রহস্যময় রোগ
২০ এপ্রিল ২০১২দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট দেশ ভিয়েতনাম৷ দেশটির মধ্য অঞ্চলের কুয়াঙ্গানগাই প্রদেশে রয়েছে বাটো জেলা৷ বাটো'র জন পরিষদের সভাপতি লে হান ফং সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, শিশু এবং যুবকরাই বেশি সংখ্যায় আক্রান্ত হচ্ছে এক অজানা রোগে৷ উচ্চ মাত্রায় জ্বর দিয়ে এই রোগের হানা শুরু হচ্ছে৷ এছাড়া দেখা যাচ্ছে ক্ষুধামন্দা ও হাত-পায়ে চাকা চাকা লাল ফুসকুড়ি৷ এসব লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরপরই দ্রুত রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না হলে যকৃতসহ অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগের সংক্রমণ৷ ফলে একসাথে একাধিক প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু হচ্ছে৷
জানা গেছে, ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে প্রথম এই রোগের প্রকোপ দেখা যায়৷ তবে গত বছরের অক্টোবর নাগাদ এর সংক্রমণ কমে আসে৷ কিন্তু এ বছরের মার্চ মাস থেকে আবারও এই রোগের সংক্রমণ বাড়তে থাকে৷ গত ২৭শে মার্চ থেকে ৫ই এপ্রিল সময়ের মধ্যে ৬৮ জনের দেহে এই রোগ ধরা পড়ে৷ এতে অন্তত আট জন প্রাণ হারায়৷ বাটো জেলার বাডিয়েন গ্রামে এই রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি হারে লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ উল্লেখ্য, কুয়াঙ্গানগাই প্রদেশের সবচেয়ে দরিদ্রতম জেলা বাটো এবং ঐ অঞ্চলে প্রধানত রে নামক আদি জাতিগোষ্ঠীর বসবাস৷
হান ফং আরো জানান, এই অজানা রোগের প্রকোপে অসুস্থ হয়ে প্রায় একশ' জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে৷ এদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ তবে যাদের দেহে এই রোগের লক্ষণগুলো স্বল্পমাত্রায় ধরা পড়েছে তাদেরকে নিজ বাড়িতেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে৷ রোগীকে দ্রুত শনাক্ত করে চিকিৎসার আওতায় আনা হলে সহজেই সুস্থ করে তোলা সম্ভব হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ফং৷ তবে ২৯ জনের দেহে নতুন করে এই রোগ সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে৷
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এপ্রিল মাসের শুরুতে বাটো জেলায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের একটি বিশেষ দল পাঠিয়েছে৷ তবে তারা এখন পর্যন্ত এই রোগের কারণ খুঁজে পাননি৷ ফলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই রোগের কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা উদ্ভাবনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা - ডাব্লিউএইচও এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের সহায়তা চেয়েছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, এপি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ