1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হুমায়ূনের ‘দেয়াল’

২০ জুলাই ২০১২

সদ্য পরলোকে যাওয়া জনপ্রিয় কথা-সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’৷ ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/15c2B
ছবি: Mustafiz Mamun

উপন্যাসটি প্রকাশের আগে হুমায়ূন আহমেদ তার একটা কপি পড়তে দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামকে৷ বইটি পড়ে অধ্যাপক মনজুর হুমায়ূনকে কিছু বিষয়ে সংশোধনীর কথা জানিয়েছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘উপন্যাসটি লেখা শেষে তিনি (হুমায়ূন আহমেদ) আমাকে প্রেস কপি পড়তে দিয়েছিলেন৷ সেটাতে কিছু কিছু ভুল বা অসঙ্গতি ছিল৷ আমি সেগুলো ঠিক করার পরামর্শ দিয়েছিলাম৷''

অধ্যাপক মনজুর বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে কবিতা লেখা হলেও কেউ কখনো সাহিত্য রচনা করেনি৷ হুমায়ূন আহমেদ সেটা চেষ্টা করেছেন৷ নিউ ইয়র্কে তিনি যখন চিকিৎসা নিচ্ছিলেন, সেসময় তাঁর হাতে অনেক সময় ছিল৷ তাই তিনি ১৯৭৫ সালের ঘটনা নিয়ে উপন্যাস লিখতে শুরু করেন৷ তবে তার আগে এ নিয়ে তিনি প্রচুর গবেষণা করেছিলেন, বই পড়েছিলেন৷''

সম্প্রতি আদালতের দেয়া এক রায়ে উপন্যাসটির কিছু কিছু অংশ আবারো নতুন করে লিখতে বলা হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মনজুর বলেন, ‘‘পুনর্লিখনের সময়টা হুমায়ূন আহমেদ পাবেন কীনা তা নিয়ে আমার কাছে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন৷ এখন তাঁর মৃত্যুর কারণে সেই সুযোগ আর থাকলো না৷ আমি আশা করবো, বইটি প্রকাশের ক্ষেত্রে যদি কোনো বাধা থাকে তাহলে সেটা অপসারিত হোক৷ কারণ, আমাদের মনে রাখতে হবে এটি তাঁর শেষ উপন্যাস৷ শেষ উপন্যাসে তিনি তাঁর দেশের ইতিহাসে প্রত্যাবর্তন করেছেন৷ সেজন্য বইটার একটা বিশেষ মূল্য আছে বলে আমি মনে করি৷''

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে হুমায়ূন আহমেদের মনে উচ্ছ্বাস ছিল৷ সেটা, তাঁর বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন সেজন্য নয়৷ এমনিতেই তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাবতেন৷ তাই মুক্তিযুদ্ধকে সাহিত্যের ভিতর, চলচ্চিত্রের ভিতর নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তাঁর একটা বেশ বড় ভূমিকা ছিল৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, বাংলা সাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদের প্রথম অবদান একটা বিশাল পাঠক গোষ্ঠী তৈরি করা৷ ‘‘গল্প বলার একটা নতুন ধারার প্রবর্তন করেছেন তিনি৷ প্রাঞ্জল ভাষায় অত্যন্ত সুক্ষভাবে নানান চিন্তাভাবনার সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন, যেন সবাই সেটা বুঝতে পারে৷''

মনজুরুল ইসলাম বলেন, হুমায়ূন শুরু করেছিলেন উপন্যাস দিয়ে৷ কিন্তু তাঁর ছোটগল্পগুলো ছিল অসাধারণ৷ ‘‘ব্যক্তিগতভাবে আমার তাঁর ছোটগল্পগুলোই বেশি ভালো লেগেছে৷'' অধ্যাপক মনজুর বলেন, টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখে হুমায়ূন একটা নতুন ধারা তৈরি করেছিলেন, যেটা এখন অনুসরণ করছেন অনেক তরুণ নাট্যকার৷ এছাড়া, ‘‘শেষের দিকে তিনি ছবিও এঁকেছেন৷''

‘‘এক কথায় বলা যায়, তিনি আমাদের যুগের ভাষাগুলো বুঝতে পারতেন৷ তিনি লিখিত ভাষাকে পরিবর্তন করেছেন, পরিবর্তনের চেষ্টা করেছেন চলচ্চিত্রের ভাষাকেও৷'' বলেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য