1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিরপেক্ষ নই, আমি একটি ফুলের পক্ষে...

আশীষ চক্রবর্ত্তী২৯ অক্টোবর ২০১৪

আপনি একটি জুতার পক্ষে? নাকি গোলাম আযমের জানাজায় অংশ নেয়া মানুষদের পক্ষে? নাকি নিরপেক্ষ? কিছু কিছু ক্ষেত্রে ‘নিরপেক্ষতা' শব্দটিকে দুর্বল, সুবিধাবাদী কিংবা ভণ্ড লোকের নিরাপদ আশ্রয় বলে মনে করি৷ আমি আসলে একটি ফুলের পক্ষে!

https://p.dw.com/p/1DdLC
Unabhängikeitsfeier in Bangladesh
ছবি: AP

সত্যি আর মিথ্যা, ন্যায় আর অন্যায় – এ সবের মাঝখানে রাখার মতো কোনো ‘নিরপেক্ষ' শব্দ কি অভিধানে আছে? নেই৷ বাস্তবে চোর আর সাধুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে দু'পক্ষের মন রক্ষা করার মতো কিছু বলে দিলেই আপনি নিরপেক্ষ? সেরকম নিরপেক্ষতায় হাততালি হয়ত পাওয়া যায় অনেক, খালি পকেট ভরে অনেকের, কুড়ে ঘর রাতারাতি অট্টালিকা হয় – তারপরও সত্য সত্যই থাকে, আর মিথ্যা থাকে মিথ্যা৷

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীন হয়েছে এটা ঐতিহাসিক সত্যি৷ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সত্যি৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের গণহত্যা, গণধর্ষণসহ অনেক রকমের মানবতাবিরোধী অপরাধ সত্যি৷ এবং এটাও সত্যি যে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরে হলেও বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে৷ যু্দ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রায় আসছে৷ আজ মতিউর রহমান নিজামীর রায়টাও হয়েতা আসবে৷

Ghulam Azam sent to jail
‘একদিকে গোলাম আযমের জানাজায় অনেক মানুষ, আরেক দিকে মাহমুদুল হক মুন্সী ও তাঁর সেই জুতো’ছবি: Harun Ur Rashid Swapan

রায় কী হবে, রায়ে নিজামীর কী শাস্তি হবে – এসব নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই৷ তাঁর মৃত্যুদণ্ড হলেই জামায়াতের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা হয়ত প্রতিবাদের নামে যা-খুশি-তাই করার চেষ্টা করবেন৷ অতীতে তা-ই হয়েছে৷ পুলিশসহ অনেক মানুষ মরেছে, অনেক ঘর-বাড়ি-মন্দিরও পুড়েছে৷ সরকার আগের তুলনায় কঠোর না হলে এবারও হয়ত হবে৷ না হলেই অবশ্য ভালো৷

জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমের শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড হয়নি৷ বয়সজনিত রোগে ৯০ বছরের কারাদণ্ডের ৮৯ বছরই বাকি রেখে মারা যাওয়ায় সরকারের কাছ থেকে তিনি বরং ‘বিশেষ মর্যাদা' পেয়েছেন৷ জানাজা হয়েছে বায়তুল মোকাররমে৷ জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মী-সমর্থক যোগ দিয়েছেন সেই জানাজায়৷

Deutsche Welle DW Arun Chowdhury
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের সম্পাদকছবি: DW/P. Henriksen

জামায়াত এবং তার নানা স্তরের সমর্থকরা জানাজায় মানুষের ঢলকে গোলাম আযমের ‘জণপ্রিয়তার বল' হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন৷ তারা সে চেষ্টা করবেন, এটাই স্বাভাবিক৷ তবে মুদ্রার উল্টো পিঠটাও একটু দেখা গেছে৷ দেখিয়েছেন মাহমুদুল হক মুন্সী৷ গোলাম আযমের কফিন লক্ষ্য করে তিনি জুতো ছুড়ে মেরেছেন৷ একদিকে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর সরকারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় যু্দ্ধাপরাধের প্রমাণিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাজাপ্রাপ্ত গোলাম আযমের জানাজায় অনেক মানুষ, আরেক দিকে একজন মাহমুদুল হক মুন্সী ও ঘৃণাভরে ছুড়ে মারা তাঁর সেই জুতো৷ কোনটি বড়? আপনি কোন পক্ষে? নাকি আপনি নিরপেক্ষ?

আমি সবসময়ই আসলে একটি ফুলের পক্ষে৷ আমরা অনেকে এখনো, ‘‘...একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি৷'' ফুলটির নাম বাংলাদেশ৷ একাত্তরে এই ফুলটিকে বাঁচানোর জন্যই যুদ্ধ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য