1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জাতীয় স্বার্থে জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করার এখনই সময়'

২২ মে ২০১৫

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ কিন্তু শুধু একটা সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কতটুকু লাভ হবে? প্রশ্নটা পুরোনো৷ তাই দেখা যাক এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কে কী লিখেছেন এবং লিখছেন৷

https://p.dw.com/p/1FUNm
Symbolbild islamistischer Kämpfer
ছবি: Fotolia/Oleg Zabielin

সংবাদ মাধ্যমের খবর, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামের জঙ্গি সংগঠনটিকে শিগগিরই নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে বাংলাদেশ সরকার৷ এ সংক্রান্ত দাপ্তরিক কাজ শেষ, এখন শুধু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা

স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল৷ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করা এবং তখন দলটির নেতা-কর্মীদের হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ নানা ধরনের যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগেই নিষিদ্ধ করা হয় দলটিকে৷ কিন্তু পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর দলটি আবার রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসার সুযোগ পায়৷ কীভাবে সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সে তথ্য বাংলাপিডিয়াতেও বর্ণিত হয়েছে৷ বাংলাপিডিয়া অনুযায়ী, ‘‘১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক দল বিধির আওতায় মওলানা আবদুর রহীমের নেতৃত্বে ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক লীগ (আই.ডি.এল) রাজনৈতিক দল হিসেবে কর্মকাণ্ড পরিচালনার অনুমতি লাভ করে এবং জামায়াতের সদস্যরা এ দলের ব্যানারে প্রকাশ্য রাজনীতিতে সক্রিয় হয়৷ ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জামায়াতের কতিপয় নেতা ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং ৬ জন প্রার্থী জয়ী হন৷ ১৯৭৯ সালে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নামে এ দলটি পুনরায় রাজনৈতিক দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়৷ ''

Jahidur Rahman Mizan verhaftet
বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক জন ভিন্নমতাবলম্বী একই কায়দায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেনছবি: AP

গত কয়েক বছরেও জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি উঠেছে৷ পাশাপাশি ৩৯টি বছর দেশের রাজনীতিতে পুরোপুরি সক্রিয় থাকার পর কাগজে-কলমে নিষিদ্ধ করলেই কতটা লাভ হবে – এ প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে৷ বিতর্কটি চলমান৷ এর আগে জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ কিন্তু জেএমবি তাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়নি৷ দু মাস আগেও জেএমবির তৎপরতার খবর ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনেই এসেছে

বাংলাদেশের রাজনীতির ধারা সম্পর্কে সচেতন পাঠকরাও এসব বিষয়ে ভালো জানেন৷ তাই দেশে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ করতে কী কী করণীয় এ বিষয়ে ব্লগে লিখেছেনও অনেকে৷ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগে মো: আব্দুর রাজ্জাক জঙ্গিবাদ দমনের জন্য বিশেষ পুলিশ ইউনিট গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন ৷ তাঁর মতে, ‘‘ জঙ্গিদের সম্পর্কে গবেষণা, তথ্য সংগ্রহ সংরক্ষণ ও অভিযান পরিচালনার জন্য বাংলাদেশে কোনো পেশাদার আলাদা ইউনিট তৈরি হয়নি৷ জঙ্গি দমনের ব্যাপারে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন কিছুটা ভিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করছে৷ কিন্তু সাংগঠনিকভাবে র‌্যাবের কোনো নিজস্ব স্থায়ী জনবল নেই৷ র‌্যাবের জনবল, বিশেষ করে, অফিসারদের সিংহভাগই আসেন সশস্ত্র বাহিনী থেকে৷ এদের নিজস্ব পেশার দায়িত্বের সাথে পুলিশ পেশার দায়িত্ব সামান্যই সম্পর্কযুক্ত৷ অধিকন্তু তারা দুই/তিন বছর পর তাদের মাতৃ পেশায় ফিরে যান৷ তাই জঙ্গি দমনের মতো একটি নিরবিচ্ছিন্ন পেশাদার কাজের কাঙ্খিত সাফল্য তাদের কাছ থেকে আশা করা যায় না''

আব্দুর রাজ্জাক পুলিশের বিশেষ ইউনিট গঠনের কথা বললেও একই ব্লগে শফিক বলেছেন, জঙ্গিবাদের বিপদ বুঝতে পাকিস্তানের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে৷ বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবরের তথ্য নিয়ে রচিত ব্লগটি শফিক শেষ করেছেন এভাবে ‘‘আজকের পাকিস্তানের ত্রাস পাকিস্তানি তালেবান ২০০৭ সালে আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের পূর্বে ৩৭ টি দল উপদলে বিভক্ত ছিল৷ ২০০৭ সালের পরের পরিসংখ্যানের দিকে চোখ বোলালে আমরা দেখতে পাই ২০০৬ সালে যখন জঙ্গিবাদের শিকারের সংখ্যা ১৪৭১ জন ২০০৭ সালে তা এক লাফে ৩৫০৮ জনে দাঁড়ায়৷ জঙ্গিদের সম্মিলিত শক্তি কত বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসতে পারে তার উদাহরণ বর্তমান পাকিস্তান৷বাংলাদেশে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েক জন ভিন্নমতাবলম্বী একই কায়দায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন৷ আনসারুল্লাহ বাংলা ৭, আনসারুল্লাহ বাংলা ৮, আল কায়েদা ইত্যাদি নামে অনেকেই এসব হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷ বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনী এসব ঘটনার কোনো কূল কিনারা করতে পারছেনা৷ প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনা প্রমাণ করে ওরা কত শক্তিশালী এবং ওদের লক্ষ্য কত নিখুঁত৷ এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ভেবে অনেকে এড়িয়ে যেতে চাইছে৷ ব্লগার রাজিব হত্যায় সমবেদনা জানানোয় ভোটের বাক্সে টান পড়েছে ভেবে লেখক অভিজিৎ হত্যায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের অন্য মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দেখানোর প্রয়োজন বোধ করেননি৷ প্রধানমন্ত্রী পুত্র তো বলেই দিয়েছেন ওনাদের সরকার নাস্তিকতা নয় ধর্মনিরপেক্ষতা চায়৷ কিন্তু যেদিন ৭+৮+আলঅকায়েদা + অন্যান্য জঙ্গি শক্তি =১ হবে সেদিন রাষ্ট্র, নিরাপত্তা বাহিনী, স্কুলের শিক্ষার্থী, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ কেউ রক্ষা পাবেনা৷ ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করার এখনই সময়৷ ''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য