1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হেরে গেল ম্যার্কেল’এর দল

১৪ মে ২০১২

জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার সংসদ নির্বাচনে হেরে গেছে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল’এর দল৷ ফলে আগামী বছরের জাতীয় নির্বাচনে ম্যার্কেল’কে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/14uqw
ছবি: dapd

ম্যার্কেল'এর দল যে হারবে সেটা প্রায় নিশ্চিত ছিল৷ কিন্তু প্রত্যাশার চেয়েও কম ভোট পেয়েছে খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল বা সিডিইউ৷ মাত্র ২৬ শতাংশ৷ আর সামাজিক গণতন্ত্রী দল বা এসপিডি ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছে৷ এই দলের নেতৃত্বে আছেন হানেলোরে ক্রাফট৷ রাজ্যের সদ্য সাবেক হওয়া এসপিডি-গ্রিন জোট সরকারের প্রধান ছিলেন তিনি৷ ২২ মাস আগে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ঐ জোট সরকার বাজেটের খসড়া পাশ করতে না পারায়, গত মার্চ মাসে ভেঙে যায়৷ এরপর এই অন্তর্বর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো৷

এসপিডি আবারও তাদের জোটসঙ্গী গ্রিন পার্টি বা সবুজ দলের সঙ্গে মিলে সরকার গঠন করবে৷ গত নির্বাচনের চেয়ে গ্রিন পার্টি এবার আরও ভাল করেছে৷

নির্বাচনের এই হারকে ‘তিক্ত' বলে অভিহিত করেছেন সিডিইউ'র রাজ্য প্রধান ও কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী নোর্বাট ব়্যোটগেন৷ ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে তিনি দলের রাজ্য প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগও করেছেন৷ তবে মন্ত্রীত্ব থেকেও পদত্যাগ করবেন কিনা - সেটা জানান নি তিনি৷

এদিকে, সিডিইউ মহাসচিব হ্যার্মান গ্রোয়ে বলেছেন একটি রাজ্যের ফল জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে না৷ নির্বাচনের আগে চ্যান্সেলর ম্যার্কেলও বলেছিলেন যে, নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার নির্বাচন শুধুই একটি রাজ্যের সংসদ নির্বাচন৷ এর বেশিও নয়, কমও না৷

Wahlergebnis Landtagswahl NRW 22Uhr 18

তবে ইতিহাস বলছে, জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য হওয়ায় জাতীয় রাজনীতিতে এই রাজ্যের নির্বাচন-ফলাফলের একটা প্রভাব স্বভাবতই থাকে৷ উল্লেখ্য, প্রতি পাঁচজন জার্মানের একজনের বাস নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ায়৷

বিশ্লেষকরা স্থানীয় এই ফলাফলকে দেখছেন একটু আন্তর্জাতিক পরিসরে৷ মাত্র কদিন আগেই ইউরো সংকট মোকাবিলায় কৃচ্ছ্বতাসাধনের নীতির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে ফ্রান্স আর গ্রিসের জনগণ৷ জার্মানির এই রাজ্য নির্বাচনের ফলও সে ধরণেরই একটা প্রতিক্রিয়া বলে মনে করছেন অনেকে৷ কেননা সংকট মোকাবিলায় যে কঠোর চুক্তি প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে, তার নেপথ্যে রয়েছে ম্যার্কেল ও তাঁর সরকার৷

প্রস্তাবিত এই চুক্তি পাস হলে ইউরোভুক্ত দেশগুলোকে কঠোর বাজেট প্রণয়ন করতে হবে৷ এর বেশি খরচ করলে দেশগুলোর জন্য জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে৷ ফ্রান্সের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ প্রস্তাবিত এই চুক্তি সংশোধনের অঙ্গীকার করে নির্বাচনে জিতেছেন৷

কিন্তু জার্মানিতে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন মনে হচ্ছে৷ কেননা মাত্র দু'সপ্তাহ আগে করা একটি জার্মান টেলিভিশন চ্যানেলের জরিপে দেখা গেছে যে, প্রায় ৬১ শতাংশ জার্মান নাগরিক সংকট মোকাবিলায় চ্যান্সেলর ম্যার্কেল'এর নেয়া ভূমিকার প্রতি আস্থা পোষন করেছেন৷ তাই ম্যার্কেলের দলের নেতারা নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে পরাজিত হলেও জাতীয় নির্বাচনে ভাল করার আশা করছেন৷

তবে এই হারের ফলে সিডিইউ'র জন্য একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ কেননা, এর মাধ্যমে তারা তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পেরেছে৷ যেটা জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করবে৷ আর মাত্র ১৬ মাস পরেই হবে ঐ নির্বাচন৷

এদিকে, নির্বাচনের ফল এসপিডি'কে একটু সমস্যায় ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছে প্রভাবশালী পত্রিকা ‘ডের স্পিগেল'৷ ইউরো সংকট মোকাবিলায় দলটি প্রস্তাবিত চুক্তির কোন্ পক্ষ নেবে, সে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যাটা হতে পারে বলে মনে করছে পত্রিকাটি৷ কেননা, চুক্তির পক্ষে অবস্থান নিলে সেটা ম্যার্কেল'এর পক্ষ নেয়া হয়ে যায়৷ আর বিপক্ষে অবস্থান নিলে ম্যার্কেল'এর হাতে নির্বাচনের জন্য একটা ইস্যু তুলে দেয়া হয়৷ বলা বাহুল্য, এই চুক্তির প্রতি সমর্থন রয়েছে বেশিরভাগ জার্মান নাগরিকের৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক (ডিপিএ, এএফপি)

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য