নিউ ইয়র্ক স্কাইলাইনে হাঁটার অভিজ্ঞতা
এককালে ম্যানহ্যাটান এলাকায় যেখানে এলিভেটেড রেল লাইন ছিল, সেখানে এখন সুন্দর মনোরম এক পার্ক৷ পার্কটি এখন জনসাধারণের জন্য পুরোপুরি খুলে দেওয়া হয়েছে৷ তার মধ্যে আছে একটা হলিউডি গন্ধও৷
উদ্বোধনী প্যারেড
থার্টিয়েথ থেকে থার্টিফোর্থ স্ট্রিটের মাঝের অংশের উদ্বোধনের মাধ্যমে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ রেল-ট্র্যাকটিকে পার্কে রূপান্তরিত করার কাজ শেষ হলো৷ এর জন্য বেশ কয়েক কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে৷ রবিবার উদ্বোধনের সময় শহরবাসী ও পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে৷
উৎসবের কারণ আছে বৈকি!
উদ্বোধনী উৎসবে উপস্থিত ছিলেন হলিউড তারকা এডওয়ার্ড নর্টন, যিনি অনেক বছর ধরে এই রেলপথ রূপান্তরের উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এর আগে আমি এমন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি, যাতে এত মানুষ গা ভাসিয়েছেন৷’’ আগে জায়গাটা কেমন দেখতে ছিল, আজ তা ভাবাই যায় না৷ কথাটা সত্যি ঠিক৷
মাটি থেকে ৯ মিটার উপরে
পরিত্যক্ত এই যান্ত্রিক খাঁচায় আজ সবুজের সম্ভার৷ ১৯৩৪ সালে এই এলিভেটেড ট্র্যাক তৈরি হয়েছিলো৷ ম্যানহ্যাটানের পশ্চিম দিকে কারখানা ও গুদামগুলির উপরের তলায় মালপত্র পরিবহনই ছিল এর উদ্দেশ্য৷ তারপর বড় বড় ট্রাকে করে মাল নিয়ে যাওয়া শুরু হয়৷ ১৯৮০ সালে শেষ ট্রেনটি চলেছিল৷
দুর্গন্ধময় এলাকার রূপান্তর
রেল ট্র্যাক সহ গোটা এলাকা মাংস কারখানার দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছিল৷ পথেঘাটে দেখা যেত অপরাধী ও যৌনকর্মীদের৷ সে সময় গোটা ট্র্যাকটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল৷ তারপর জোশুয়া ডেভিড ও রবার্ট হ্যামন্ড নামের দুই প্রতিবেশীর মাথায় একটা ভালো আইডিয়া আসে৷ তাঁরা চেয়েছিলেন নিউ ইয়র্কের ব্যস্ত মানুষের জন্য শহরের মাঝেই এক টুকরো সবুজের ছোঁয়া৷
আদর্শ প্রকল্প
তাঁরা রেল-ট্র্যাক ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন এবং বিখ্যাত মানুষদের কাছে সমর্থন চান৷ আসে বিশাল সাফল্য৷ পাঁচ বছর আগে উদ্বোধনের পর থেকে ‘নিউ ইয়র্ক হাই লাইন’ প্রকল্প গোটা বিশ্বে অনুকরণ করা হচ্ছে৷
পর্যটকদের আকর্ষণ
২০০৯ সালে ট্র্যাকের একটা অংশ উদ্বোধন করা হয়৷ ২০১১ সালে দ্বিতীয় অংশটি খুলে দেয়া হয়৷ তারপর থেকে প্রায় ২ কোটি মানুষ ফুলের বাগান ও ঘাসের বাহার দেখতে এসেছেন৷
প্যানোরামা ভিউ
জগিং, হাঁটাচলা বা আরাম করে বেঞ্চে বসা – যাই করুন না কেন, স্কাইলাইনের অপরূপ দৃশ্য বিনামূল্যেই পাওয়া যায়৷
পিকনিক
সেখানে বসে খাওয়াদাওয়ার মজাও আলাদা৷ তৃতীয় অংশের উদ্বোধনের সময় পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মীরা ও প্রতিবেশীরা সুন্দর রোদে বসে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করলেন৷ তার আগে মিউজিক ব্যান্ড সংগীত পরিবেশন করেছে৷