1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রশিক্ষণ যখন চাকরি

সাব্রিনা পাব্স্ট/এসি২৯ জুন ২০১৩

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক একটি দেশের শিক্ষা পদ্ধতি বা নীতি এক এক রকম৷ অথচ সারা ইউরোপেই আজ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর প্রয়োজন৷ পেশাগত প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে জার্মানির ‘‘ডুয়াল সিস্টেম’’ তাই একটা পন্থা হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/18yG4
ছবি: picture-alliance/dpa

ডুয়াল বা দ্বিবিধ প্রশিক্ষণ পদ্ধতিটা শুধু একা জার্মানিতেই নয়, অস্ট্রিয়া অথবা সুইজারল্যান্ডেও চালু৷ এর মূলমন্ত্র হলো স্কুলের পুঁথিগত শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে কলকারখানা অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে পেশাগত প্রশিক্ষণ দেওয়া৷ পূর্ব কিংবা দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলিতে শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক পাঠক্রমের মাধ্যমেই পেশাগত যোগ্যতা অর্জন করা যায়৷ ইইউ-এর অন্যান্য দেশে আবার গোটা প্রশিক্ষণটাই হয় কোনো একটি কলকারখানা কিংবা প্রতিষ্ঠানে৷ এর মুশকিল হলো, একটি প্রতিষ্ঠানে যা শেখা গেছে, তা অন্যান্য কর্মস্থানে কাজে লাগানোর মতো না-ও হতে পারে৷

সমগ্র ইউরোপীয় ইউনিয়ন জুড়ে যোগ্য কর্মী খোঁজার সময় সমস্যাটা এই দাঁড়ায় যে, কোনো দেশের পেশাগত প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থী কি শিখেছে, তা সার্টিফিকেট দেখে বোঝার উপায় নেই৷ সব দেশের প্রশিক্ষণ প্রণালীর মধ্যে তুলনা করার একটা পন্থা থাকা চাই৷ একমাত্র সেক্ষেত্রেই ইইউ-এর এক দেশের তরুণ-তরুণীরা ইইউ-এর বাকি সব দেশে কাজ করার সুযোগ পাবে৷

Symbolbild Berufsschüler
জার্মানিতে শিল্পসংস্থাগুলি ও সরকারের মধ্যে এ নিয়ে বহুদিন ধরেই সহযোগিতা চলে আসছেছবি: Fotolia/Robert Kneschke

কে কি চায়

শুধুমাত্র পুঁথিগত বিদ্যার আরেকটা মুশকিল হলো, নবনিযুক্ত তরুণ কর্মীদের পেশাগত প্রশিক্ষণের দায়িত্ব ও ব্যয়টা তাদের যে সংস্থা নিয়োগ করছে, তাকেই বহন করতে হয়৷ অধিকাংশ শিল্প ও বাণিজ্যসংস্থা চায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী, প্রয়োজনে সারা ইউরোপ থেকে৷ কিন্তু সেজন্য ইইউ-এর সব দেশে কিংবা অধিকাংশ দেশে শিক্ষানীতি এক হওয়া চাই৷ সে সিদ্ধান্তের ভারটা আবার একক দেশগুলির সরকারবর্গের হাতে৷ ইইউ শুধুমাত্র বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণের বিষয়সূচি কাছাকাছি আনার চেষ্টা করতে পারে, কিংবা কোনো পেশাগত ডিপ্লোমা কি সার্টিফিকেটের জন্য কি ধরনের পাঠক্রমের প্রয়োজন, তা নির্দেশ করতে পারে৷

জার্মানিতে শিল্পসংস্থাগুলি ও সরকারের মধ্যে এ নিয়ে বহুদিন ধরেই সহযোগিতা চলে আসছে৷ শিল্প – তথা বাণিজ্যসংস্থাগুলি নিজেরাই পেশাগত প্রশিক্ষণ দেয়, নিজেরাই ঠিক করে, একটি বিশেষ পেশায় কাজ করার জন্য কি কি জিনিস জানা ও করতে পারা উচিত এবং – সবচেয়ে বড় কথা – এক একটি পেশায় প্রতি বছর কত শিক্ষার্থী নেওয়া হবে, সেটাও শিল্পসংস্থাগুলি নিজেরাই নির্ধারণ করে৷ অর্থাৎ কোনো শিল্পে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর চাহিদা কমলে, শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও সেই অনুপাতে কমে যায় – যার অর্থ, শিল্পের চাহিদার সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের সংখ্যার একটা সামঞ্জস্য থাকে৷

শিক্ষানীতির কাঠামোগত দুর্বলতা

Deutsch-griechische Tagung über die Duale Berufsausbildung
‘ডুয়াল সিস্টেম’ এর উপর আলোচনা চলছেছবি: DW/P. Kouparanis

বলতে কি, ইউরোপের বহু সংকটপীড়িত দেশে যুব বেকারত্বের পরিমাণ এতটা বেড়ে যাওয়ার কারণই হলো, সেখানে ‘‘দ্বিবিধ প্রণালী'' নেই৷ স্কুল-কলেজের পাঠক্রম থেকেই যে কোনো পেশায় কাজ করার যোগ্যতা অর্জন করা যায় না৷ আবার অর্জন করলেও, সেই পেশায় বর্তমানে কর্মীর চাহিদা আছে কিনা, তা জানা যায় না৷ এটা হলো সংশ্লিষ্ট দেশগুলির শিক্ষানীতির একটা কাঠামোগত দুর্বলতা, যা অর্থনৈতিক সংকটের আগেও ছিল এবং এখনও আছে৷ কাজেই বিশেষজ্ঞদের অভিমত: পেশাগত প্রশিক্ষণের ব্যাপারটা শিল্পসংস্থাদের হাতে ছেড়ে না দিয়ে উপায় নেই৷

কিন্তু সংকটপীড়িত দেশগুলিতে শিল্পসংস্থাগুলি নিজেরাই এখন তাদের অস্তিত্ব বাঁচানো নিয়ে, যত কম পারা যায় কর্মী ছাঁটাই করা নিয়ে ব্যস্ত৷ তাদের পক্ষে এখন ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা ভেবে ভবিষ্যৎ কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, এমনকি তা নিয়ে চিন্তা করাও অসম্ভব৷ আর যে কোনো শিল্পে সদ্যাগতদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার খরচের দিকটা তো রয়েই যাচ্ছে৷ কাজেই এ সব দেশে এখন সরকারকেই অগ্রণী হয়ে জার্মানির ‘‘ডুয়াল সিস্টেম'' চালু করার কথা ভাবতে হবে, শিল্পসংস্থাদের সে ধরনের শিক্ষার্থী নিয়োগের জন্য প্রেরণা যোগাতে হবে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য