1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভেনিসের কার্নিভালের মাস্কের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

১৯ এপ্রিল ২০২৪

নেপোলিয়ানের ফরমানে হারিয়ে যাওয়া কার্নিভাল আজ ভেনিসের অন্যতম সেরা আকর্ষণ৷ সেই উৎসবে ব্যবহৃত মাস্ক সারা বছর পর্যটকদের পছন্দের সুভেনির৷ হাতে গোনা কিছু মানুষ আজও সেই ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রেখেছেন৷

https://p.dw.com/p/4ezRn
ভেনিস কার্নিভালের মাস্ক
ভেনিসের কার্নিভালের সেরা বৈশিষ্ট্যই হোল মাস্ক বা মুখোশ৷ ঐতিহ্যবাহী ভিনিশিয়ান মাস্ক তৈরির কাজ বর্তমানে খুব কম মানুষই জানেনছবি: Gabriel Bouys/AFP

ভেনিসের কার্নিভালের সেরা বৈশিষ্ট্যই হোল মাস্ক বা মুখোশ৷ কিন্তু সেই ঐতিহ্য কি আজ হুমকির মুখে? হাতে করে ঐতিহ্যবাহী ভিনিশিয়ান মাস্ক তৈরির কাজ বর্তমানে খুব কম মানুষই জানেন৷ টোবিয়া দালোস্তো তাঁদেরই একজন৷

মাস্ক উপহ্রদের কোলে এই শহরের প্রতীক হয়ে উঠেছে৷ পর্যটকদের সুভেনির হিসেবেও সেই মাস্কের চাহিদা রয়েছে৷ সেগুলির মধ্যে বেশিরভাগই বিদেশে তৈরি সস্তার নকল৷ এর ফলে শিল্পী ও কারিগরদের ক্ষতি হচ্ছে৷

শহরের প্রাচীন অংশে এক ওয়ার্কশপে টোবিয়া দালোস্তো নিজের হাতে প্রতিটি মাস্ক তৈরি করেন৷ প্লাস্টারের এক ছাঁচ দিয়ে গোটা প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ তার মধ্যে নানা স্তরে একাধিক উপকরণ বসিয়ে মাস্ক তৈরি করা হয়৷ টোবিয়া জানালেন, ‘‘প্রথম স্তরটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেটাই সবচেয়ে বাইরে দেখা যাবে৷ সেটা পশমের তন্তু দিয়ে তৈরি নরম কাগজ৷ মাস্কের সব খুঁটিনাটী বৈচিত্র্য তুলে ধরা জরুরি৷ হাতের কাজ যত নিপুণ হবে, মাস্কের আকারও তত স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট হবে৷''

ভেনিসের মাস্ক ও টোবিয়া দালোস্তো

একটি মাস্কের কাজ শেষ করতে প্রায় এক সপ্তাহ সময় লাগে৷ টোবিয়া সোনার তবকের নকল ব্যবহার করেন৷ ২৭ বছর বয়সি টোবিয়া তাঁর বাবা গুয়ালতিয়েরো-র কাছ থেকে সেই কাজ শিখেছেন৷ সেই সৃজনশীল প্রক্রিয়া ও মাস্কের গুরুত্বকে ঘিরে দুজনের মনেই বেশ আবেগ রয়েছে৷ গুয়ালতিয়েরো মনে করেন, ‘‘মাস্ক তৈরির কাজ অনেকটা একজন মানুষ গড়ে তোলার কাজের মতো৷ এ যেন তার ইতিহাস, তার অন্তরাত্মা, তার গভীর সত্তা, তার প্রেরণা ধরে রাখার প্রচেষ্টা৷ এ ক্ষেত্রে অন্তর ও বাহির, দুটোই গুরুত্বপূর্ণ৷''

টোবিয়া দালোস্তো এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘অনেকে মাস্ক দিয়ে নিজের মুখ ঢাকার চেষ্টাকে নেতিবাচক ও ভুয়া মনে করে৷ অথচ ঐতিহ্য অনুযায়ী ভেনিসের মাস্ক ঠিক এর বিপরীতটাই করে৷ নিজের পরিচয় গোপন করে, ছদ্মবেশ ধারণ করে নিজের অন্তরের অভিব্যক্তি তুলে ধরার সুযোগ পাওয়া যায়৷ অর্থাৎ মাস্ক নিজেকে লুকানোর বদলে নিজেকে দেখানোর একটা উপায়৷''

ভেনিসে মাস্কের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে৷ ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ধনী এই বাণিজ্য শহরের বাসিন্দারা নিজেদের মুখ ঢাকতে শুরু করেন৷ এভাবে নিজের পরিচয় গোপন করে কার্নিভালের সময় সাময়িকভাবে সামাজিক গণ্ডী দূর করতে পারতেন তাঁরা৷ বাউটা মাস্ক অন্যতম ঐতিহাসিক মডেল, যা দিয়ে গোটা মুখচ্ছবি ঢেকে ফেলা যায়৷ টোবিয়া বলেন, ‘‘দেখতে পুরুষালি হলেও যে কেউ সেটা পরতে পারে৷ পুরুষ, নারী, ধনী, দরিদ্র, ব্যবসায়ী, যাজক – যে কেউ৷ কার্নিভালে দীর্ঘদিন ব্যবহৃত আরেকটি মাস্কের নাম মোরেতা৷ সেটা নারীসুলভ মাস্ক৷ যেমনটা দেখছেন, সেটির মধ্যে কোনো সুতা, কোনো কাঠি নেই৷ সেটা কীভাবে পরা হতো? সেই রহস্য পেছনে লুকিয়ে রয়েছে৷ ছোট এই বোতাম কামড়ে ধরে সেটা পরা যেতো৷''

১৭৯৭ সালে নেপোলিয়ান ভেনিস দখল করার পর কার্নিভাল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন৷ তখন  মাস্কও বিস্মৃতির গহ্বরে তলিয়ে গেল৷ সেই ১৯৭০-এর দশকে গুয়ালতিয়েরো দালোস্তো একদল শিল্পীর সঙ্গে মিলে সেই ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে আনেন৷ গুয়ালতিয়েরো দালোস্তো বলেন, ‘‘ভেনিসের আরো বয়স্ক কারিগরদের সঙ্গে মিলে আমরা টিম হিসেবে অনেক ধরনের চেষ্টা চালিয়েছিলাম৷ তাদের পেশা একেবারে ভিন্ন হলেও মাস্ক তৈরির ক্ষেত্রে তাঁদের আইডিয়া ও তাঁদের ক্ষমতা কাজে লাগানো হয়েছে৷''

দালোস্তো পরিবারের তৈরি মাস্কের দাম ৩০ থেকে কয়েক হাজার ইউরো হতে পারে৷ কার্নিভালের অতিথি, শিল্পপ্রেমি ও চলচ্চিত্র প্রোডাকশনের সঙ্গে যুক্ত মানুষ তাদের গ্রাহক৷

গ্যোনা কেটেল্স/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান