1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্মান্তরকরণ, পুনর্ধর্মান্তকরণ

২২ ডিসেম্বর ২০১৪

বিরোধী দলগুলির সাংসদদের বিক্ষোভে সংসদের অধিবেশন ভণ্ডুল৷ সরকারি মন্ত্রী অ-হিন্দুদের প্রকাশ্যে গাল দিচ্ছেন৷ বড়দিনে আলিগড়ের মতো মুসলিম অধ্যুষিত শহরে হিন্দুত্বে ধর্মান্তরকরণের পরিকল্পনা চলেছে৷

https://p.dw.com/p/1E7wj
Master.
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ফাইল ফটো)ছবি: Reuters

আলিগড় পুলিশের ডিআইজি মোহিত আগরওয়াল স্পষ্ট ঘোষণা করে দিয়েছেন, ২৫শে ডিসেম্বর ধর্মান্তরকরণ অথবা সেই ধরনের কোনো অনুষ্ঠান ঘটতে দেওয়া হবে না৷ পুলিশ সেদিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে এবং ধর্মান্তরকরণে লিপ্ত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে৷

অপরদিকে কট্টর হিন্দু গোষ্ঠী বজরং দল পথ বিক্ষোভের হুমকি দিয়েছে, যদি তাদের আলিগড়ে ধর্মান্তরকরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন না করতে দেওয়া হয়৷ ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে চারবারের সংসদসদস্য যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন যে, ঐ ধর্মান্তরকরণ অনুষ্ঠানে মুসলিমরা সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করবে৷ গত দশ বছর ধরে এই ধর্মান্তরকরণ ঘটে আসছে, এবং এটা আসলে ধর্মান্তরকরণ নয়, এটা ‘‘ঘর ওয়াপসি'' বা ‘‘ঘরে ফেরা'', বলেছেন আদিত্যনাথ৷

আদি বা স্বধর্মে প্রত্যাবর্তনের ধারণাটার মূলে রয়েছে হিন্দুদের বহুদিনের ধারণা ও অভিযোগ যে, অতীতের মুসলমান শাসকবর্গ তথা খ্রিষ্টান ধর্মযাজকরা দরিদ্র হিন্দুদের ভয় এবং প্রলোভন দেখিয়ে মুসলমান বা খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত করেছেন৷ তাই নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রতি সহানুভূতিশীল সরকারের আমলে স্বধর্মে প্রত্যাবর্তনের হুজুগ তোলা হয়েছে – যদিও ভারতের মুসলিম এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের চোখে এটা পাল্টা প্ররোচনা বলেই পরিগণিত হবে এবং হচ্ছে৷

প্ররোচনা স্রেফ গালিগালাজের রূপ ধারণ করে যখন সরকারি মন্ত্রী নিরঞ্জন জ্যোতি হিন্দুদের ‘‘রামের সন্তানের'' সঙ্গে তুলনা করে, অ-হিন্দুদের সম্পর্কে বস্তুত একটি গালি ব্যবহার করেন৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর মন্ত্রীর শব্দচয়নের সমালোচনা করলেও, তাঁকে মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত করতে অস্বীকার করেছেন৷ আরেক বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ সম্প্রতি মন্তব্য করেন যে, মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসে ছিল একজন দেশপ্রেমিক৷ পরে তিনি সেই মন্তব্য প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন৷

তবে উত্তর প্রদেশের আগ্রা শহরে ৫০টি মুসলিম পরিবারের হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরকরণের ঘটনাই সম্ভবত ধর্ম ও রাজনীতির অশুভ সংযোগের উপর আর্থ-সামাজিক নিষ্করুণ আলো ফেলেছে৷ বস্তির কাগজকুড়ুনেরা বিবিসিকে জানান যে, তাঁরা বিপিএল রেশন কার্ড পাবার আশায় ধর্মান্তরকরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন৷ ঠিক সেইভাবেই ১৯৮১ সালে দক্ষিণ ভারতের মাদুরাই শহরে একদল দলিত দুবাইতে কাজ পাবার আশায় মুসমানধর্ম গ্রহণ করেছিলেন৷

আশার কথা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রথমবার তাঁর দলের সাংসদদের ধর্মান্তরকরণের মতো বিতর্কিত প্রসঙ্গ ছেড়ে অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে নজর ফেরাতে বলেছেন৷

এসি/ডিজি (রয়টার্স, পিটিআই)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য