা হয়েছিল৷ রবিবার সেটা রূপ পায় সরকারবিরোধী প্রতিবাদের৷ কফিন কাঁধে নিয়ে শবযাত্রীরা স্লোগান দেন: ‘‘জনতা এই সরকারের পতন চায়৷'' অতঃপর কিছু গুলির আওয়াজ শোনা যাবার পর পুলিশ শবযাত্রা রোখার জন্য কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে৷
আল-জাজিরা টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে, কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া উঠছে এবং বিক্ষোভকারীরা কফিন ফেলে পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়তে শুরু করেছে৷ তার কিছু পরেই পরিস্থিতি আবার শান্ত হয় এবং শবযাত্রা আবার চলতে থাকে৷ শনিবার থেকেই পোর্ট সইদ'এর সরকারি ভবনগুলোর কাছে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
২০১২ সালে পোর্ট সইদ'এর স্টেডিয়ামে রায়টের পিছনে হয় পুলিশ নয়তো মোবারক সমর্থকদের হাত ছিল, বলে বহু মিশরীর বিশ্বাস৷ কাজেই সেই দাঙ্গার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের রায়ই তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল৷ পোর্ট সইদ'এর বাসিন্দাদের চোখে ঘটনাটা ছিল একরকম৷ অন্যদিকে কায়রোর ফুটবল ফ্যানরা হুমকি দিয়েছিল, অপরাধীদের ন্যায্য শাস্তি না হলে তারা চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করবে৷
মিশরের অবস্থা নিয়ে বহির্বিশ্বও উদ্বিগ্ন৷ কায়রোর তাহরির স্কোয়ারের কাছে অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসগুলি তাদের জনসেবা বন্ধ করেছে৷ অপরদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশনীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাশটন বলেছেন, তিনি সহিংসতা সম্পর্কে ‘‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন''৷ অ্যাশটন মিশরীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি শান্তি-শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং সব পক্ষের প্রতি সংযত হওয়ার আবেদন করেছেন৷
পোর্ট সইদ ফুটবল দাঙ্গার বাকি ৫২ অভিযুক্তের রায় বেরবে ৯ই মার্চ৷ অভিযুক্তদের মধ্যে ন'জন পুলিশ কর্মকর্তাও আছেন৷
এসি/এআই (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)