‘একটি মানুষকে খুঁজে বের করাই সবচেয়ে শক্ত কাজ’
১ আগস্ট ২০১১ডয়চে ভেলে: নাইন-ইলেভেনের আগেও বিন লাদেনের খোঁজ চালাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ নাইন-ইলেভেনের পরে সেটা কিভাবে বদলায়?
ম্যাকলাফলিন: নাইন-ইলেভেন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এমন একটা শক ছিল যে, তার পরে বিন লাদেনের খোঁজ আরো জোরদার হয়... গোয়েন্দা-গুপ্তচর বিভাগগুলো আরো বেশি টাকা পায়, লোক পায়৷
ডয়চে ভেলে: এই পরিমাণ লোকবল, অর্থবল, আধুনিকতম প্রষুক্তি নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদিকে খুঁজে বার করতে এতো সময় লাগল কেন?
ম্যাকলাফলিন: এই বিভাগে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, একটা মানুষকে খুঁজে বার করাই হল সবচেয়ে শক্ত কাজ৷ ঠান্ডা লড়াই'এর যুগে আমাদের গোয়েন্দা-গুপ্তচর বিভাগের কাজ ছিল, বড় বড় জিনিস খুঁজে বার করা... সেভিয়েত আণবিক বোমা কোথায় রাখা আছে, ডুবোজাহাজ, বোমারু বিমান, জার্মান সীমান্তে সাঁজোয়া গাড়ির ডিভিশন ইত্যাদি... নাইন-ইলেভেনের পর আমরা অত্যন্ত ছোট ছোট জিনিস খুঁজে বার করা নিয়ে ব্যস্ত আছি: কোনো স্যুটকেসে একটি বোমা, কয়েক লাখ মানুষের শহরে একটি বিশেষ মানুষ৷ এ'টা খুবই শক্ত কাজ, বিশেষ করে সেই মানুষটা যদি আত্মগোপনের সব পন্থা ব্যবহার করে৷
ডয়চে ভেলে: বিন লাদেনের আসল খোঁজটা এলো কবে এবং কিভাবে?
ম্যাকলাফলিন: ...বহুদিন ধরে নানা হদিশ সংগ্রহ করেই এ'টা সম্ভব হয়েছে বলে আমার ধারণা৷ কে যেন বলেছিল, গুপ্তচরবৃত্তিটা হচ্ছে একটা পাজল খেলার মতো, টুকরোগুলো জুড়ে জুড়ে পুরো ছবিটা তৈরি করতে হয়৷ এ'ক্ষেত্রে প্যাকেটের ওপর শুধু ছবিটা নেই, এই যা অসুবিধা... এ'ভাবেই বিন লাদেনের অবস্থান জানা গেছে বলে আমার ধারণা৷
ডয়চে ভেলে: তোরা বোরা'য় বিন লাদেনকে ধরা সম্ভব হয়নি কেন?
ম্যাকলাফলিন: আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে... আফগানিস্তানের ঐ এলাকাটা এতোই দুর্গম, সেখানে বিন লাদেনকে ধরার জন্য বিপুল পরিমাণ মার্কিন সৈন্য নিয়োগ করতে হতো৷
ডয়চে ভেলে: এ'টা কি সত্যি যে, তোরা বোরার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর বিন লাদেনের কোনো হদিশ পায়নি - অ্যাবটাবাদ অবধি?
ম্যাকলাফলিন: হ্যাঁ, ঐ ধারণাটা মোটামুটি সত্যি বলে আমার অভিমত৷ বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে গত দশ বছরে কিছু কিছু খবর এসেছে... তার খোঁজও চলেছে... তবে আমাদের ফোকাস ছিল তার সন্ত্রাসচক্রকে ধ্বংস করার উপর৷... এবং সেটাই সঠিক স্ট্র্যাটেজি ছিল বলে আজ আমার বিশ্বাস৷
প্রতিবেদন: মিশায়েল ক্নিগে/অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম