1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অনশনে অসুস্থ ১৫ পোশাক শ্রমিক

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৩০ জুলাই ২০১৪

ঢাকার বাড্ডা এলাকায় তুবা গ্রুপের পোশাক শ্রমিকরা বেতন, ভাতার দাবিতে অনশন অব্যাহত রেখেছেন৷ তিনদিনের অনশনে ১৫ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷ তবে তাঁদের দাবি পরিশোধে বিজিএমইএ বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি৷

https://p.dw.com/p/1CmLU
Krankenhaus in Bangladesch
ছবি: picture-alliance/dpa

তুবা গ্রুপের ১,৬০০ শ্রমিক ঈদের আগে প্রতিশ্রুত বকেয়া বেতন-ভাতা না পেয়ে সোমবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন৷

ঈদের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুইজন শ্রমিক অসুস্থ হওয়ার পর বুধবার আরো ১৩ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তাঁদের মধ্যে চারজনকে মগবাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে৷ আর বাকিদের কারখানার সামনে এবং ভিতরে রেখেই স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে৷

সংহতি প্রকাশ

এদিকে আন্দোলনরত শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অনশনে যোগ দিয়েছে বামধারার বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা৷ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা মঞ্জুরুল আহসান খান, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, ইউনাইটেড কমিউনিষ্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু অনশনরত শ্রকিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন৷

তাঁরা সরকার ও তুবা গ্রুপের মালিকের কড়া সমালোচনা করে বলেন, সরকার আর মালিকরাতো হাসি আনন্দে ঈদ উদযাপন করলেন৷ কিন্তু এই যে শ্রমিকরা ঈদ না করতে পেরে কারখানায় অনশন করছেন তাঁদের দিকে তাঁরা একটুও খেয়াল করলেন না৷ শুধু তুবা নয়, সারাদেশেই ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে একত্রিত হয়ে গার্মেন্টস মালিকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বাম নেতারা৷ একই সঙ্গে অবিলম্বে অনশনরত শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধের দাবি জানান তাঁরা৷

অনশন চলবে

অনশনরত শ্রমিকরা মালিকপক্ষ ও সরকারের দিক থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে আরো হতাশ হয়ে পড়ছেন৷ তবে তাঁরা তাঁদের অনশন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন৷ শ্রমিকদের একজন আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে৷ তিনি অভিযোগ করেন, তাঁরা মঙ্গলবার ঈদের দিন কারখানার সামনের রাস্তায় ঈদের নামাজ আদায় করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এতে পুলিশ বাধা দেয়৷''

রওশন আরা নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘আমাদের বলার কিছু নাই৷ আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর দিকে চেয়ে আছি৷ একমাত্র তিনিই আমাদের বাঁচাতে পারেন৷ আমরা টাকা না পেলে এখান থেকে নড়বো না৷''

পোশাক শ্রমিক হানিফ বলেন, ‘‘শ্রমিকদের পাশে আসলে কেউ নেই৷ না সরকার, না মালিক৷ যদি তারা আমাদের সঙ্গে থাকতো, তাহলে আজ আমাদের এই করুণ পরিস্থিতি হতো না৷''

জাতির জন্য অপমানজনক

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) সহকারী নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘‘শ্রমিকদের অনশনের এ ঘটনা জাতির জন্য অপমানজনক৷ সবাই ঈদ উদযাপন করছে৷ আর একদল শ্রমিক না খেয়ে অনশন করছেন নিজেদের পাওনার দাবিতে৷ এতে বিজিএমইএ ও সরকারের উদাসীনতা প্রমাণিত হয়৷''

প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ

পোশাক কারাখানার মালিকরা ঈদের আগেই ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সেই কথা রাখেননি ঢাকার বাড্ডার তুবা গ্রুপের মালিক দেলোয়ার হোসেন৷ এই দেলোয়ার হোসেন হলেন বহুল আলোচিত তাজরিন ফ্যাশানের মালিক৷ ২০১২ সালের নভেম্বরে এই তাজরীন ফ্যাশানেই দেলোয়ার হোসেনের অবহেলায় আগুন লেগে ১২৪ জন শ্রমিক নিহত হন৷ যাদের ক্ষতিপূরণও দেননি তিনি৷

বাড্ডায় দেলোয়ার হোসেনের তুবা গ্রুপের অধীনে মোট পাঁচটি পোশাক কারখানা রয়েছে৷ এগুলো হলো তুবা ফ্যাশান, তুবা টেক্সটাইল, তুবা বুকশান, মিতা ডিজাইন ও টাইপ ডিজাইন৷ এই পাঁচ কারাখানায় মোট ১,৬০০ শ্রমিক কাজ করেন৷

গত তিন মাস ধরে পাঁচটি কারখানার কোনো শ্রমিককে বেতন দেয়া হচ্ছে না৷ শ্রমিকরা ঈদের আগে শুক্রবার বেতন, ভাতার দাবিতে মালিক পক্ষের লোকজনকে ঘোরাও করে৷ পরে বিজিএমইএ-র মধ্যস্থতায় তাঁরা ঈদের আগে রবিবার একমাসের বেতন এবং ঈদ বোনাস দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবরোধমুক্ত হলেও শেষ পর্যন্ত বেতন-ভাতা আর দেননি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য