1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অন্ধ নাবিক, তবুও নেই ভয়

২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪

পোল্যান্ডের ‘ইমাগো মারিস’ নামধারী সংগঠন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে তুলেছে৷ বেলারুস সীমান্তের কাছে সিমিয়ানোভকা হৃদে ইয়টিং, অর্থাৎ পালতোলা নৌকা চালাতে শিখছেন দৃষ্টিহীনেরা৷

https://p.dw.com/p/1DM1N
Bildergalerie Luxus Yachten
প্রতীকী ছবিছবি: Getty Images

যেমন ভ্যালেন্তিনা কোজিয়ল, যিনি জন্মাবধি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী৷ ৫০ বছর পার হয়ে আজ তিনি সিমিয়ানোভকা হৃদের জলে ঘন কুয়াশার মধ্যে নির্দ্বিধায় ইয়ট চালাচ্ছেন৷ ‘‘পালগুলো চোখে দেখতে পাই না, তো তা-তে কি হয়েছে!'' বলে অন্যান্য মাল্লাদের সঙ্গে নাবিকদের গান ধরে দেন ভ্যালেন্তিনা৷ ‘‘বাতাস আমার কানে, কপালে, মুখে৷ আমার ডান গাল ঠান্ডা হয়ে গেলে আর জোর বাতাস এলে বুঝতে পারি, বাতাস সামনের দিক থেকে আসছে৷''

তবে পাল তুলে অকুলে ভাসার আগে ভ্যালেন্তিনা ও তাঁর ডজন খানেক সহ-শিক্ষার্থীকে ইয়টিং-এর এ-বি-সি-ডি শিখতে হয়েছে: কী করে দড়িতে গেরো বা গিঁট বাঁধতে হয়, ইয়ট অর্থাৎ নৌকোয় নিরাপত্তার নিয়মকানুন৷ সবশেষে সত্যিই নাও-এ চড়ে হৃদের জলে ভাসা৷ সে ইয়টে আবার নানা ম্যাপ রাখা রয়েছে, যার লিপি হলো অন্ধদের লিপি ব্রেইল৷ নৌকোয় যে জিপিএস রাখা আছে, তা কথা বলতে পারে৷ এমনকি নৌকার হাল পর্যন্ত নাও কোন দিকে যাচ্ছে এবং কোন স্পিডে যাচ্ছে, সেটা ডায়াল কিংবা এলইডি মনিটরে না দেখিয়ে, সোজাসুজি কথায় বলে দেয়৷

পূর্ব পোল্যান্ডের বিয়াওউয়িস্টক শহর থেকে আগত এক দোকানের কেরানি পিওতর সোকোলস্কি প্রায় অন্ধ: ‘‘এই প্রথম আমি একটি পালতোলা নৌকোয় করে জলের ওপর৷ ইয়টগুলো যে এ রকম কাত হয়ে পড়ে, তা আমি জানতাম না৷ প্রথমে তো ভেবেছিলাম, নৌকা বুঝি উল্টে যাচ্ছে৷ পরে দেখলাম কাত হওয়াটাই স্বাভাবিক৷'' এভাবেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা ক্রমেই আরো বেশি আত্মবিশ্বাস ফিরে পান, বলে ইমাগো মারিস-এর প্রধান এভা স্ক্রেচ-এর ধারণা: ‘‘এমন মানুষও আছেন, যাঁরা দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর আর বাড়ি থেকে বেরোন না....আমরা তাঁদের উৎসাহ দেবার চেষ্টা করি; তাঁদের বলি যে, জীবন এখনই শেষ হয়নি, আরো অনেক কিছু বাকি আছে৷''

ব্লাইন্ড সেইলিং অ্যাসোসিয়েশন, অর্থাৎ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ইয়টিং সমিতি শুধু পোল্যান্ডেই নয়, বিশ্বের সর্বত্র পাওয়া যাবে৷ এ মাসের সূচনাতেই যুক্তরাষ্ট্রের লেক মিচিগানে ১৬টি আন্তর্জাতিক দলের একটি চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়৷ পোল্যান্ডের বিশেষত্ব হলো, বাল্টিক সাগরে বহু বছর ধরে একটি কর্মসূচি চলেছে, যার নাম ‘‘জোবাচিচ মরজে'' বা ‘সমুদ্রদর্শন'৷ উত্তর পোল্যান্ডের মাসুরিয়া অঞ্চলের হৃদগুলিতেও অনুরূপ কর্মসূচি চালানো হয়৷ ইমোগো মারিস সংগঠন আগামী অক্টোবর মাসে তাদের প্রথম আন্তঃসাংস্কৃতিক সমুদ্রযাত্রা করবে – ভূমধ্যসাগরে – জার্মানি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড থেকে আগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে৷

এসি/ডিজি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য