1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রভাব আছে, তবে তা এখনো ভয়ংকর জায়গায় পৌঁছায়নি

গৌতম হোড়
গৌতম হোড়
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে এখন ভারত একেবারে উপরের দিকে আছে। দুই যুদ্ধের প্রভাব সেখানে কতটা পড়ছে?

https://p.dw.com/p/4evyH
একজন ভারতীয় ও একজন বৃদ্ধ
বিদেশে কর্মরত ভারতীয়দের সংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখের বেশিছবি: Menahem Kahana/AFP/Getty Images

গতবছর অগাস্টে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মুরলীধরণ সংসদে একটি প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, বিদেশে কর্মরত ভারতীয়দের সংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখের বেশি। এই বিপুল সংখ্যক ভারতীয়রা ছড়িয়ে আছেন বিশ্বের দুইশটি দেশে।  তাদের কেউ পেশাদার, কেউ শ্রমিক, কেউ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ।

মুরলীধরণের দেয়া হিসাব বলছে, টোঙ্গাতে ছয়জন  এবং ভানুআটুতে ১০ জন ভারতীয় আছেন যারা সেদেশে কাজের সূত্রে গেছেন। সেন্ট ভিনসেন্ট, সেন্ট কিটস, সামোয়া, সলোমন আইল্যান্ড-সহ অনেক দেশের নাম সেখানে আছে, যা হয়ত আপনি কখনো শোনেননি। এই তালিকা অনুযায়ী ফিলিস্তিনে ২০ জন ইসরায়েলে ১২ হাজার ৪৬৭জন ভারতীয় কর্মরত ছিলেন। ইসরায়েল ও হামাসের(জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র-সহ অনেক দেশই তাদের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে চিহ্নিত করেছে) মধ্যে লড়াই শুরু হওয়ার পর  গাজার ভারতীয়দের দেশে ফেরানো হয়েছে।  ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই বিশেষ বিমানে করে নিয়ে আসা হয়।

তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে প্রচুর ভারতীয় আছেন। আমিরাতে আছেন ৩৫ লাখ ৫৪ হাজার। সৌদি আরবে ২২ লাখ ১৯ হাজার।, কুয়েতে আট লাখ ২৯ হাজার, কাতারে আট লাখ, ওমানে পাঁচ লাখ ৩০ হাজার। এছাড়া যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুরে প্রচুর ভারতীয় আছেন। সিঙ্গাপুরের মতো ছোট দেশে সাড়ে তিন লাখ ভারতীয় কাজের জন্য থাকেন।

এই ভারতীয়রা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশ থেকে ভারতে পাঠান। ২০২৩ সালের ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, ১২ হাজার পাঁচশ কোটি ডলার তারা ভারতে পাঠিয়েছেন। যা কিনা দেশের জিডিপি-র প্রায় তিন দশমিক চার শতাংশ। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিদেশে কর্মরত ভারতীয়রা দেশে ১৩ হাজার পাঁচশ কোটি ডলার পাঠাবেন। বিশ্বব্যাংক যখন এই রিপোর্ট দিচ্ছে, তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘদিন হয়ে গেছে এবং ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধও মায় দুয়েক হয়ে গেছে। তারপরেও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক পূর্বাভাস দিচ্ছে, বিদেশে কর্মরত ভারতীয়দের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়বে।

ভারতের কাছে বিপদটা তখনই হবে, যখন ইসরায়েল ও হামাসের লড়াইয়ের ফলে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশজুলি যদি খুব বেশি করে প্রভাবিত হয় বা সেখানকার অবস্থা খারাপ হয়। ইরানে কর্মরত ভারতীয়র পরিমাণ হলো চার হাজার। সেই তুলনায় আমিরাত, সৌদি আরবের মতো দেশগুলিতে লাখ লাখ ভারতীয় থাকেন। করোনার সময় লাখ লাখ ভারতীয় সেখান থেকে দেশে ফিরে এসেছিলেন। ২০২০ সালে আইএমএফ জানিয়েছিল, করোনার কারণে ভারতে রেমিট্যান্স দশ হাজার কোটি ডলার কমবে।

কিন্তু দুই যুদ্ধের প্রভাব এখনো পর্যন্ত রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সেরকম প্রভাব ফেলছে না।  ইসরায়েলে ভারত থেকে যায় মূলত হীরে ও পরিশেোধিত তেল। ইসরায়েলের থেকে আমদানির থেকে সেদেশে রপ্তানির পরিমাণ বেশি। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে সেই লেনদেনের ক্ষেত্রে একটা প্রভাব পড়বে। দেশের অর্থনীতিতে তার একটা প্রভাব পড়তে পারে্। কিন্তু রেমিট্যান্সে তখনই আঘাত লাগবে, যখন আমিরাত, সৌদি আরবের মতো দেশ থেকে ভারতীয়রা দেশে ফিরে আসবেন। এখনো সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, সিঙ্গাপুরের আর্থিক পরিস্থিতি ভালো হয়েছে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা আগের থেকে ভালো। ফলে সেখানে আরো ভারতীয়র কর্মসূত্রে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। ফলে ভারতীয়দের রেমিট্যান্সে খুব বেশিমাত্রায় টান পড়ার সম্ভাবনা এখনই নেই, তবে ভবিষ্যতে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে, তার উপরেই নির্ভর করছে, ভারতের কাছে এই পরিস্থিতি কতটা চিন্তাজনক হবে।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান