1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাসপাতালে শিশু চুরির চক্র

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২২ আগস্ট ২০১৪

নবজাতক চুরির ঘটনা নতুন নয় বাংলাদেশে৷ গত ছয় মাসে পাঁচটি শিশু চুরি হয়ে যাওয়ার পরও চোর চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেয়া হয়নি৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে না পারলে শিশু চুরির ঘটনা বন্ধ করা কঠিন৷

https://p.dw.com/p/1CzFE
Neugeborenenstation im Krankenhaus
ছবি: picture-alliance/dpa

গত বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে রাজধানী ঢাকার প্রধান সরকারি হাসপাতাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২১২ নম্বর লেবার ওয়ার্ড থেকে চুরি হয়ে যায় রুনা বেগমের দুটি নবজাতক জমজ শিশুর একটি৷ মোহাম্মদপুরের জহুরী মহল্লার বাসিন্দা রুনা বেগম (২৭) মঙ্গলবার ভোরে দুটি জমজ পুত্রের মা হন৷ কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়৷

সিসি ক্যামেরায় এই চুরির দৃশ্য ধরা পড়লেও, পুলিশ শুক্রবার পর্যন্ত চোরকে আটক বা নবজাতককে উদ্ধার করতে পারেনি৷ তাদের পরিবারের সদস্যরা এখন চুরি যাওয়া শিশুটির জন্য হাসপাতালেই অবস্থান করছেন৷

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে স্পষ্ট যে, একজন নারী শিশুটিকে নিয়ে গেছে৷ রুনার স্বামী কাওসার আহমেদ, যিনি নৈশ প্রহরীর কাজ করেন, অভিযোগ করেন যে এই চুরির সঙ্গে হাসপাতালের কতিপয় নিরপত্তা প্রহরী জড়িত৷ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তাঁরা সিসি ক্যামেরারর ফুটেজ পুলিশকে দিয়েছেন চোর আটক এবং শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য৷ অন্যদিকে পুলিশ জানায় যে, তারা অপরাধীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছেন৷ এছাড়া এই ঘটনার পর হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু ও নবজাতক চুরির ঘটনা আগেও ঘটেছে৷ গত ২৩শে এপ্রিল এই ওয়ার্ড থেকে আরো একটি শিশু চুরি হয়৷ ১৮ই মার্চ নাদিম নামের এক শিশুচোর হাতেনাতে ধরাও পড়ে৷ নাদিম পেশাদার শিশুচোর চক্রের সদস্য বলে জানায় পুলিশ৷ এর আগে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আরো দুটি শিশু চুরি হয় হাসপাতাল থেকে৷ ২০১০ সালেও হাসপাতালের ওই ওয়ার্ড থেকে একটি নবজাতক চুরি হয়৷ অথচ এ সব ঘটনার কার্যকর কোনো তদন্তই হয়নি এখনও পর্যন্ত৷ অতীতে চুরি হওয়া শিশু উদ্ধারের কোনো নজির নেই এই হাসপাতালে৷

অভিযোগ রয়েছে হাসপাতালে অস্থায়ী আয়াদের একটি অংশ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে শিশুচোর চক্রকে সহায়তা করে৷ তারা ওষুধ পাচারসহ নানা অপরাধের সঙ্গেও জড়িত৷ এই সব আয়ারা হাসপাতালের কোনো বৈধ কর্মচারী নন৷ ইউনিয়ন নেতাসহ হাসপাতালের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা তাদের হাসপাতালে কাজ করার সুযোগ দেন৷ তারা অর্থের বিনিময়ে রোগিদের সহায়তা করে৷ আবার প্রভাবশালীরা তাদের নানা অবৈধ কাজেও ব্যবহার করে থাকেন৷

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো চক্রের সহায়তায় এখানে একের পর এক শিশু চুরির ঘটনা ঘটছে৷ সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্যে ‘শিশুচোর' নারীর অবাধ ও সাবলীল বিচরণে তাঁদের এমন অভিযোগের সত্যতাও মেলে৷

হাসপাতালের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘‘হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্যই সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে৷ তিনটি মনিটরে ১৬টি করে ক্যামেরার মাধ্যমে সব দৃশ্য তিনিও পর্যবেক্ষণ করেছেন৷'' তবে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকানো না গেলে শিশু চুরি বন্ধ করা কঠিন বলে জানান তিনি৷

কিন্তু শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘‘গত ছয় মাসে এ নিয়ে পাঁচবার শিশু চুরির ঘটনা ঘটেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷ তারপরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতক চুরি ঠেকাতে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷ তারা একটু সচেতন না হলে এখানে পুলিশের একার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব না৷ কারণ প্রতিদিনই অনেক নবজাতক জন্ম নিচ্ছে হাসপাতালে৷ কার সন্তান কে নিয়ে যাচ্ছে এটা দেখার দায়িত্ব যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য