সাত বিলিয়ন ডলার বা ৫১ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকালে সাত গাড়ি দেহরক্ষী নিয়ে দুদক কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের আলোচিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমশের৷
অবৈধ সম্পদের খোঁজে দুদক কার্যালয়ে মুসাকে প্রায় তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি সাত বিলিয়ন ডলার বা ৫১ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছি৷ কেউ কোনো দিন এত টাকা এ দেশে আয় করতে পারেনি, পারবেও না৷ আমি এই টাকা বিদেশে উপার্জন করেছি বিদেশে৷ দুদক আমাকে ডেকেছে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক বিধায় আমি দেখা করে এসেছি৷''
মুসার জাঁকজমকপূর্ণ চালচলনের কারণে বিদেশি সংবাদমাধ্যমে তাঁকে ‘বাংলাদেশের প্রিন্স' বলা হয়৷ আলোচিত এই ব্যবসায়ীকে নিয়ে খবরটি অন্যন্য সংবাদমাধ্যমের মতো ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় স্থান পেয়েছিল৷
এতে সাড়া দিয়েছেন অনেক বন্ধু৷ যেমন নিয়াজ হাবিবের মন্তব্য, ‘‘বেয়াইয়ের সাথে মনে হয় সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছে না, এরা বেয়াইকেও ছাড়ে না৷ টাকার জন্যে সব করতে পারে৷ এরই নাম আওয়ামী লীগ৷''
বাবা আহসান শাহ নিশ্চিত হয়ে বলছেন, ‘‘মুসা বিন শমশের তো আর আজকের ধনী না, অনেক আগে থেকেই তিনি ধনী৷''
ধনী মুসার কাছে ফাহিম কিবরিয়া, মোয়েলসহ বেশ কয়েকজন ফেসবুক বন্ধুর আবদার, ‘‘আমাদের কিছু দান করেন''!
সামছিয়া বিনির মন্তব্য, মুসা ঠিকই বলছেন, ‘‘এত টাকা বাংলাদেশে রোজগার করা যায় না৷ তবে বাংলাদেশ থেকে চুরি করে অন্য দেশে নেওয়ার যায়৷'' প্রায় একই মন্তব্য নাজমুল সিকদারেরও৷
অন্যদিকে আরেকজন ফেসবুক অনুসারী জ্যোতির্ময় সাহা অভি মজা করে ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘টাকাগুলা এক জায়গায় মাটি খুড়ে গর্তে রেখে দিন৷ তার পর মাটি বসিয়ে ধানের আবাদ করুন৷ ধানের শীষ ওপরে থাকলে কেউ বুঝবে না যে কত টাকা নীচে আছে৷''
উজ্জ্বল ভাটির মনে করেন, অস্ত্র এবং মাদক ব্যবসা ছাড়া এত টাকা কেউ রোজগার করতে পারে না৷
মিজান মোহাম্মদ মনে করেন, মুসা বিন শমশেরের মতো লোকের প্রয়োজন আছে৷
দুলাল উদ্দিন মনে করেন, ‘‘বাংলাদেশে যতদিন সম্পদের সুসম বণ্টন না হবে, ততদিন উন্নত জাতি হিসেবে পৃথিবীতে দেশকে তুলে ধরতে পারবো না৷ বাংলাদেশের সম্পদ হলো কিছু লোকের কাছে কুক্ষিগত৷''
বাংলাদেশের আলোচিত ধনী ব্যক্তি মুসা বিন শমশেরকে সাজ্জাদ প্রামাণিক এবং জাহাঙ্গীর আলম স্যালুট করেন, শ্রদ্ধা করেন জানিয়েছেন ফেসবুকে৷ আর ফেসবুকের পাঠক কাওসার রাজু মুসা বিন শমশেরের মতো হবার স্বপ্ন দেখেন৷ তিনি তাঁর চেয়েও বেশি টাকা রোজগার করতে চান৷
শামীন আক্তার এবং মোহাম্মদ আলম মুসা বিন শমশেরকে দেশের জন্য কিছু করার পরামর্শ দিয়েছেন৷
মনতোষ সুতের বলছেন, ‘‘আমাদের সবার মুসা ভাইয়ের পক্ষে দাঁড়ানো উচিত, যাতে সুইস ব্যাংকের টাকা কোন ঝামেলা ছাড়া মুসা ভাই আবার টাকা ফিরে পায়৷ মুসা ভাইই দেশের সবচেয়ে বড় ধনী৷''
মো. শরীফুল ইসলাম খন্দকার মুসা বিন শমশেরকে ধন্যবাদ দিয়ে বলছেন, ‘‘মুসা ভাই এগিয়ে যান৷''
মুসা সাহেব টাকা রোজগার করেছেন বিদেশে, সে টাকা নিয়ে দুদক-এর মাথা ব্যথা কেন – সেটাই বুঝতে পারছেন না পাঠক শাহীন৷ তবে তাঁর অনুরোধ, এত টাকা থেকে দেশের জন্য কিছুটা খরচ করা হোক৷
বাংলাদেশের আলোচিত ধনী ব্যক্তি মুসা বিন শমশের নিজেই কিন্তু বলেছেন, ‘‘সুইস ব্যাংকে আটকে থাকা ওই টাকা উদ্ধার করা গেলে পদ্মা সেতু, দুঃস্থ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষকসহ সামাজিক গঠনমূলক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখব৷ সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করব৷''
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ