1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতীক চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা

শীর্ষ বন্দোপাধ্যায়, কলকাতা২৭ জানুয়ারি ২০১৪

সরকারি প্রতীক হিসেবে অশোক স্তম্ভ আছে৷ কিন্তু তারপরও পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী দুই রাজ্য বিহার এবং ওড়িশার নিজস্ব প্রতীক রয়েছে৷ তাই এবার, পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব একটি প্রতীক চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

https://p.dw.com/p/1Axb0
Mamata Banerjee Ministerpräsidentin West Bengal
ছবি: Prabhakar Mani Tewari

ওড়িশার প্রতীক কোনারক মন্দিরের বিখ্যাত রথের চাকা৷ বিহারের প্রতীক বোধগয়ার বোধিবৃক্ষ৷ ভারতের বেশ কিছু সরকারি সংস্থারও নিজস্ব প্রতীক চিহ্ন রয়েছে৷ যেমন সিবিআই বা সুপ্রিম কোর্টের৷ কলকাতা শহরের পুরসভারও আলাদা প্রতীক আছে, যা ব্যবহার করা হয় সমস্ত পুর নথিপত্রে৷ প্রতীক রয়েছে রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগমের৷ সেখানে পশ্চিমবঙ্গের কোনো সরকারি প্রতীক নেই৷ আগে কোনো সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগী না হলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, এবার পশ্চিমবঙ্গেরও নিজস্ব একটা প্রতীক হোক, যেমন অন্যান্য অনেক রাজ্যেরই আছে৷ এমন এক প্রতীক তিনি চান, যে প্রতীকচিহ্ন দিয়ে সারা দেশে এবং বিশ্বের দরবারেও এই রাজ্যকে আলাদাভাবে চিনে নেওয়া যাবে৷

নিয়ম অনুযায়ী, ভারতের কোনো রাজ্য তার নিজস্ব কোনো প্রতীক সরকারি নথিপত্রে ব্যবহার করতে চাইলে আগে তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমতি নিতে হয়৷ নিজস্ব প্রতীক ব্যবহারের স্বাধীনতা এবং নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত বিধিনিষেধও রয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেইসব নিয়মকানুনও বলবৎ হবে৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে সেই আবেদন ইতোমধ্যেই করা হয়েছে কেন্দ্রের কাছে৷ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কমিটি গড়েছেন, যার সদস্যরা খতিয়ে দেখছেন এই রাজ্যের কোন বস্তুটি প্রতীক হিসেবে যোগ্যতম হবে৷

সাধারণভাবে কোনো স্থাপত্য বা কোনও প্রাণী প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়৷ কিন্তু ব্রিটিশ আমলের কোনো স্থাপত্য, তা সে যতই বিখ্যাত হোক না কেন, এ রাজ্যের প্রতীক হোক, সেটা অনেকেই চাইছেন না৷ যেমন হাওড়া ব্রিজ বা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কিংবা অকটরলোনি মনুমেন্ট৷ প্রতিটি স্থাপত্যই কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বহু বছর ধরে সম্পর্কিত৷ কিন্তু এদের কোনোটিকে রাজ্যের সরকারি অভিজ্ঞান হিসেবে মানতে অনেকেরই আপত্তি আছে৷

Tiger
পাল্লা ভারী সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দিকেছবি: MEHR

বরং পাল্লা ভারী সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দিকে৷ আবার অনেকেই বলছেন যে, একদিকে দার্জিলিং-এর পাহাড় আর অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরের ঢেউ, সারা ভারতে পশ্চিমবঙ্গের এই যে অনন্য প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট, সেটাকে মাথায় রেখেই প্রতীকের নকশা হওয়া উচিত৷ আবার কেউ মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরা পড়বে, এমন কোনও নকশা-শৈলী বেছে নেওয়া উচিত প্রতীক তৈরির ক্ষেত্রে৷ এবং পটচিত্র থেকে শুরু করে এত বহু রকমের এবং বিচিত্র শৈলীর নকশা আছে এই বাংলায় যে বরং অসুবিধেই হবে উপযুক্ত নকশাটি তার মধ্যে থেকে বেছে নিতে৷

চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন বলছেন, সেক্ষেত্রে প্রাচীন ইতিহাস ও তার স্মারকগুলির দিকে ঝুঁকতে হবে৷ এ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ টেনেছেন জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ব প্রতীকের৷ সেখানে যেভাবে ঐতিহাসিক কোট অফ আর্মসগুলিকেই সরকারি প্রতীকে বদলে দেওয়া হয়েছে, বাংলার ক্ষেত্রে তা হয়ত সম্ভব হবে না, যেহেতু বাংলায় ওই ধরনের রাজকীয় অভিজ্ঞান কিছু ছিল না৷ কিন্তু প্রাচীন মুদ্রা বা লিপি অথবা প্রত্নসম্পদ পশ্চিমবঙ্গের প্রতীক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হতেই পারে৷

অন্যদিকে অনেকেই এই সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন৷ তাঁদের বক্তব্য, প্রতীক নিয়ে অযথা মাথা না ঘামিয়ে রাজ্যের ভাবমূর্তি কীভাবে উজ্জ্বল করা যায়, সেটা বরং ভেবে দেখা উচিত সরকারের৷ তবে এমন লোকের সংখ্যাই বেশি যাঁরা অত্যন্ত উৎসাহিত রাজ্যের নিজস্ব প্রতীক হচ্ছে বলে৷ কার্যত তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন যে, রাজ্যের সমস্যা থাকতেই পারে৷ সেই সব সমস্যার সমাধানও অবশ্যই দরকার৷ কিন্তু রাজ্যের নিজস্ব প্রতীক তৈরির সিদ্ধান্ত তার উপর নির্ভর করবে কেন! অন্যভাবে দেখতে গেলে, সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যবাসীর এই মনোভাবকেই কাজে রূপায়িত করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য