1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘অভ্যন্তরীণ জার্মান সীমান্ত’এ নিহতদের স্মরণ

১৭ আগস্ট ২০১২

বার্লিন প্রাচীর নিয়ে যতটা আলোচনা হয়েছে সেই তুলনায় ‘অভ্যন্তরীণ জার্মান সীমান্ত’ নিয়ে ততটা হয়নি৷ অথচ এই সীমানা পারি দিতে গিয়েও প্রাণ হারিয়েছিলেন অনেকে৷ এবার তাদের পরিচয় খুঁজে বের করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/15rZg
Mit weißen Rosen sind am Montag (13.08.2012) an der Mauergedenkstätte an der Bernauer Straße in Berlin transparente Porträtfotos, die Teil eines Denkmals für die Maueropfer sind, geschmückt. Vor 51 Jahren wurde mit dem Bau der Berliner Mauer begonnen. Foto: Tim Brakemeier dpa/lbn
Mauergedenkstätte an der Bernauer Straße in Berlinছবি: picture-alliance/dpa

১৯৬১ সালের আগস্ট মাসের ১৩ তারিখে বার্লিন প্রাচীর তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল৷ সেই থেকে সেটা দুই জার্মানির বিভক্তির একটা প্রতীক হয়ে রয়েছে৷ বার্লিন প্রাচীর টপকাতে গিয়ে মারা গেছেন অনেকে৷ তাদের নাম, পরিচয় নিয়ে হয়েছে গবেষণা৷ ‘বার্লিন ওয়াল মেমোরিয়াল'-এ নিহতদের ছবি সহ বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষিত আছে৷

কিন্তু সেই তুলনায় পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মধ্যে যে সীমানা গড়ে তোলা হয়েছিল, সেটা নিয়ে তেমন গবেষণা হয়নি৷ ঐ সীমানা পাড়ি দিতে গিয়েও জীবন দিতে হয়েছিল অনেককে৷ কেননা সীমান্ত এলাকায় কড়া নজর এড়িয়ে সেটা পাড়ি দেয়া বেশ কঠিন ছিল৷ আর যারা ঐ নজরদারি থেকে ভাগ্যক্রমে রেহাই পেতেন তাঁদের অনেককে প্রাণ দিতে হয়েছে সীমান্তে থাকা মাইন'এর কারণে৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ায় চার বছর পর ১৯৪৯ সালে জার্মানি ভেঙে দুটো রাষ্ট্রের জন্ম হয়৷ একটার নাম হয় ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানি, যেটা একীভূত জার্মানির পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছিল৷ আর অন্যটির নাম জার্মান ডেমোক্রটিক রিপাবলিক বা জিডিআর৷ তবে বিশ্বের কাছে সেটা পূর্ব জার্মানি নামেই পরিচিত ছিল৷ এই অঞ্চলটা ছিল অপেক্ষাকৃত অনেক ছোট৷ তবে নামে গণতান্ত্রিক বলা হলেও আসলে পূর্ব জার্মানিতে সেরকম কিছু ছিল না৷ কমিউনিস্টরা পূর্ব জার্মানি শাসন করতো৷ নাগরিকদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছিল না৷ কেউ সরকারের কোনো বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করলেই তাকে শাস্তি দেয়া হতো৷

তার উপর পূর্ব জার্মানির অর্থনৈতিক অবস্থাও ভালো ছিল না৷ ফলে সেখানকার মানুষ চাইতো যে কোনোভাবে হোক দেশ ছাড়তে৷ সেটা তারা শুরুও করেছিল৷ তাদের বেশিরভাগই পশ্চিম জার্মানিতে চলে গিয়েছিলেন৷ যখন সংখ্যাটা বাড়তে থাকলো তখন পূর্ব জার্মানির শাসক দল ‘সোশ্যালিস্ট ইউনিটি পার্টি অফ জার্মানি' বা এসইডি দুই দেশের সীমান্ত লাইন বরাবর একটা নিষিদ্ধ এলাকা গড়ে তুললো৷ এই এলাকা প্রায় পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্ত ছিল৷ আর দৈর্ঘ্যে ছিল প্রায় ১৪,০০ কিলোমিটার৷ কেউ যদি এই সীমানা পার হতে যেত তাহলে তাকে গ্রেপ্তার বা গুলি করার নির্দেশ ছিল৷

Touristen an der Kapelle der Versöhnung in der Gedenkstätte Berliner Mauer an der Bernauer Straße in Berlin, aufgenommen am 28.6.2011. An historischem Ort ist seit der Wiedervereinigung 1990 eine Erinnerungsstätte an das einstige Bollwerk des Ostens und dessen Opfer entstanden. Zum 50. Jahrestag des Mauerbaus am 13. August 2011 sollen weitere große Teilbereiche der Ausstellung auf dem 1,4 Kilometer langen ehemaligen Grenzstreifen fertiggestellt sein. Foto: Jens Kalaene
বার্লিন দেওয়ালের স্মরণে স্মৃতিসৌধছবি: picture-alliance/dpa

১৯৮৯ সালে এই সীমানা খুলে দেয়া হয়৷ কিন্তু এর মধ্যেই প্রাণ হারান অনেকে৷ বেশ কয়েকটি সংস্থা ও ব্যক্তিগত গবেষক নিজেদের মতো করে নিহতের সংখ্যা প্রকাশ করেছে৷ কিন্তু একটার সঙ্গে আরেকটার মিল নেই৷ তাই বার্লিনের ‘ফ্রি ইউনিভার্সিটি' এ বিষয়ে একটা গবেষণা শুরু করেছে৷ জার্মান সরকার ও সেসময় এই সীমানার আশেপাশে যে রাজ্যগুলো ছিল সরকার তাদের যৌথভাবে এই গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে৷ এর জন্য খরচ হবে পাঁচ লক্ষ ইউরো৷ ২০১৫ সালের মধ্যে গবেষণার কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷

এ প্রসঙ্গে জার্মানির সংস্কৃতি ও গণমাধ্যম বিষয়ক মন্ত্রী বের্ন্ড নয়মান বলেন, গবেষণার মাধ্যমে নিহতদের নাম, পরিচয় প্রকাশ করা হবে৷ এর মাধ্যমে তাদেরকে সম্মান জানানো হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘নিহতদের জীবনী প্রকাশের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব জার্মান সরকারের অমানবিক নিষ্ঠুরতার একটা পরিচয় পাওয়া যাবে৷''

গবেষণায় অর্থ সহায়তা দেয়া রাজ্য সাক্সোনি-আনহাল্টের শিক্ষামন্ত্রী স্টেফান ডোরগেরলো বলছেন, দুই জার্মানির পুনরএকত্রিত হওয়ার ২২ বছর পর সীমান্তে নিহতদের স্মরণের পরিকল্পনা একটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ৷ তিনি বলেন, ‘‘বার্লিন প্রাচীর জার্মানির বিভক্তির একটা প্রতীক৷ এখন সময় এসেছে প্রাচীর থেকে নজরটা একটু সীমানার দিকে ফেরাতে৷ কেননা প্রাচীর তৈরি হওয়ার অনেক আগেই কিন্তু সীমানার বিষয়টা শুরু হয়েছিল৷''

প্রকল্প প্রধানের দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ক্লাউস শ্রোয়েডার৷ তিনি বলেন, ‘‘এই গবেষণাটা আমার কাছে অনেকটা ব্যক্তিগতও৷ কেননা ঐ সীমানা এলাকায় আমি বড় হয়েছি৷ দেখেছি কীভাবে মানুষকে বাধা দেয়া হয়েছে৷ একদিন আমি সীমানা সংলগ্ন বাল্টিক সাগরে একজনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখি৷ শিশু বয়সে সেটা ছিল আমার জন্য খুব খারাপ, কঠিন একটা অভিজ্ঞতা৷''

প্রতিবেদন: মার্সেল ফুরস্টেনাও / জেডএইচ

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য