1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেরার মুখে ন্যাটোর বিমান হামলার সঙ্গে জড়িত জার্মান কর্মকর্তা

১৮ মার্চ ২০১০

গত বছর এক জার্মান সেনা কর্মকর্তার নির্দেশে আফগানিস্তানের কুন্দুসে ন্যাটোর বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৪২ জন মানুষ হতাহত হয়৷ বৃহস্পতিবার এক সংসদীয় কমিটির সামনে ঐ কর্মকর্তাকে হাজির হতে হল৷

https://p.dw.com/p/MWGT
আফগানিস্তানে মোতায়েন ন্যাটো বাহিনীর একটা ছোট্ট অংশছবি: AP

আফগানিস্তানের উত্তরে কুন্দুসে জার্মান সেনাবাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে৷ উত্তরাঞ্চলে উন্নয়ন ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করাই সেনাবাহিনীর মূল উদ্দেশ্য৷ ফলে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে জার্মান বাহিনীর সার্বিক ভাবমূর্তি এতকাল বেশ ভালই ছিল৷ কিন্তু, একটি ঘটনার ফলে তা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ গত বছরের ৪ঠা সেপ্টেম্বর কুন্দুস এলাকায় দু'টি তেলের ট্যাঙ্কারের উপর ন্যাটোর বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৪২ জন মানুষ হতাহত হয়৷ সেই হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন জার্মান সামরিক বাহিনীর তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তা ভল্ফগাং শ্নাইডারহান৷ আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি বলেছিলেন, ছিনতাই করা ঐ ট্যাঙ্কার দু'টি ছিল তালেবান বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে৷ তারা সেই ট্যাঙ্কারকে গাড়ি বোমা হিসেবে ব্যবহার করে জার্মান ঘাঁটির উপর হামলা চালাবে – এমন আশঙ্কার পেছনে যথেষ্ট কারণ ছিল৷

কিন্তু সেদিন ন্যাটোর বিমান হামলায় হামলায় নিহতদের মধ্যে বিদ্রোহীদের পাশাপাশি অসংখ্য নিরীহ মানুষও ছিল বলে পরে জানা যায়৷ ফলে ঐ হামলার নির্দেশ সঠিক ছিল কি না, কোন তথ্যের ভিত্তিতে তা দেওয়া হয়েছিল ইত্যাদি নানা প্রশ্ন উঠে আসতে থাকে, যার জের ধরে গত ২৬শে নভেম্বর শ্নাইডারহান এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রসচিব পেটার বিশ্যার্টকে পদত্যাগ করতে হয়৷

Wolfgang Schneiderhan Generalinspekteur der Bundeswehr
জার্মান সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা ভল্ফগাং শ্নাইডারহানছবি: picture-alliance/ dpa

এক সংসদীয় কমিটি কুন্দুসের ঘটনার তদন্ত করছে৷ বৃহস্পতিবার ভল্ফগাং শ্নাইডারহান সেই কমিটির জেরার মুখে নিজস্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আফগানিস্তানের জটিল পরিস্থিতির একটা চিত্র তুলে ধরেন৷ তাঁর মতে, আফগানিস্তান কোন সাধারণ যুদ্ধক্ষেত্র নয়, যেখানে শত্রু বা মিত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা করা সম্ভব৷ জার্মান সৈন্যরা প্রতি দিন এমন অবস্থার মুখে পড়ে, যেখানে কে সন্ত্রাসবাদি আর কে নিরীহ মানুষ – তা বুঝে উঠা অত্যন্ত কঠিন৷ মৃদু সমালোচনার সুরে তিনি বলেন, কুন্দুস'এর ঘটনাকে ঘিরে যে কেলেঙ্কারির কথা বলা হচ্ছে, তার ফলে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে যুদ্ধের এই নতুন চরিত্র সম্পর্কে এখনো যথেষ্ট ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে না৷ তবে তিনি নিজে জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে যথেষ্ট বিস্তারিতভাবে কুন্দুসের ঘটনা সম্পর্কে জানান নি, এই অভিযোগ মেনে নিতে এখনো প্রস্তুত নন শ্নাইডারহান৷ উল্লেখ্য, প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্ল থিওডোর সু গুটেনব্যার্গ ক্ষমতা গ্রহণ করে প্রথমে কুন্দুস'এ বিমান হামলার ঘটনার প্রয়োজনীয়তার কথা বললেও পরে সেই বক্তব্য প্রত্যাহার করেন৷

এদিকে আফগানিস্তানের দক্ষিণে হেলমন্দ প্রদেশে তালেবান বিদ্রোহীদের দমন করতে ন্যাটো ও আফগান বাহিনী যে যৌথ অভিযান চালাচ্ছে, সেই ধাঁচে উত্তরেও এক অভিযানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জার্মান সেনা কর্মকর্তা ব্রুনো কাসডর্ফ৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘উত্তরেও এমন এক অভিযান অবশ্যই চালানো হবে৷ তবে আমি বলবো, দক্ষিণে হেলমন্দের মত এত বড় আকারের সেনা অভিযান আমরা দেখবো না৷''

প্রতিবেদক : সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা : দেবারতি গুহ