বলকানে তিনদিনের সফরে গিডো ভেস্টারভেলে
৯ আগস্ট ২০১১‘‘সার্বিয়া এবং কসোভোকে অবশ্যই এটা বুঝতে হবে যে তাদের ভবিষ্যত এই ইউরোপেই নিহিত৷ এজন্য আমরা পারস্পরিক যুক্তিগ্রাহ্য স্বার্থ নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি, যার মধ্যে রয়েছে বানিজ্য সহ নানা ইস্যু৷'' - এক বছর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রথম কসোভো সফরে গিয়ে এই কথা বলেছিলেন গিডো ভেস্টারভেলে৷ সার্বিয়া ও কসোভোর মধ্যে চলে আসা দ্বন্দ্ব দূর করে একটি বিশ্বাসযোগ্য সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি৷
তবে এরপর, পরিস্থিতির যে তেমন উন্নতি হয়েছে তা বলা যায় না৷ উত্তর কসোভোর সীমান্ত এলাকাতে দুই দেশের মধ্যে বেশ উত্তেজনা চলছে৷ তার সঙ্গে যোগ হয়েছে উভয় দেশের মধ্যে শুল্ক নিয়ে বিবাদ৷ ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা ক্রমেই কমে আসছে৷
অবশ্য জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভেস্টারভেলের জন্য এই পরিস্থিতি একটি বড় সুযোগ হয়ে উঠতে পারে৷ সেটি হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে একটি সমাধানসূত্র বের করা৷ উল্লেখ্য, কসোভোর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহলের নিয়ন্ত্রণাধীন কসোভো বাহিনী এবং কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এরহার্ড ব্যুলার, যিনি সার্বিয়া এবং কসোভোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনার একটি উপায় বের করার চেষ্টা করছেন৷ তিনিই সেখানকার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করবেন ভেস্টারভেলের কাছে৷ কসোভো নিয়ে যতদিন না একটি রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত সেদেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব কসোভো বাহিনীর হাতে৷ কিন্তু সার্বিয়া কিংবা কসোভো কারো পক্ষ থেকেই এখন পর্যন্ত তেমন আশাব্যঞ্জক কিছু দেখেননি ব্যুলার৷
তাঁর কথায়, ‘‘কসোভো কিংবা সার্বিয়া কোন পক্ষই পরস্পরের নিরাপত্তা বাহিনীকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না৷ ফলে দুই দেশের সীমান্ত সমস্যারও কোন রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে না৷ প্রথমেই এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে হবে, যাতে করে কসোভো বাহিনীর সেনারা দেশে ফিরতে শুরু করতে পারে৷''
জার্মান বিশেষজ্ঞদের মতে, বলকান অঞ্চলের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত মোটের ওপর ভালো৷ ফলে আশা করা যাচ্ছে যে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ওই অঞ্চলের দায়িত্ব কসোভো বাহিনী স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে পারবে৷ অবশ্য জার্মানি বরাবরই বলকান অঞ্চলে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার দাবি করে আসছে৷ গত মে মাসে কসোভো সফর করেন জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী থমাস ডে মাইৎসিয়েরে৷ এই সময় তিনি বলেন, ‘‘কসোভো কিংবা সার্বিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক না কেন আমাদের স্বার্থ এখানে একটি স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী সরকারের ব্যাপারে, যাতে করে কোন সিদ্ধান্ত হলে সেটা ভবিষ্যতে টিকে থাকে৷''
সেই পরিস্থিতি যাতে তৈরি হয়, সেটাই লক্ষ্য জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলের এবারের সফরের৷ তিনি ইতিমধ্যে জানিয়েছেন যে, সার্বিয়া এবং কসোভো পারস্পরিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলে তাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকার সম্ভাবনা বাড়বে৷ উল্লেখ্য, সার্বিয়া আশা করছে চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা ইইউ সদস্যপদের জন্য আবেদন করার অনুমতি পাবে৷ বলকান অঞ্চলের অন্য দুটি দেশ মন্টিনিগ্রো ইতিমধ্যে ইইউ সদস্যপদের জন্য আবদেন করেছে৷ আর ক্রোয়েশিয়া সদস্যপদ পেতে যাচ্ছে আগামী দুই বছরের মধ্যে৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ