1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘বুদ্ধিমান’ গাড়ি

এলকে শোয়াব / এসি২৫ অক্টোবর ২০১৩

মোটর গাড়ির চকচকে নতুন দুনিয়ায় গাড়িরাও আজ দেখতে শিখছে, শুনতে শিখছে৷ তাদেরও আজ সেন্সর, রাডার, ক্যামেরা লাগানো থাকে৷ ডিজিটাল নেটওয়ার্কিং-এর কারণে গাড়িরাও ক্রমেই আরো বুদ্ধিমান হয়ে উঠছে৷

https://p.dw.com/p/1A6Fc
ছবি: JOHANNES EISELE/AFP/Getty Images

প্রযুক্তিগত নানা সুবিধা ব্যবহার করে চালক বিনা ভুলে এবং বিনা বিপদে গাড়ি চালাতে পারেন৷ যেমন ‘ব্লাইন্ড স্পট' বা অদৃশ্য কোণ থেকে কোনো গাড়ি এলে গাড়িই চালককে সাবধান করে দেয়৷ অথবা গাড়ি তার লেন ছাড়বার উপক্রম করলে স্টিয়ারিং হুইল কাঁপতে শুরু করে এবং নিজে থেকেই ঘুরে গিয়ে ভুলটা ঠিক করে নেয়৷ এ সব ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই আছে এবং আরো নির্ভরযোগ্য হচ্ছে৷ এমনকি চালক ক্লান্ত হয়ে পড়লে, গাড়ি তাও বুঝতে পারে৷ মার্সিডিজ-বেনৎস কোম্পানির ইয়খেন হ্যার্মান বলেন, ‘‘চালকের ক্লান্তি ধরার জন্য প্রধান সেন্সরটি হলো ‘স্টিয়ার অ্যাঙ্গল সেন্সর'– অর্থাৎ চালক যেভাবে স্টিয়ারিং ঘোরায় তা থেকে তার গাড়ি চালনার ধরন আন্দাজ করা যায়৷ আবার একই মানুষ নানাভাবে গাড়ি চালায়, যেমন মোটরওয়ে-তে চালানোর সময়৷ চালক ক্লান্ত হয়ে পড়লে আগে আমরা তাকে সাবধান করে দিতাম না৷ আজ গাড়িগুলো ন্যাভিগেটরের সঙ্গে যুক্ত থাকায় চালককে বলে দেওয়া যায়, কয় কিলোমিটারের মধ্যে থামার জায়গা আছে৷''

আন্তর্জাতিক গাড়ি প্রদর্শনীতে স্বচক্ষে দেখা যায়, বিপদ দেখা দিলে একটা গাড়ি ৫০ কিলোমিটার গতিতে কীভাবে আচমকা ব্রেক করতে পারে৷ লেজার আর ক্যামেরা স্বল্প দূরত্ব থেকেও লক্ষ্যটা চিনে নেয়৷ গাড়ির পার্টস সরবরাহকারী কোম্পানি কন্টিনেন্টালের মার্কুস স্নাইডার সিটি ট্র্যাফিকে এমার্জেন্সি ব্রেক সিস্টেমের উপযোগিতা নিয়ে গবেষণা করছেন৷ স্নাইডার বলেন, ‘‘ধরুন আপদকালীন ব্রেক সিস্টেমটা যদি সম্ভাব্য দুর্ঘটনার অনেক আগে থেকেই সক্রিয় হয়, তাহলে চালক একদিন না একদিন ভাববেন, আমার ও প্রযুক্তির দরকার নেই, কেননা স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কিংবা ব্রেক করার জন্য আমার হাতে যথেষ্ট সময় থাকছে৷ কাজেই এ ধরনের চালক-সহকারী-প্রণালী খুব সাবধানে অ্যাডজাস্ট করতে হয়, যাতে তা ঠিক তখনই ব্রেক কষবে, যখন চালকের দুর্ঘটনা এড়ানোর আর কোনো পথ নেই৷''

IAA Frankfurt 2013 Dieter Zetsche Daimler
ছবি: Reuters

অভিনব এই সব নতুন প্রযুক্তি প্রথমে আসে দামি মডেলগুলোতে, পরে কমদামি মডেলগুলোও তা থেকে লাভবান হয়৷ জার্মান অটোমোবাইল ক্লাব এডিএসি দেখেছে, চালক-সহকারী-প্রণালীগুলির ফলে দুর্ঘটনা সত্যিই কমে যায়৷ কিন্তু এই নতুন ডিজিটাল জগতের সব খুঁটিনাটি সামলানো চালকের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়তে পারে৷ এডিএসি-র পরীক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগের বেটিনা হিয়েরাট বলেন, ‘‘চালক-সহকারী-প্রণালীর কাজ হলো চালককে সংকটের মুহূর্তে সাহায্য করা৷ কাজেই চালককে বিক্ষিপ্ত না করাটা জরুরি: সতর্কতামূলক আলো খুব চকমকে হলে চলবে না; খুব তাড়াতাড়ি জ্বললে-নিভলে চলবে না৷ তাহলে চালক গাড়ির কথা ভুলে প্রণালী নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে৷''

চালককে বিক্ষিপ্ত করার আরেকটি সহজ পন্থা হলো স্মার্টফোন৷ সে বিপদ এড়াতে ইন্টারনেট-যুক্ত গাড়িগুলিতে অ্যাপ বসানোর ব্যবস্থা রয়েছে, যে অ্যাপ দিয়ে গান শোনাও চলে আবার চালককে সতর্ক করাও চলে৷

ব্রিটেনের নামি-দামি বেন্টলে গাড়ির কোম্পানি-ম্যানেজার গোত্রীয় গ্রাহকদের জন্য গাড়ির ভিতরেই ইন্টারনেট ছাড়া একটি ট্যাবলেট রাখা আছে, যা দিয়ে ড্যাশবোর্ডের রেডিও-র প্রোগ্রামও বদলানো চলে৷ এ ধরনের গাড়িতে সামনে বসে ড্রাইভার, পিছনে মালিক বা ম্যানেজার সাহেব৷ যাবতীয় কম্ফর্ট আর লাক্সারি নিয়ে এই গাড়িতে লম্বা পথ পাড়ি দেওয়া যায়৷

বাকিদের ক্ষেত্রে থাকছে এমন একটি গাড়ির স্বপ্ন, যা নিজেই নিজেকে চালাতে পারে৷ সে গাড়ি সেন্সর আর রাডারের মাধ্যমে পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে যুক্ত এবং সুবিশাল পরিমাণ ডাটা মুহূর্তে বিশ্লেষণ করতে সক্ষম৷ মার্সিডিজ বেনৎস কোম্পানির ইয়খেন হ্যার্মান বলেন, ‘‘মানুষ এমন সব পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারে, যেগুলোর সঙ্গে সে প্রথমবার মুখোমুখি হচ্ছে৷ এ কাজটা আজকের কোনো বুদ্ধিমান যন্ত্রের পক্ষেও করে ওঠা সম্ভব নয়৷''

এছাড়া ভবিষ্যতের বুদ্ধিমান গাড়িও গাড়ি চালানোর মজাটা বুঝতে পারবে কিনা সন্দেহ!