1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টুইটারে নতুন ঝড় - হ্যাশট্যাগ নিউইন্ডিয়াতালিবান

২ নভেম্বর ২০১৪

না, এটা ভারতীয় নতুন কোনো জঙ্গি দল নয়৷ বরং এই একবিংশ শতকেও নারীর চাল-চলন, তাঁর পোশাক-আশাক নিয়ে যাঁরা আঙুল তোলেন, করেন পুলিশি নজরদারি, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদেরই এবার চিহ্নিত করা হয়েছে #নিউইন্ডিয়াতালিবান বলে৷

https://p.dw.com/p/1DfSn
ছবি: dapd

শুরুটা হয়েছিল হরিয়ানায়৷ হিন্দু মহাসভার ভাইস চেয়ারম্যান ধর্মপাল সিবাচের ক'দিন আগের মন্তব্যকে ঘিরে৷ তিনি মেয়েদের পশ্চিমা পোশাক পরা, মোবাইল ফোন ব্যবহার করা ইত্যাদির বিরোধিতা করেছিলেন৷ অনেকটা সমন জারি করার মতো৷ বলেছিলেন, পশ্চিমা পোশাক, যেমন ‘জিন্স' মেয়েদের ‘ফিগার', তথা শরীরকে আরো বেশি করে প্রদর্শন করে৷ তার সঙ্গে তাদের খোলা-মোলা আচরণ এবং মোবাইল ফোনের যথেচ্ছ ব্যবহারই নাকি নারী ধর্ষণের প্রধান কারণ৷

এহেন একটা মন্তব্য ভারতের সমাজ ও রাজনীতি সচেতন মানুষকে যে বলাই বাহুল্য৷ তার ওপর হরিয়ানার নতুন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারও বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়েছিলেন৷ তাই তাঁর নীরব থাকাকে ধর্মপাল সিবাচের বক্তব্যের সম্মতি বলেই ধরে নেন অনেকে৷ প্রতিবাদে সরব হয়ে ওঠেন ফেসবুকে, হ্যাশট্যাগ #নিউইন্ডিয়াতালিবান ব্যবহার করে টুইটারে তোলেন ঝড়৷

টুইটারে সৈকত চক্রবর্তী হিন্দু মহাসভার চিন্তাধারাকে তিরস্কার করেছেন৷ তিনি বলেছেন, ‘‘মেয়েরা যা ইচ্ছা, তাই পরবে!!!''

শুভম গর্গ জানতে চেয়েছেন, ‘‘ওরা জিন্স পরা বন্ধ করতে চায়৷ আমার তো মনে হয়, শাড়িতেই মেয়েদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় লাগে, শরীরও তাতে বেশি দেখা যায়৷ তাহলে কি ওরা এবার শাড়িও ‘ব্যান' করবে?''

অন্যদিকে সায়ন্তনীর প্রশ্ন: ‘‘ওরা বলছে ভুল পোশাক পরা মেয়েরা পুরুষকে আকৃষ্ট করে এবং সেটাই পরবর্তীতে ধর্ষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ তাহলে যে নারী শাড়ি বা বোরখা পরেন – তাঁদের বেলায়?''

হরিয়ানার মতো উত্তর প্রদেশের পুলিশও কি মেয়েদের জিন্স পরা বা মোবাইল ব্যবহারকে ধর্ষণের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছে? এ প্রশ্নটিই একটি বিতর্ক অনুষ্ঠানে বিজেপি মুখপাত্র বিক্রম সিং, সমাজকর্মী রঞ্জনা কুমারী এবং সমাজবাদী পার্টির গৌরব ভাটিয়ার সামনে তুলে ধরেন ‘টাইমস নাও'-এর সম্পাদক অর্ণব গোস্বামী৷

তারপর পরই উত্তর প্রদেশের ‘এথেইস্ট ক্লাব'-এর টুইট: ‘‘যারা নারীকে নানা প্রলোভনে ভোলায়, তারা সমাজে ঠিকই মর্যাদা পায়৷ তাহলে যে নারী শরীর প্রদর্শনে পিছপা হন না, তাঁর কোনো সম্মান নেই কেন?''

নৈনিতালের এক সমাজকর্মীর বক্তব্য: ‘‘ছোট স্কার্ট আর জিন্স মোটেই নারীদেহ প্রদর্শন করে না৷ আসল ব্যাপার হলো, ভণ্ড রাজনীতিক এবং গোড়া হিন্দুদের এবার মানসিকতা পরিবর্তনের সময় এসেছে৷''

তবে ভারতে নারীর ওপর এ ধরনের ‘মরাল পুলিসিং' নতুন নয়৷ গত এপ্রিল মাসেও নারী ধর্ষণের ওপর মন্তব্য করতে গিয়ে সমাজবাদী পার্টির ‘সুপ্রিমো' মুলায়াম সিং যাদব বলেছিলেন, ‘‘কেউ ধর্ষণ করলে তাকে ফাঁসি দিতে হবে? পুরুষরা তো পুরুষই৷ একটু-আধটু ভুল তো হয়ে যেতেই পারে৷''

সংকলন: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য