1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লকারবি ট্রাজেডির ২০তম বার্ষিকী পালিত

রিয়াজুল ইসলাম২১ ডিসেম্বর ২০০৮

২১শে ডিসেম্বর, লকারবি ট্রাজেডির ২০তম বার্ষিকী পালিত হলো৷ ১৯৮৮ সালের এইদিনে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় বৃটেনের লকারবি এলাকায় বিধ্বস্ত হয় একটি যাত্রীবাহি বিমান৷ এতে প্রাণ হারায় ২৭০ জন৷

https://p.dw.com/p/GKnn
সন্ত্রাসীদের বোমায় বিধ্বস্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষছবি: AP

১৯৮৮ সালের ২১ শে ডিসেম্বর৷ স্থানীয় ঘড়ির কাটায় তখন সন্ধা সাতটা বেজে গেছে৷ স্কটল্যান্ডের শহর লকারবিতে তখন চলছে আর কিছুদিন পরেই ক্রিসমাসের প্রস্তুতি৷ ঠিক এমন সময় আকাশে দেখা গেল আগুনের কুন্ডলী পাকিয়ে কি যেন নেমে আসছে৷ কয়েক মুহুর্ত পরেই প্রচন্ড শব্দে তা আছড়ে পড়লো লকারবির রাস্তার ওপর৷ এক মুহুর্তেই শান্ত লকারবি পরিণত হলো যেন নরকে৷ আগুন, ধোয়া আর আহত মানুষের আর্তনাদে বিভীষিকাময় হয়ে উঠলো গোটা পরিবেশ৷ লকারবির সাবেক পুলিশ ইন্সপেক্টর জর্জ স্টোবস এর ভাষায়, কেউই বুঝতে পারছিলো না কি ঘটছে৷ কেবল আমরা বুঝতে পারলাম একটি বিমান আছড়ে পড়েছে৷ আমাদের ধারণা ছিলো সেটি হয়তো কোন যুদ্ধবিমান হবে৷

তবে জর্জ স্টোবস এর ধারণা ছিলো ভুল৷ সেটি ছিলো একটি বোয়িং ৭৮৭ যাত্রীবাহী বিমান, যাতে ছিলো ক্রু এবং যাত্রী মিলিয়ে ২৫৯ জন আরোহী৷ দুর্ঘটনায় তারা সকলেই প্রাণ হারিয়েছিলেন৷ এছাড়া আছড়ে পড়ার সময় বিমানের ধ্বংসস্তুপের আঘাতে মৃত্যু ঘটে আরও ১১ জনের৷ নিহত যাত্রীদের মধ্যে ১৮০ জনই ছিলেন মার্কিন নাগরিক৷ নিহত যাত্রীদের ছিন্ন বিচ্ছিন্ন শরীর ছড়িয়ে পড়েছিলো গোটা এলাকা জুড়ে৷ আশি মাইল দুর পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছিলো বিমানের ধ্বংসাবশেষ৷

Der libysche Revolutionsführer Muammar al-Gaddafi
আন্তর্জাতিক মহলের চাপে শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করেন লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দফিছবি: AP

নির্মম এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ৫৪টি দেশের ১২ হাজার লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করে মার্কিন ও বৃটিশ গোয়েন্দা সংস্থা৷ দীর্ঘ তিন বছরের তদন্ত শেষে গোয়েন্দারা খুঁজে পায় কারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে৷ তারা জানতে পারে বিমানের লাগেজে স্যুটকেসের মধ্যে বোমা রাখা হয়েছিলো৷ এবং এজন্য দায়ী লিবিয়ার দুজন নাগরিক৷ তবে লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মোয়াম্মার গাদ্দাফি ওই দুই নাগরিককে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানালে এ নিয়ে লিবিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের টানাপোড়েন শুরু হয়৷ তবে শেষ পর্যন্ত বশ মানেন প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফি৷ ২০০১ সালে স্কটল্যান্ডের একটি আদালত লকারবির ঘটনার জন্য লিবিয়ার সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবদেল বাসেত মোহাম্মদ আল মেগরাহিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়৷ অপর অভিযুক্ত আল আমিন খালিফা ফিমাহকে মুক্তি দেয় আদালত৷ তবে ২০ বছর পার হয়ে গেলেও লকারবির মানুষের মনে সেদিনের ঘটনা এখনও একটি ভয়ঙ্কর স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে৷