1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিশরে নতুন সংবিধান

১ ডিসেম্বর ২০১২

রবিবার মিশরের সর্বোচ্চ আদালত সাংবিধানিক সম্মেলনের বৈধতা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে৷ তার আগেই তাড়াতাড়ি যেভাবে নতুন সংবিধানের খসড়া অনুমোদন করা হল, তা’কে প্রেসিডেন্ট মুর্সি এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের চাল বলে মনে করছে বিরোধীরা৷

https://p.dw.com/p/16twp
ছবি: AP

সংবিধানের ২৩৪টি সূত্রের প্রতিটির উপর এককভাবে ভোট গ্রহণ করা হয়, এবং সব ক'টিই অনুমোদিত হয় প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে৷ তার একটা কারণ, সাংবিধানিক সম্মেলনের উদারপন্থি এবং খ্রিষ্টান সদস্যরা ১৬ ঘণ্টার ম্যারাথন অধিবেশনটি বর্জন করেন৷ অধিবেশন শেষ হয় শুক্রবার ভোরে৷

এই খসড়া এবার যাবে প্রেসিডেন্ট মুর্সির কাছে এবং তিনি ৩০ দিনের মধ্যে নতুন সংবিধানের খসড়া সংক্রান্ত গণভোট আয়োজনের নির্দেশ দেবেন, বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ওদিকে গত সপ্তাহে মুর্সি একটি ডিক্রি জারি করে নিজের ক্ষমতা বিপুলভাবে বাড়িয়ে নিয়েছেন৷ তাঁর জারি করা আদেশ-অনুশাসনের উপর আদালতের বিচার চলবে না, এই হল সেই ডিক্রির মর্ম৷ সে'যাবৎ মুর্সি আদালতের বিচারকদের বিক্ষোভের সম্মুখীন৷

খানিকটা সেই বিক্ষোভের কারণেই বিরোধীদের আশা জেগেছিল, মুর্সি হয়তো এবার অন্তত খানিকটা আপোশের দিকে ঘুরবেন৷ মুর্সি কিন্তু তার ঠিক উল্টোদিকে গিয়ে সাত তাড়াতাড়ি সংবিধানের খসড়া পাস করিয়ে নিলেন৷ যার ফলে মিশরে ইসলামপন্থি এবং উদারপন্থি ও ভিন্নধর্মাবলম্বিদের মধ্যে বিরোধ আরো চরমে উঠতে চলেছে৷

Ägypten Präsident Mohammed Mursi
মিশরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুর্সিছবি: AP

নতুন সংবিধানের এই খসড়ায় শরিয়া আইন কড়াভাবে চালু করার দাবিটি তুলে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাতিল ১৯৭১'এর সংবিধানে শরিয়া সংক্রান্ত যে সূত্রটি ছিল, তা রাখা হয়েছে: ‘‘শরিয়ার নীতিমালা হবে মিশরে আইন প্রণয়নের মূল উৎস''৷ মিশরের উদারপন্থি এবং মানবাধিকার আন্দোলনকারীদের উদ্বেগ হল, এই সংবিধান চালু হলে ধর্মের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবে৷ কেননা সংবিধানের ৪৩ নম্বর সূত্রে সকলকে ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতা দেওয়া হলেও, ধর্ম পালনের স্বাধীনতা শুধুমাত্র ‘‘ঈশ্বরীয় ধর্ম''-গুলিকে, অর্থাৎ ইসলাম, ইহুদিধর্ম এবং খ্রিষ্টানধর্মকে দেওয়া হয়েছে৷ অর্থাৎ মিশরের বাহাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, এমনকি শিয়া মুসলিমরা সমানাধিকার পাবে কিনা, তা বলা শক্ত৷

এ ছাড়া মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিংবা ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত অনেক সূত্রকে প্রায় পিনাল কোড বা শাস্তিদানের বিধি বলে মনে হয়: এ'কথা বলেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সংগঠনের মিশর বিভাগের পরিচালক হেবা মোরাইয়েফ৷ ‘কোনো মানুষের অপমান করা চলবে না', এই সূত্রের বলে প্রেসিডেন্টের সমালোচনা নিষেধ করা যেতে পারে৷ আবার ভালোর দিকে এ'টা বলা চলে যে, মুবারক যেখানে তিন দশক ধরে মিশর শাসন করেছিলেন, নতুন সংবিধানে সেই প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাসীন থাকার কাল দু'টি কর্মকাল বা আট বছরে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে৷ এমনকি সামরিক বাহিনীর উপরেও কিছুটা অন্তত তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷

সব মিলিয়ে মুর্সির বর্তমান অভিযানের একটি ফল হয়েছে এই যে, মিশরের সব উদারপন্থি বিরোধী গোষ্ঠীগুলি মুর্সির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে একত্র হয়েছে৷ একাধিক বেসরকারি সংবাদপত্র আগামী মঙ্গলবার প্রকাশনা বন্ধ রাখবে৷ বুধবার কিছু বেসরকারি টেলিভিশন সংস্থাও সেই পন্থায় প্রতিবাদ জানাবে৷ তাহরির স্কয়ারে একটানা প্রতিবাদও যেন আরব বসন্তের সেই তপ্ত দিনগুলোর কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে৷ অপরদিকে মুসলিম ব্রাদারহুডও মুর্সির সমর্থনে তাদের ব়্যালি চালিয়ে যাচ্ছে৷

কিন্তু তাহরির স্কয়ারের আন্দোলনকারীদের মুখে ইতিমধ্যেই শোনা যাচ্ছে, তারা বুনিয়াদিভাবে সংবিধান এবং সেই সংক্রান্ত গণভোট প্রত্যাখ্যান করবে, কেননা এই সাংবিধানিক সম্মেলন মিশরীয় সমাজের সব অংশের প্রতিভূ নয়৷ অপরদিকে তাদের মুখে সেই ধরণের একনায়কত্ব বিরোধী স্লোগান শোনা যাচ্ছে, যা একদিন ঐ তাহরির স্কয়ারেই মুবারকের বিরুদ্ধে ধ্বনিত হয়েছিল৷

এসি / এসবি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য