1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমঝোতা আলোচনা

২৪ মে ২০১২

ইরানের সম্ভাব্য পরমাণু অস্ত্র তৈরির কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ দূর করতে ইরানের সাথে সমঝোতা আলোচনা করছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী৷ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য এবং জার্মানি একটি সমঝোতা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে৷

https://p.dw.com/p/150yF
ছবি: irna

ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তারা তাদের জ্বালানি চাহিদা মেটানো এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রয়োজনে পরমাণু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে৷ কিন্তু পশ্চিমা গোষ্ঠীর আশঙ্কা, ইরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির দিকে এগুচ্ছে৷ ইরানকে তাই পরমাণু কর্মসূচি থেকে ফেরাতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী৷ তবে প্রায় দেড় বছর আগে উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা আলোচনা থমকে দাঁড়ায়৷ এরপর গত এপ্রিলে আবারও ইস্তানবুলে বসে ইরানের সাথে ছয় জাতির আলোচনা৷ ইস্তানবুল আলোচনার পরবর্তী ধাপ হিসেবে বুধবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অনুষ্ঠিত হলো ইরান ও ছয় জাতির প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক৷

বৈঠকে ইরানের উদ্দেশ্যে একটি সমঝোতা প্রস্তাব পেশ করেছেন ছয় জাতির কূটনীতিকরা৷ এতে ইরানের জন্য ২০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত করার বিষয়টির উপর জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে৷ তবে পশ্চিমা নেতাদের অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, ২০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম থেকে খুব সহজেই ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির দিকে এগুতে পারবে৷ গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, ইরানকে যেমনটি আগেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল যে, তারা তাদের কাছে থাকা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম একটি নির্দিষ্ট দেশের কাছে পাঠাবে এবং বিনিময়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার জন্য পরমাণু চুল্লিতে প্রয়োজনীয় মাত্রার ইউরেনিয়াম ইরানকে দেওয়া হবে, সে ধরণেরই প্রস্তাব আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে৷

Iran Catherine Ashton und Said Jalili
ক্যাথরিন অ্যাশ্টন (বামে) এবং সাইদ জালালিছবি: irna

অবশ্য প্রস্তাবের বিস্তারিত দাবি-দাওয়াগুলো এখনও প্রকাশ করা হয়নি৷ তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশ্টন এর মুখপাত্র মিশায়েল মান বলেছেন, ‘‘আমরা আশা করি, প্রস্তাবনার অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো ইরানের পছন্দ হবে এবং তারা এর ইতিবাচক জবাব দেবে৷'' ইস্তানবুল বৈঠকের কথা উল্লেখ করে মান বলেন, ‘‘এটি দ্বিতীয় বৈঠক৷ ইস্তানবুলে এ বৈঠকের শুরু৷ এখন আমরা বিষয়ের আরো ভেতরে গিয়ে কিছু নির্দিষ্ট দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করছি৷ তবে এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যে, আজকেই নাটকীয়ভাবে কিছু ঘটবে বলে আমি মনে করি না৷ যদি সবকিছু ঠিকমতো এগোয়, তাহলে আমরা অগ্রগতির পথে রয়েছি৷''

এদিকে, সমঝোতা আলোচনার মধ্য দিয়ে ইরান তাদের উপর আরোপিত পশ্চিমা গোষ্ঠীর নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করতে চায় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ বিশেষ করে পহেলা জুলাই থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেক্ষেত্রে পরিবর্তন প্রত্যাশা করে তেহরান, এমনটিই মনে করা হচ্ছে৷ তাই বাগদাদ বৈঠক নিয়ে আশাবাদী ইরানি কর্তৃপক্ষও৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী আলি আকবর সালেহি তাই যেমন বলেছেন, ‘‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে, সব পক্ষই বাগদাদ বৈঠককে সফল হিসেবে দেখতে চায়৷ আমরা আশা করি, দুয়েক দিনের মধ্যে আমরা ভালো খবর শোনাতে পারবো৷'' অবশ্য তেহরান চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সালেহি৷ এছাড়া ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বুধবার আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, মানববিধ্বংসী পরমাণু অস্ত্র তৈরি ইসলাম সমর্থন করে না এবং তা ইরানের প্রতিরক্ষা নীতিতেও নেই৷

অন্যদিকে, ইরান বাগদাদ বৈঠক থেকে একটি সমাধানে আসতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে মস্কো৷ রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, ‘‘আমরা পরিষ্কার ইঙ্গিত পেয়েছি যে, সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে ঐকমত্যের ক্ষেত্রে ইরান প্রস্তুত রয়েছে৷ এছাড়া চলতি সপ্তাহে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি কমিশন আইএইএ'র মধ্যস্থতায় তেহরানের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত পারচিন সামরিক স্থাপনা পরিদর্শনের সুযোগ দিতেও সম্মত হয়েছে ইরান৷ এটিকেও ‘ইতিবাচক অগ্রগতি' বলে মন্তব্য করেছে হোয়াইট হাউস৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য