1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেসবুক বিপ্লবের শুরুটা মিশরে, না বাংলাদেশে!

২০ জুন ২০১১

‘‘উই আর খালেদ সাইদ’’, মিশরের গণআন্দোলনের পেছনে বিশেষ অবদান রেখেছিল এই ফেসবুক পাতাটি৷ সেই আন্দেলনে মুবারক সরকারের পতন ঘটে৷ এরই মাধ্যমে ফেসবুকের শক্তি সম্পর্কে জানতে পারে মানুষ৷

https://p.dw.com/p/11fJT
Khaled Said
ফেসবুকে ‘‘উই আর খালেদ সাইদ’’ পাতাটিছবি: Facebook

গত বছরের জুন মাসের ঘটনা৷ মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের সিদি গাবার এলাকার এক যুবককে বেধড়ক মারধর করল দুই পুলিশ৷ কখনো দেয়ালের সঙ্গে তরুণটির মাথা ঠুকে দেওয়া, কখনো সিঁড়ির উপরে নির্যাতন৷ পাশবিক নির্যাতনের পর তাঁকে ফেলে যাওয়া হয় একটি হাসপাতালের সামনে৷

সাইদের মৃত্যু

যুবকটি হাসপাতালের সামনেই মারা যান৷ তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ পায়নি ডাক্তারা৷ তখন তাঁর বয়সই বা কত? মাত্র ২৮৷ সেই বয়সেই ঝরে গেল একটি যুবকের প্রাণ৷ যুবকটির নাম খালিদ মোহাম্মদ সাইদ৷ পুলিশ জনসমক্ষে তাঁর উপর নির্যাতন চালিয়েছিল৷ অনেক মানুষ সেই বর্বরতায় কেঁপে ওঠে সেদিন৷

মিশরে সরকার পতন

সাইদের মৃত্যু বৃথা যায়নি৷ বরং তাঁর মরণের মধ্য দিয়ে রচিত হয়েছিল মিশরের শাসকগোষ্ঠীর পতন৷ মিশরীয়রা জরুরি আইনের অন্তরালে নিজেদের অধিকার আর হারাতে চায়নি৷ ফলাফল মুবারকের বহু বছরের শাসনের পতন৷

Ägypten Khaled Said FLASH-GALERIE
সাইদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে রচিত হয় মিশরের শাসকগোষ্ঠীর পতনছবি: AP

ফেসবুক

খালেদ সাইদকে নির্যাতনের গল্প আর ছবি মানুষের মধ্য ছড়িয়েছিল ফেসবুকের বদৌলতে৷ এই সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটে একটি পাতা আছে, নাম ‘‘উই আর খালেদ সাইদ''৷ এই পাতার ভক্তের সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ৷ মিশর সরকারের পতনে বিশেষ ভূমিকা রাখে এই পাতা৷ ডয়চে ভেলের সেরা ব্লগ অনুসন্ধান প্রতিযোগিতার বেস্ট সোশ্যাল অ্যাক্টিভিজম ক্যাম্পেইন বিভাগে জুরি অ্যাওয়ার্ড জয় করেছে ‘‘উই আর খালেদ সাইদ''৷

সামাজিক সচেতনতায় ফেসবুক

সামাজিক সচেতনতায় ফেসবুকের এমন ব্যবহার সম্পর্কে বাংলা ব্লগার আরিফ জেবতিক বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কথা বলার জায়গাটুকু তৈরি হচ্ছে৷ এবছর ব্যবহারকারীদের ভোটে সেরা বাংলা ব্লগ নির্বাচিত হয় আরিফ জেবতিক'এর ব্লগ৷ তিনি বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে মিশরে গণআন্দোলনের কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশে ফেসবুক বিপ্লব হয়েছিল৷ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশের তরুণরা৷ এজন্য তারা বেছে নিয়েছিল ইন্টারনেট, বিশেষ করে ফেসবুক৷

Revolution
খালিদ মোহাম্মদ সাইদ’এর ছবি হাতে তাঁর মাছবি: Zahraa Said

ব্লগার ও সাংবাদিক আরিফ জেবতিক মনে করেন, সমাজ সচেতনতায় ফেসবুকের এই ব্যবহার আরো বাড়বে৷ স্বাধীন মত প্রকাশে প্রচলিত গণমাধ্যমের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ইন্টারনেট৷

জন্ম ২০০৪ সালে

যে ফেসবুক নিয়ে এত আলোচনা, সেটির জন্ম কিন্তু খুব বেশিদিন আগে নয়৷ ২০০৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন তরুণ মার্ক জাকারবার্গ তাঁর আরও তিন বন্ধুসহ ফেসবুক শুরু করেন৷ শুরুতে এটির পরিধি বেশ ছোট ছিল৷ এর ব্যবহার বলতে ছিল বন্ধুত্বের আদানপ্রদান আর অনলাইন আড্ডা৷ সেই ফেসবুকের ব্যবহারকারী বর্তমানে ৬০ কোটির বেশি৷ বর্তমানে সামাজিক আন্দোলন, গণজোয়ার কিংবা মানবাধিকার তথা গণমানুষের মুখপাত্র হয়ে উঠেছে ফেসবুক৷ মিশর, টিউনিশিয়া, লিবিয়া, সিরিয়ায় গণআন্দোলনের পেছনে শক্তি এই ফেসবুকই৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ