1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বৃষ্টিপাতের আদল বদলে যাচ্ছে, মার খাচ্ছে কৃষি

২৭ নভেম্বর ২০১১

বদলে যাচ্ছে আবহাওয়ার চালচিত্র৷ দ্রুত বদলাচ্ছে পরিবেশ৷ বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে মাথায় হাত আফ্রিকার বহু দেশের কৃষকদের৷ কারণ, বৃষ্টিপাতের চেহারাটাই এখন অচেনা হয়ে গেছে৷ দক্ষিণ আফ্রিকা, জাম্বিয়া, মালাওয়ি, সর্বত্র এক ছবি৷

https://p.dw.com/p/13Hwz
বৃষ্টির ধাঁচ বদলে যাচ্ছে, ফসলে তার প্রভাব পড়বেইছবি: AP

গত কয়েক বছরে কৃষকদের মুখে হাসি ছিল এসব দেশগুলোতে৷ মূলত তাঁরা ভুট্টার চাষ করেন৷ আর ভুট্টা হল প্রধান খাদ্য এইসব দরিদ্র দেশে৷ ব্যাপক পরিমাণে উৎপাদিত সেই ভুট্টার জন্যই খাদ্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা গিয়েছিল এতদিন৷ কিন্তু এবার?

এবার সেই ছবিটা দ্রুত বদলে যাচ্ছে৷ কারণ, ভুট্টার চাষের জন্য গ্রীষ্মের যে সময়টা বৃষ্টির প্রয়োজন হয়ে থাকে সেই বৃষ্টিপাতের আদলটা সম্পূর্ণ বদলে গেছে এ বছরে৷ যার ফলে চাষবাসের সমূহ ক্ষতি হচ্ছে৷ উদাহরণ হিসেবে মালাওয়ির কথাই ধরা যাক৷ বিগত কৃষি মরশুমে এদেশের কৃষকরা সাড়ে তিন মিলিয়ন টন ভুট্টা ফলিয়েছিলেন৷ তাই এই ২০১১ / ২০১২ সালের কৃষি মরশুমের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল ৩.৮ মিলিয়ন টন শষ্যের৷ কিন্তু বিধি বাম৷ অক্টোবর মাসে, যখন মাঠে চারা রোওয়া হয়ে থাকে, সে সময়ে যে পরিমাণে বৃষ্টির দরকার হয়, তার ছিটেফোঁটাও হয়নি৷ বরং এক খরার মুখে পড়েছে গোটা দেশটা৷ তাই বোঝাই যাচ্ছে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই৷

Bäume Abholzung Brandrodung von Regenwald NO FLASH
প্রকৃতিকে ধ্বংস করার পরিণাম বুঝতে হচ্ছে মানুষকেছবি: picture-alliance/OKAPIA KG,Ge

এর কারণ হল বৃষ্টির চালচিত্রের পরিবর্তন৷ মালাওয়ির কৃষক ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স জাম্বে বলছেন, বাৎসরিক বৃষ্টির যে ধারণা রয়েছে আমাদের, তা সম্পূর্ণ বদলে গেছে৷ তাই এই অবস্থা৷

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের লিমপোপো নদীর অববাহিকা অঞ্চলের যেসব দেশ মূলত বৃষ্টিনর্ভর কৃষির ওপরে বেঁচে রয়েছে, তারা সকলেই এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত এখন৷ বতসোয়ানার একাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, মোজামবিক এবং জিম্বাবোয়ে ইত্যাদি দেশ পড়ছে এই তালিকায়৷

দক্ষিণ আফ্রিকা দেশটি এই এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ভুট্টার চাষ করে থাকে৷ কিন্তু সেদেশে এই বৃষ্টি চালচিত্রের পরিবর্তন ইতিমধ্যেই প্রভাব ফেলেছে তাদের কৃষির ওপরে৷ ২০১০/১১ সালের মরশুমে বৃষ্টিপাত প্রত্যাশিত সময়ের এতটাই আগে এসেছে যে ভুট্টার চাষ করাই যায়নি সেভাবে৷ একই পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে জাম্বিয়াতেও৷ সেখানেও বৃষ্টিপাত ঘটেছে প্রত্যাশিত সময়ের বহু আগে৷ জাম্বিয়ার জাতীয় কৃষক ইউনিয়নের মুখপাত্র কেভিন কালেয়ি সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, চলতি বছরে আমরা ৩.১ মিলিয়ন টন ভুট্টা উৎপন্ন করে রেকর্ড গড়ার স্বপ্ন দেখছিলাম, কিন্তু কৃষকরা এত তাড়াতাড়ি বৃষ্টি আদৌ প্রত্যাশা করেন নি৷ এই অকাল বর্ষণে আমাদের এক মিলিয়ন টনেরও বেশি ফসল স্রেফ নষ্ট হবে৷

আসলে বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং সেইসঙ্গে একের পর এক বনাঞ্চল নষ্ট করার কুফল ফলতে শুরু করেছে পরিবেশের ওপর৷ বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তার ফলে বৃষ্টিপাতের যে চালচিত্র ছিল, তা পুরো বদলে যাচ্ছে৷ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসল এবং মার খাচ্ছেন কৃষকরা৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক