1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাস ট্রিপ ‘ফ্রিডম এক্সপ্রেস’

লুডিয়া হেলার/আরবি২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪

২০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল নিয়ে ‘ফ্রিডম এক্সপ্রেস’ যাত্রা শেষ করলো বার্লিনে৷ ১৯৮৯ সালের শরৎ বিপ্লবের সন্ধান করতেই এই বাস ট্রিপ৷ এই যাত্রায় তরুণ-তরুণীরা বুঝতে পারেন, স্বাধীনতার জন্য পরিশ্রম করতে হয়, বারবার সংগ্রাম করতে হয়৷

https://p.dw.com/p/1DG7g
ইতিহাস সম্পর্কে জানতে এই বাস ট্রিপের আয়োজন করা হয়েছিলছবি: Freedom Express

সময়টা প্রায় মধ্য রাত৷ কিয়েভের ২৮ বছরের ছাত্রী হানা রাবার্শকার চোখ ঘুমে জড়িয়ে আসছে৷ খুব ভোরে বাসে করে প্রাগ থেকে বার্লিনে এসে পৌঁছান তিনি৷ সারাদিন অনেক ধকল গিয়েছে৷ সাইকেলে চেপে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখেছেন, ১৯৮৯ সালের বিপ্লব নিয়ে একটি আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেছেন৷ ‘‘বিপ্লবকে অনেকটা প্রেমে পড়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়৷ প্রথম দিকে নেশার মতো মনে হয়৷ মানুষের আশা-আকাঙ্খা তুঙ্গে থাকে, তারপরই হয় মোহমুক্তি৷ আজকালের মধ্যেই সব কিছু ভালো হয়ে যায় না৷ পরিবর্তন কোনো আলৌকিক বিষয় নয়৷ এটা একটা কর্ম, একটা প্রক্রিয়া৷'' বলেন ইউক্রেনি তরুণী হানা৷

২৫ বছর পর সাবেক পূর্ব ব্লকের তরুণ সমাজ শরৎ বিপ্লব সম্পর্কে কী জানে? বাস্তব জীবনে এর প্রভাবই বা কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ‘ইউরোপিয়ান নেটওয়ার্ক ফর রিমেমব্রান্স অ্যান্ড সলিডারিটি' ‘ফ্রিডম এক্সপ্রেস' নামে একটি বাসট্রিপের আয়োজন করে৷ ২০১৪ সালের ২৯শে আগস্ট ১০ দেশের ২০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে ফ্রিডম এক্সপ্রেস৷ গেডানস্ক থেকে ওয়ারশ হয়ে বুদাপেস্ট পর্যন্ত, টিমিসোরার ওপর দিয়ে সোপরোন পর্যন্ত, ব্রাতিসলাভা ও প্রাগ হয়ে অবশেষে বার্লিনে শেষ হয় এই যাত্রা৷

সব জায়গাতেই শিক্ষার্থীরা শরত ৮৯-এর অ্যাকটিভিস্টদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করেছেন৷ সেই সময়ের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলি যেমন সীমান্ত পারাপার, কারাগার ইত্যাদি পরিদর্শন করেছেন৷ প্রত্যেকদিনই তারা ফটো তুলেছেন, মুভিতে ধারণ করেছেন কিংবা তাঁদের অভিজ্ঞতা ব্লগে তুলে ধরেছেন৷ বার্লিনেও তাদের কর্মমুখর দিন কাটে৷ বার্লিন প্রাচীর ও জিডিআর-মিউজিয়াম দর্শন, ‘পূর্ব জার্মানির তৃতীয় প্রজন্মে'-র সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ, ফটো ওয়ার্কশপ ইত্যাদি ছিল তাঁদের কর্মসূচিতে৷

‘‘এক্ষেত্রে আমরা একদম নির্মম৷ তাঁদের অনেক কাজই সম্পন্ন করতে হয়েছে৷'' ঠাট্টা করে বলেন ওয়ারশ কেন্দ্রিক নেটওয়ার্কের পরিচালক রাফাল রগুলস্কি৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমরা চাই তরুণ সমাজ বিভিন্ন দেশের ইতিহাসকে মর্যাদা দিতে শিখুক৷ তাদের বিশেষত্ব ভালোভাবে বুঝতে শিখুক৷ আমাদের পরিচিতি ও তথাকথিত পশ্চিমা দেশের পরিচিতি যে একই ভিতের ওপর গড়ে উঠেছে তা অনুভব করুক৷'' তবে সবকিছু যে মসৃণভাবে হয়েছে তা বলা যায় না৷ জানান হানা৷ হাঙ্গেরির সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রেসের স্বাধীনতা নিয়ে তুমুল তর্ক-বিতর্ক হয়ে যায়৷

হানার কথায়, ‘‘হাঙ্গেরিতে মিডিয়ার ওপর সেন্সরের খড়গহস্ত রয়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত একটি দেশে এটা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য৷''

অন্যদিকে হাঙ্গেরির আনা রুবি মনে করেন, ইতিহাসকে নতুন করে অনুসন্ধান করা উচিত৷ আনা নিজে অনেক দিন ধরে জুরিখে বসবাস করছেন এবং হাঙ্গেরির রাজনীতির সঙ্গে মোটেও একমত নন৷ কিন্তু স্বদেশের মানুষকে দায়ী করতে চান না তিনি৷ ‘‘প্রায়ই বলা হয় তরুণ সমাজ এগিয়ে আসছে না৷ কিংবা কোনো কার্যকর সুশীল সমাজ নেই দেশটিতে৷ কিন্তু এ সবের জন্য সময়ের প্রয়োজন৷ ১৯৮৯ সালের পর অনেক মানুষই দিশাহারা হয়ে পড়েছেন৷ আমি এমন অনেককে চিনি, যারা বিদেশে চলে গেলেও আবার দেশে ফিরে কিছু পরিবর্তন করতে চান৷''

নানা মত পার্থক্য সত্ত্বেও দৈনন্দিন কর্মতৎপরতা ‘ফ্রিডম এক্সপ্রেসে'-র যাত্রীদের একাত্ম করেছে৷ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মর্ম বুঝতে সহায়তা করেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য