1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সেতু ধ্বংস

২৬ জানুয়ারি ২০১৩

আক্রমণ সামাল দিতে একটি সেতু ধ্বংস করে দিয়েছে মালির ইসলামি জঙ্গিরা৷ পরিণামে নতুন একটা অঞ্চল দিয়ে আক্রমণের পথ আপাতত বন্ধ৷ ফ্রান্স ও জঙ্গি বিরোধী অভিযানে সক্রিয় অন্য দেশগুলোর সেনাবাহিনীর জন্য এ এক বড় ধাক্কা৷

https://p.dw.com/p/17RZx
ছবি: FRED DUFOUR/AFP/Getty Images

গত বছরে মালির উত্তরাঞ্চল দখল করে নেয় আল-কায়েদার সহযোগী বলে পরিচিত ইসলামি জঙ্গিরা৷ রাজধানী বামাকোর দিকে এগোচ্ছিল তারা৷ এ অবস্থায় মালি সরকার সামরিক সহায়তা চাইলে বিদ্রোহীদের দমন করার জন্য ফ্রান্সও সেনাদল পাঠায়৷ সেই থেকে গত তিন সপ্তাহ ধরে জোর যুদ্ধ চলছে মালিতে৷ যু্দ্ধে বৃহস্পতিবার বড় একটা সাফল্য পেয়েছিল ফরাসি বাহিনী৷ জঙ্গি অধিকৃত অঞ্চলে বোমা হামলা চালিয়ে জঙ্গিদের দুটি ঘাঁটি নিশ্চিহ্ন করে দেয়৷ সেই হামলায় জঙ্গিদের প্রচুর খাবার এবং অস্ত্রও ধ্বংস হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে৷

তবে পরের দিন কৌশলগতভাবে বড় এক পাল্টা আঘাত হেনেছে জঙ্গিরা৷ আফ্রিকার সম্মিলিত বাহিনী মালির পূর্বাঞ্চলে নাইজারের সীমান্তের কাছের তাসিগাতে অবস্থানরত জঙ্গিদের ওপর হামলা শুরু করার পরিকল্পনা করছিল৷ কিন্তু সেই অঞ্চলে যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে জঙ্গিরা৷ সেই পথে যাওয়ার একমাত্র সেতুটি বোমার আঘাতে ধ্বংস করে দিয়েছে জঙ্গিরা৷ আগের দিন এর কাছের দুটি ঘাঁটিতেই হামলা চালিয়ে বড় সাফল্য পেয়েছিল ফরাসি বাহিনী৷  

তাসোগির সেতু ধ্বংস হয়ে যাবার খবর নিশ্চিত করতে গিয়ে মালির এক পরিবহন ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ইসলামি জঙ্গিরা সেতুটি ধ্বংস করেছে৷ ফলে এখন আর কেউ ওই পথে নাইজারে যেতে পারবে না, গাও-এ আসতেও পারবেনা৷''

এদিকে জঙ্গি দমনের জন্য চাড থেকেও দু'হাজার সেনা সদস্যের এসে যোগ দেয়ার কথা৷ চাড অবশ্য পশ্চিম আফ্রিকার ১৫টি দেশ নিয়ে গড়া জোট একোয়াসের অন্তর্ভুক্ত নয়৷ একোয়াস তার সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে আরো সাড়ে চার হাজার সৈন্য চেয়েছে৷ এ নিয়ে ফ্রান্স ভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা অ্যাকশন এগেন্সট হাঙ্গার (এসিএফ) শঙ্কিত৷ তাদের আশঙ্কা, মালির পূর্বাঞ্চলে আরো সৈন্য মোতায়েন করে রণক্ষেত্রের আরো বিস্তার ঘটালে মালিতে খুব প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করার পথ বন্ধ হয়ে যাবে৷

Maili Sankore Moschee in Timbuktu
টিম্বাক্টু এখনও বহু দূর, গাও বিজয়ও অনিশ্চিতছবি: Getty Images

এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিশুরা৷ এমনিতেই মালির শিশুদের খুব বড় একটা অংশ মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে৷ এসিএফ-এর হিসেব অনুযায়ী অন্তত ২০ হাজার শিশুর পুষ্টিহীনতার কারণে এখন জীবনই বিপন্ন৷ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য আমদানি স্বাভাবিক গতিতে করা কঠিন৷ এ অবস্থায় বিদেশি সহায়তা জরুরি৷ সেই প্রয়োজন অনেকটাই মেটাচ্ছে এসিএফ৷ কিন্তু বেসরকারি সংস্থাটির আশঙ্কা, নাইজার সীমান্ত দিয়ে মালিতে যাবার পথ বন্ধ হয়ে গেলে পরিস্থিতি অনেক ভয়াবহ হয়ে যেতে পারে৷ এক বিবৃতিতে এসিএফ বলেছে, ‘‘মালিতে শিশুদের পুষ্টিহীনতা এখন মারাত্মক দিকে যাচ্ছে৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে ১৫ বছরের কম বয়সি অন্তত ২০ হাজার শিশু খুব স্বাস্থ্য সংকটে পড়বে৷''

এসিএফ-এর কর্মকর্তা লুসিলে গ্রোশান এ সময় আরো জানান, মালিতে কোনো কোনো শিশু খাদ্যের দাম শতকরা ৩৩ ভাগ বেড়েছে৷ গত নয় মাসে জ্বালানি তেলের জোগান ৬৬ ভাগ কমেছে বলেও জানান তিনি৷ মালির জনগণের বর্তমান অবস্থা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সেখানে অধিকাংশ মানুষ দিনেরটা দিনে এনে খেয়েই বেঁচে আছে৷''

এসিবি/এসবি (এএফপি)